Advertisement
১৮ মে ২০২৪

হেস্তনেস্ত চায় কংগ্রেস, মামলা সাজাচ্ছেন বিকাশ

নবান্নে তৃণমূলের প্রথম ইনিংসে যাঁরা কংগ্রেস ছেড়ে শাসক দলের পতাকা হাতে নিয়েছিলেন, তাঁদের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছিল বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র দু’মাস আগে!

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৭ ০৪:০২
Share: Save:

নবান্নে তৃণমূলের প্রথম ইনিংসে যাঁরা কংগ্রেস ছেড়ে শাসক দলের পতাকা হাতে নিয়েছিলেন, তাঁদের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছিল বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র দু’মাস আগে! বাইরে দলবদল ঘটে গেলেও বিধানসভার মধ্যে তাঁদের কারও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত ঝুলে ছিল প্রায় আড়াই বছর! এ বার আর সেই অপেক্ষার সুযোগ দিতে চায় না প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। চলতি মাসেই বিধানসভার স্পিকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না জানালে আদালতেরই দ্বারস্থ হচ্ছে তারা।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে এখন জাতীয় স্তরে অ-বিজেপি সার্বিক ঐক্যের বাতাবরণ। কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী আলোচনায় বসতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। কিন্তু রাজ্য স্তরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও ভাটা পড়তে দিতে চান না প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর কাছেও তাঁরা এই মনোভাব জানিয়ে রেখেছেন। দলত্যাগী বিধায়কদের নিয়ে হেস্তনেস্ত করতে চেয়ে রাজ্যের কংগ্রেস শাসক দলের সঙ্গে সংঘাতের পথেই যাচ্ছে। সাম্প্রতিক কালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ৫ জন বিধায়কের বিষয়ে মামলার কাগজপত্রও তৈরি করে রাখছেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। সেই অর্থে আদালতে শাসক পক্ষের সঙ্গে লড়াই হবে বাম-কংগ্রেস ‘জোটে’রই!

বিধানসভা সূত্রের খবর, দলত্যাগী চার বিধায়ক মানস ভুঁইয়া, রবিউল আলম চৌধুরী, তুষারকান্তি ভট্টাচার্য ও হাসানুজ্জামান শেখ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা শুনানিতে দাবি করেছেন, তাঁরা কংগ্রেস ছাড়েননি। অথচ তার পরেই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনের আসরে স্পিকারের উপস্থিতিতেই ছিলেন মানসবাবুর মতো বিধায়কেরা। মানসবাবুকে ওড়িশায় সংগঠন দেখার ভারও দিয়েছেন মমতা। আর এক দলত্যাগী, ইসলামপুরের কানহাইয়া লাল অগ্রবালের শুনানি এখনও হয়নি। বাঁকুড়ার শম্পা দরিপা বিধানসভায় শাসক দলের আসনে বসতে শুরু করলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ঘোষণা হয়নি। তাই পাঁচ বিধায়ককে নিয়েই মামলার ঘুঁটি সাজাচ্ছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।

কংগ্রেস পরিষদীয় নেতৃত্বের প্রশ্ন, শুনানিতে এসে দলত্যাগীরা যে ভাবে দল না বদলানোর দাবি করছেন, তার পরে তাঁদের আর সময় দিয়ে কী লাভ? স্পিকারের কাছে তাঁরা প্রাথমিক আশ্বাস পেয়েছিলেন, ৩০ মে-র মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ‘রুলিং’ হয়ে যাবে। সেই তারিখ ধরেই এগোতে চাইছে কংগ্রেস। গ্রীষ্মাবকাশের পরে হাইকোর্ট খুলবে ৪ জুন। স্পিকারের চূড়ান্ত নির্দেশ দেখে তখনই বিকাশবাবু মামলা রুজু করবেন বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলছেন, ‘‘স্পিকারের সিদ্ধান্তের উপরে আস্থা আছে।’’ স্পিকারের যুক্তি, বিধানসভার নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই শুনানি এগোচ্ছে। এর মধ্যে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসের জন্য শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৬ মে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congress MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE