Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Congress

ফুরফুরায় আব্বাসের কাছে এ বার ডালুরা

আব্বাস সিদ্দিকী— নিজস্ব চিত্র।

আব্বাস সিদ্দিকী— নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফুরফুরা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:০২
Share: Save:

দিনদুয়েক আগে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। এ বার হুগলির ফুরফুরা শরিফে এসে পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে বৈঠক করে গেলেন প্রয়াত গনিখান চৌধুরীর ভাই তথা দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) এবং তাঁর ছেলে তথা ওই দলেরই সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী।

আব্বাস এখনও তাঁর নতুন দল ঘোষণা করেননি। তাঁদের সঙ্গে জোট চেয়ে ফুরফুরায় এসে আলোচনা করে গিয়েছেন এমআইএম-প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। আরও কিছু সংখ্যালঘু সংগঠনের সঙ্গেও তাঁদের আলোচনা চলছে। এমতাবস্থায় কয়েক দিনের ব্যবধানে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আব্বাসের সাক্ষাৎকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।

গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও বামেরা যে ৭৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল, তার সিংহভাগই সংখ্যালঘু-প্রধান এলাকায়। এখন সংখ্যালঘু জনসমর্থন নানা ভাগে ভাগ হয়ে গেলে বিজেপির লাভ তো বটেই, জোট-শিবিরেরও ক্ষতি। সেই কারণেই বিজেপির উত্থানের সময়ে সংখ্যালঘু ভোটে বেশি বিভাজন আটকাতে কংগ্রেস ও বাম নেতারা সক্রিয় বলে জোট-শিবির সূত্রের ব্যাখ্যা। আব্বাসদের তাঁরা বোঝাতে চাইছেন, প্রতারক বনাম প্রতারিতের লড়াই হতে পারে কিন্তু বিষয়টাকে হিন্দু-মুসলিমে ভাগ করে দেখলে বিজেপিরই সুবিধা। এর আগে আব্বাসের কাছে ঘুরে এসেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও। গ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি পেলে আব্বাসদের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না বাম-কংগ্রেস।

আব্বাস অবশ্য এ দিনের বৈঠককে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলেই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।’’ ইশারও বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক কারণে নয়, পারিবারিক সম্পর্ক থেকে ফুরফুরা শরিফে এসেছিলাম। বাবা ফুরফুরা শরিফের পিরজাদাদের মালদহে এলে কোতুয়ালিতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’’ কোতুয়ালি ঘনিষ্ঠ মালদহ জেলা কংগ্রেস নেতা কালীসাধন রায়ের দাবি, ‘‘বরকতদা বিদ্যুৎমন্ত্রী থাকাকালীন ফুরফুরা শরিফে আলোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। ফুরফুরার সঙ্গে কোতুয়ালি পরিবারের যোগাযোগ রয়েছে। এখানে রাজনীতির কোনও বিষয় নেই।’’

ডালুবাবুদের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিকেলে ফুরফুরার তালতলা মোড়ে কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে এবং উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁতে এক দলিত মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের প্রতিবাদে সভা করেন আব্বাস। উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার হুগলি জেলা সম্পাদক লক্ষ্মীকান্ত হাঁসদা, আদিবাসী মুক্তি মঞ্চের নেতা বীরেন মাহাতো, দলিত নেতা সঞ্চয় সরকার-সহ বেশ কিছু জনজাতি ও দলিত নেতা। জোটবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের ডাক দেন আব্বাস।

ধর্ম নয়, কেন্দ্র ও রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রকৃত বঞ্চনার প্রশ্নকেই ফুরফুরা প্রাধান্য দেবে বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘সূর্যবাবুর সার্টিফিকেটের কোনও মূল্য নেই। আর মুসলমান সমাজ যদি মনে করে যে, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলো তাদের ভোটের স্বার্থে ব্যবহার করেছে কিন্তু তাদের উন্নয়ন ঘটায়নি, তাদের নাগরিকও করেনি এবং সে কথা মনে করে তারা যদি ধার্মিক দল তৈরি করে, তা হলে কে আটকাতে পারবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Abbas Siddique Furfura Sharif
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE