Advertisement
E-Paper

রাস্তার দুর্দশায় হোয়াটসঅ্যাপ দাওয়াই ব্যর্থ!

পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দাবি, অভিযোগের ভিত্তিতে ঠিকঠাক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে!

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ ও চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৩০
বেহাল বজবজ ট্রাঙ্ক রোড। ছবি: অরুণ লোধ

বেহাল বজবজ ট্রাঙ্ক রোড। ছবি: অরুণ লোধ

বর্ষা এলে রাস্তা ভাঙবে, জানা কথা। এ বারেও ভেঙেছে। কিন্তু রাস্তা সারানোর পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত হয়নি। ফলে চলতি বর্ষাতেও রাস্তা বেহাল। দুর্ঘটনা বাড়ছে। বিক্ষোভও হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। দ্রুত রাস্তা সারাতে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়ে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করেছিল পূর্ত দফতর। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে বহু অভিযোগ জমা প়ড়লেও সমস্যা মিটছে না। যদিও পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দাবি, অভিযোগের ভিত্তিতে ঠিকঠাক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে!

অরূপবাবু ২০১৬-য় বিধানসভায় বলেছিলেন, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে খারাপ রাস্তার অভিযোগ জানানো যাবে সরকারের কাছে। কিন্তু সেই ব্যবস্থা যে তেমন কার্যকর হয়নি, কবুল করছেন পূর্তকর্তাদের একাংশই। তাঁদের ব্যাখ্যা, ২০১৬ সালে ওই নম্বরে সে-ভাবে নজরদারি ছিল না দফতরের। এর কথা রাজ্যবাসী কার্যত জানতেই পারেননি। মন্ত্রীর দাবি, ‘‘হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দু’বছর ধরে একই আছে। যেমন যেমন অভিযোগ আসে, তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সব অভিযোগ সত্যি হয় না।’’

পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরের নালিশ দেখে রিপোর্ট তৈরি করে পাঠানো হয় মন্ত্রী-সহ দফতরের কর্তাদের কাছে। তার পরে রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নতুন নম্বর প্রকাশ্যে আসার পরে সবে রিপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারের পর্যবেক্ষণ, রাস্তা তৈরির অল্প সময়ের মধ্যে তা খারাপ হয়ে গেলেও তার ঠিকঠাক রিপোর্ট সব সময়ে দফতরে পৌঁছচ্ছে না। তাতে দাপট বাড়ছে এক শ্রেণির অসাধু ঠিকাদারের। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি চিত্র সংগ্রহ করে তাঁদের ঠেকানোও পূর্ত দফতরের অন্যতম উদ্দেশ্য।

পথে প্রাণহানি

• দুর্ঘটনায় ২০১৭ সালে দেশে মৃত ১,৪৬,৩৭৭ জন (পশ্চিমবঙ্গে ৫,৯৫৩)। ২০১৬-র তুলনায় প্রাণহানি কমেছে ১৪.৩%।

তথ্যসূত্র: সুপ্রিম কোর্টের পথ নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির রিপোর্ট।

• শুধু রাস্তায় খানাখন্দের জন্য ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দুর্ঘটনায় সারা দেশে মৃত ১১,৩৮৬ জন। তার মধ্যে বাংলায় মৃত্যু ৭৮৩ জনের।

• ২০১৭ সালে দেশ জুড়ে গর্তের জন্য ৩,৫৯৭ জনের মৃত্যু হয়। পশ্চিমবঙ্গের তথ্য মেলেনি।

তথ্যসূত্র: সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক

ওই দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘মানুষকে আবার মনে করিয়ে দেওয়া হল, হোয়াটসঅ্যাপের সুবিধা চালু রেখেছে সরকার। এমনটা নয় যে, জেলা থেকে আমাদের কাছে ভুল তথ্য আসছে। তবে বড় জেলার প্রতিটি রাস্তার সব দিকের খুঁটিনাটি তথ্য জানা সব সময় সম্ভবও নয়।’’ প্রশ্ন উঠছে, হোয়াটসঅ্যাপের ছবি না-এলে কি মেরামতে দেরি হতে থাকবে? সরাসরি জবাব এড়িয়ে পূর্ত দফতরের কর্তাদের কারও কারও দাবি, ভাঙা রাস্তার খবর এলে তৎপরতার সঙ্গে মেরামত করা হয়।

পূর্তকর্তারা যা-ই বলুন, বেহাল রাস্তায় চলাচল কী ভীষণ বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে, রোজই তার প্রমাণ মিলছে। সম্প্রতি বেহালায় একটি মোটরবাইক ডায়মন্ড হারবার রোডের গর্তে পড়ে যাওয়ায় আরোহী মহিলা ছিটকে পড়েন। একটি গাড়ি তাঁর পা পিষে দেয়। হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন একটি রাস্তায় গর্ত ছিল দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন সময়ে তাতে পড়ে টোটো বা রিকশা উল্টে গিয়েছে। কিন্তু বারবার অভিযোগ করেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। কিছু দিন আগে ওই রাস্তায় টোটো উল্টে এক মহিলার মৃত্যু হয়।

পথ-দুর্ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পথ-নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রাজ্য সরকার কবে সক্রিয় হয়, সেটাই দেখার।

WhatsApp Budge Budge Trunk road হোয়াটসঅ্যাপ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy