E-Paper

অভিষেকের সফরেও তৃণমূলে স্পষ্ট বলাগড়ের দ্বন্দ্ব

বিতর্কের সূত্রপাত মঙ্গলবার আরামবাগে অভিষেকের কর্মসূচি চলাকালীন। দলের একাংশের বিরুদ্ধে বিধায়ক মনোরঞ্জন তাঁর ক্ষোভ সামনে এনেছেন বেশ কিছু দিন ধরেই।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ০৮:২৬
Abhishek Banerjee

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

তাঁর ‘জনসংযোগ যাত্রা’য় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বলাগড়ে, সেই সময়েই ওই এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ হয়ে গেল। বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর অভিযোগ, দলে থেকেও যাঁরা তাঁকে হারেনোর চেষ্টা করছিলেন, তাঁরাই প্রাধান্য পাচ্ছেন দলে। তৃণমূলের ব্লক সহ-সভাপতি তপন দাসের আবার পাল্টা দাবি, বিধায়কের ‘জনভিত্তি’ নেই।

বিতর্কের সূত্রপাত মঙ্গলবার আরামবাগে অভিষেকের কর্মসূচি চলাকালীন। দলের একাংশের বিরুদ্ধে বিধায়ক মনোরঞ্জন তাঁর ক্ষোভ সামনে এনেছেন বেশ কিছু দিন ধরেই। তিনি মঙ্গলবার আরামবাগ গিয়েছিলেন অভিষেকের সঙ্গে দেখা করে তাঁর সেই ক্ষোভ জানাতে। কিন্তু দেখা হয়নি। গোটা বিষয়টি তিনি অভিষেকের আপ্ত-সহায়ককে বলে আসেন। লিখিত বক্তব্য এবং কিছু নথিপত্রও তুলে দেন অভিষেককে দেওয়ার জন্য। এর পরে বুধবারই মনোরঞ্জনের বিধানসভা কেন্দ্র বলাগড়ে ছিল ‘নব জোয়ারে’র কর্মসূচি। সেখানে মগরায় অভিষেককে পাগড়ি পরান মনোরঞ্জন। তবে বিধায়ক শিবির সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত নানা ক্ষোভের কারণে তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটিতে অনুপস্থিত ছিলেন।

মনোরঞ্জন ক্ষুব্ধ কেন? তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে দাবি, কারণ একাধিক। প্রথমত, বলাগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও তাঁকে সরানো হয়নি কেন, প্রশ্ন মনোরঞ্জনের। দ্বিতীয়ত, অঞ্চল সভাপতি ও বুথ সভাপতি বাছাইয়ের পদ্ধতি। বিধায়কের অভিযোগ, তাঁকে না জানিয়েই ওই কমিটি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি জানান, প্রয়োজনে আলাদা ভাবে এই কর্মসূচিতে লোক জড়ো করবেন। প্রয়োজনে পঞ্চায়েত ভোটও করবেন ‘একলা’!

সামগ্রিক পরিস্থিতিই অভিষেকের কাছে সরাসরি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন মনোরঞ্জন। ষদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সূত্রের দাবি, বুধবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ মগরার জিটি রোড হয়ে অভিষেক বলাগড়ে যাচ্ছিলেন। তখন রাস্তায় অপেক্ষায় ছিলেন মনোরঞ্জন। হুডখোলা গাড়িতে থাকা অভিষেককে পাগড়ি ও ফুলের স্তবক দিয়ে স্বাগত জানান। করমর্দন হয়। তার পরেই বলাগড়ের দিকে এগোয় কনভয়।

পরে মনোরঞ্জনের বক্তব্য, দলে থেকেও যাঁরা তাঁকে হারানোর চেষ্টা করেছিলেন, দলে তাঁরাই প্রাধান্য পাচ্ছেন। তাঁকে জেতানোর জন্য দলের যে কর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করেছেন, দলে তাঁরা গুরুত্বহীন। বিধায়ক বলেন, ‘‘ওই সময়ে দলের জন্য জান লড়িয়ে দেওয়া কর্মীদের পাশে আমাকে থাকতেই হবে। ওঁরা ঢুকতে না পারলে আমিও ঢুকব না।’’ বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত দলের ব্লক সহ-সভাপতি তপনের দাবি, ‘‘বিধায়কের জনভিত্তি নেই। ওঁকে আমরা সম্মানের সঙ্গে একাধিক বার ডেকেছিলাম। উনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ভবিষ্যতেও বিধায়ককে নিয়েই চলতে চাইব। কিন্তু উনি অন্য কিছু ভেবে থাকলে আমাদের কিছু করার নেই।’’

পরিবহণমন্ত্রী তথা জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী শুধু বলেন, ‘‘সবটাই দলের নজরে রয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Abhishek Banerjee TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy