Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Bangla Awas Yojana

আবাস যোজনায় নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ দেগঙ্গায়, গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধি

মঙ্গলবার দেগঙ্গা থানার বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের পশ্চিম যাদবপুর গ্রামে আবাস যোজনার সমীক্ষা করতে গিয়েছিলেন সরকারি আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। সেখানেই তাঁদের গ্রামবাসীদের মুখোমুখি পড়তে হয়।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:০২
Share: Save:

দুর্নীতির অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরেই আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে বিস্তর চাপানউতোরও চলেছে। শেষে, লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল নেতৃত্ব ঘোষণা করেছিলেন, ডিসেম্বরে আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা রাজ্য সরকারই দেবে। সেই মতো প্রকল্পের সমীক্ষাও শুরু হয়েছে সম্প্রতি। এবং শুরুতেই নতুন করে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে গ্রামীণ উপভোক্তাদের মধ্যে থেকেই। এমনই অভিযোগে মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সরকারি আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা।

নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য মঙ্গলবার জানান, বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে মানবিক ভাবে ভাবতে হবে। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় আবাস যোজনার নিয়ম মেনে, ‘একটা স্কুটার থাকলে ঘর তৈরির অনুদান পাবে না’, এই সব যেন না হয়।

মঙ্গলবার দেগঙ্গা থানার বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের পশ্চিম যাদবপুর গ্রামে আবাস যোজনার সমীক্ষা করতে গিয়েছিলেন সরকারি আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রকৃত দাবিদারেরা বঞ্চিত হচ্ছেন। পাকা বাড়িতে গিয়ে সরকারি আধিকারিকেরা সমীক্ষা করছেন। অভিযোগ মানেননি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী, আইএসএফ নেতা আমিনুল মোর্তাজা। ব্লক অফিসের এক আধিকারিক বলেন, “পুরনো তালিকা অনুযায়ী সমীক্ষা হচ্ছে। চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

এই দিনই যোগ্যদের বাদ দিয়ে সচ্ছলদের নাম আবাস প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকায় রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে পুরুলিয়া জেলার মানবাজার ১ ব্লকে বিক্ষোভ দেখান মহিলারা। একই অভিযোগে সোমবার পুরুলিয়া ১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত সোনাইজুড়ি পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। আবার পঞ্চায়েতকে অন্ধকারে রেখে সরকারি কর্মীরা সমীক্ষা করছেন অভিযোগ তুলে কয়েক দিন আগে বাঘমুণ্ডি ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত অযোধ্যা পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান দলেরই কর্মীরা। সোমবার জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের করলাভ্যালি চা বাগানের শ্রমিক মহল্লার ‘বঞ্চিত’ লোকজনেরা বিডিও-র দ্বারস্থ হয়ে দ্রুত সমাধানের দাবি করেন। সম্প্রতি বীরভূমের ইলামবাজারের মঙ্গলডিহি পঞ্চায়েতের সামনে আবাস যোজনার সমীক্ষা চালাতে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ব্লকের আধিকারিকেরা।

এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের দাবি— মানবিকতার প্রসঙ্গ তুলে, নিত্য আইন প্রণয়ন করে কার্যত দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দেওয়ার ধারা অব্যাহত রেখে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আসানসোলে মঙ্গলবার একটি কালীপুজোর উদ্বোধনে এসে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “আবাস যোজনাটি শুধুমাত্র রাজনীতি। তৃণমূল অনেক দিন খেতে পায়নি। তাই এই যোজনা বিক্রি করতে পথে নেমেছে!” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এ দিন কলকাতায় বলেছেন, ‘‘গ্রাম ও শহর, সব রকমের আবাস প্রকল্পেই দুর্নীতি হচ্ছে। যাঁদের পাওয়ার কথা, সেই মানুষ ঘর পাচ্ছেন না।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের
মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায়ের বক্তব্য, দুর্নীতির ভূত বোতল থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যতই চেষ্টা করুন, ওই ভূত আর বোতলে ঢোকাতে পারবেন না!’’

তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘আবাস আর একশো দিনের কাজে রাজ্যবাসীর ন্যায্য পাওনা আটকে বিজেপি যে পাপ করেছে, তা ঢাকতে নাটক করছে! রাজ্য একশো দিনের কাজের টাকা দিয়েছে। আবাসের টাকাও দেবে। তা বুঝে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bangla Awas Yojana Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE