Advertisement
০২ এপ্রিল ২০২৩
Abdul Mannan

শহরের চাকা থামাতে বামেদের মিছিলে দু’চাকায় সওয়ার কংগ্রেসের মান্নান

শুক্রবার এন্টালি থেকে বন্‌ধের সর্মথনে একযোগে মিছিল শুরু করেন বাম ও কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। মিছিল শুরুর পরেই রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বন্‌ধ সমর্থকেরা। অভিযোগ, একটি গাড়িও ভাঙচুর করেন তাঁরা।

শহরের রাস্তায় বাইকে বসে আব্দুল মান্নান

শহরের রাস্তায় বাইকে বসে আব্দুল মান্নান নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:১২
Share: Save:

শহরের রাস্তায় বাইকে চড়তে দেখা গেল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানকে। দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতি করা কংগ্রেসের বর্ষীয়ান এই নেতাকে এর আগে শহর কলকাতায় কখনও বাইকে চড়তে দেখা যায়নি। শুক্রবার বামদের ডাকা হরতালের সমর্থনে মিছিলে অংশ নেন মান্নান। সেই মিছিলের কিছুটা অংশ হেঁটে যাওয়ার পর বাইকে সওয়ার হন তিনি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল বাম ছাত্র-যুবরা। সেখানে অংশগ্রহণ করেছিল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনও। ছাত্র-যুবদের ওই অভিযানে লাঠি চালায় পুলিশ। আন্দোলনকারীদের উপর কাঁদানে গ্যাস, জলকামানও ব্যবহার করা হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই ঘটনার নিন্দা করে প্রতিবাদে সরব হয় বামেরা। শুক্রবার রাজ্য জুড়ে ১২ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেয় তারা। ওই হরতালকে সমর্থন জানায় কংগ্রেস। হরতাল সফল করতে শুক্রবার কলকাতায় মিছিল করেন দু’দলের নেতারা। এন্টালি থেকে কলেজ স্কোয়্যার পর্যন্ত ওই মিছিলে হাঁটেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, মনোজ ভট্টাচার্যের মতো বাম নেতারা। মান্নানের পাশাপাশি ছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। মিছিল মহাত্মা গাঁধী রোডে পড়তেই বাইকে উঠতে দেখা যায় মান্নানকে। তার পর কলেজ স্কোয়্যার পর্যন্ত পুরো মিছিলে তিনি বাইকেই ছিলেন।

এমনিতে মান্নানকে খুব বেশি বাইকে চড়তে দেখা যায় না। শুক্রবার হঠাৎ দীর্ঘ দিন পর তাঁকে বাইকে চড়তে দেখে অবাক হয়েছেন তাঁর সতীর্থ ও ঘনিষ্ঠরা। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক জনের কথায়, ‘‘মান্নানদার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। প্রায়ই হাঁটুর ব্যথায় ভোগেন তিনি। তাই সচরাচর কংগেসের এই নেতা বাইকে উঠেন না। বিশেষ করে শহর বা দূরর্বতী কোনও রাস্তায় তিনি বাইক এড়িয়ে চলেন।’’ শুক্রবারের মিছিলে বাইক চড়ার কারণ হিসেবে মান্নান বলেন, ‘‘মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে আমি দেখতে পাই, ছাত্র-যুবর কিছু ছেলে বলপূর্বক দোকান বন্ধ করতে যাচ্ছেন। তাঁদের আমি থামাতে গিয়েছিলাম। যে হেতু এখন আমার হাঁটুতে ব্যথা, দৌড়তে পারি না, তাই বাইকে করে গিয়েছিলাম।’’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বাইকে আমি মাঝে মধ্যেই চড়ি। নিজের বিধানসভা এলাকার ১-২ কিলোমিটারের মধ্যে জরুরি কোনও প্রয়োজন পড়লে দলের ছেলেদের বাইকে চড়ে যাই। কিন্তু দূরে কোথাও যাওয়ার ক্ষেত্রে বাইক এড়িয়ে চলি।’’

শুক্রবার এন্টালি থেকে বন্‌ধের সর্মথনে একযোগে মিছিল শুরু করেন বাম ও কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। মিছিল শুরুর পরেই রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বন্‌ধ সমর্থকেরা। অভিযোগ, একটি গাড়িও ভাঙচুর করেন তাঁরা। এর পর এপিসি রায় রোড ধরে মিছিল মহাত্মা গাঁধী রোডে ঢোকে। সেখানে বেশির ভাগ দোকান খোলা অবস্থায় দেখতে পেয়ে, জোর করে দোকানগুলো বন্ধ করার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। অশান্তি হলে, সুজন ও মান্নান পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠকে সেলিম দাবি করেন, ‘‘বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিছিল করেছেন।’’

Advertisement

অন্য দিকে, নবান্ন অভিযানের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথা জানান সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘আগাম অনুমতি নেওয়া মিছিলে অনৈতিক ভাবে লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। সেখানে মহিলারাও বাদ যাননি। মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে। পুরুষ পুলিশ কর্মীরা মহিলাদের উপর লাঠি চালিয়েছে। এ সব অভিযোগ নিয়ে আমরা শীঘ্রই আদালতে যাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.