ব্রিগেড ময়দানে ‘পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ’ হয়েছে। দলছুট এক বিধায়ক লক্ষ কণ্ঠে কোরান পাঠের ডাক দিয়েছেন। গ্রন্থ-পাঠের এমন ‘প্রতিযোগিতার রাজনীতি’র মধ্যে এ বার ২০ ডিসেম্বর রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ‘সহস্র কণ্ঠে সংবিধান পাঠে’র ডাক দিল প্রদেশ কংগ্রেস। ঘটনাচক্রে, ওই দিনই রাজ্যে আসার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আর এর মধ্যেই ওয়াকফ সম্পত্তি নথিবদ্ধকরণে নানা সমস্যাকে সামনে রেখে রাজ্য ও কেন্দ্র, দুই সরকারকে নিশানা করে বৃহস্পতিবার কলকাতায় পথে নামলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, কেউ ওয়াকফ সম্পত্তি দখল করতে পারবে না।
সংবিধান পাঠের কথা জানিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার এ দিন বলেছেন, “দেশবাসীর সব থেকে বড় রক্ষাকবচ সংবিধান। ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতিতে সেই সংবিধানকেই অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। তাই আমরা এই আয়োজন করছি।” দ্রুত একশো দিনের প্রকল্প চালুর দাবিতে ও নতুন জব কার্ড বরাদ্দ বন্ধ রাখার প্রতিবাদে রাজভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও নিতে চলেছে কংগ্রেস। পক্ষান্তরে, বিজেপি নেতা তাপস রায়ের কটাক্ষ, “এটা ভাল যে, ওঁরা সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করবেন। কংগ্রেস সংবিধান ভুলেই গিয়েছে! তবে এক দিন পড়লেই সংবিধান অনুধাবন করা যায় না।”
এর মধ্যেই ওয়াকফ-প্রশ্নে মমতার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে ‘দ্বিচারিতা’র অভিযোগে শাণ দিচ্ছে বিরোধীরা। যদিও এ দিন কৃষ্ণনগরের সভা থেকে মমতা বলেছেন, “ওয়াকফ সম্পত্তি তার নিজস্ব আইন অনুযায়ী চলবে। কেউ সম্পত্তি দখল করতে পারবে না। যেমন আদিবাসীদের সম্পত্তি কেউ দখল করতে পারবে না। সরকারের আইনে আছে।”
তবে ওয়াকফ-প্রশ্নে বিরোধীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যুব কংগ্রেসের শাহিনা জাভেদরা ‘রাজভবন চলো’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন। মিছিল, জমায়েত এবং পরে লোকভবনে (রাজভবনের বর্তমান নাম) গিয়ে ওয়াকফ সম্পত্তি নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী-সহ অন্যেরা। মিছিলে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিলেন আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর), সুমন পাল, সৌম্য আইচ রায়েরা। অধীর ফের বলেছেন, “উমীদ পোর্টালে ওয়াকফের তথ্য নিবন্ধনের জন্য রাজ্যকে ২৩ জুন বলেছিল কেন্দ্র। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বললেন, কিছু করতে হবে না। আচমকা ২৭ নভেম্বর জেলাশাসকদের বলা হল সময়সীমা ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজটা করতে হবে। রাজ্য সরকার মুসলিম সমাজকে বিভ্রান্ত করল। মমতা এখন সব দোষ সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়কদের উপরে চাপাচ্ছেন।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)