E-Paper

ফেডারেশনের সভায় আহ্বায়কের জন্মদিন পালন ঘিরে বিতর্ক

সংগঠনের একাধিক নেতার কথায়, খাদ্যভবনের অফিস সাজানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের নীল-সাদা রঙের বেলুনে। ঝোলানো হয়েছিল নীল-সাদা ফিতে। ঘরের ভিতরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ বিশাল ব্যানার।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৬:৫০
রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।

রাজ্য কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলপন্থী রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনের কিছু নেতা সংগঠনকে তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি এবং প্রচারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছেন বলে অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। সম্প্রতি আবার তা সামনে এসেছে সাংগঠনিক বৈঠকে ঘটা করে সংগঠনের আহ্বায়কের জন্মদিন পালন ঘিরে।

এই ঘটনায় ‘রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন’-এর জেলাস্তরের বহু কর্মী এবং অনেক প্রবীণ নেতাই ক্ষুব্ধ। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কানেও বিষয়টি পৌঁছে দিয়েছেন তাঁরা। সংগঠনের জেলাস্তরের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, স্টিয়ারিং কমিটির তরফে মেসেজ করে বলা হয়েছিল, ৯ ফেব্রুয়ারি খাদ্যভবনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সকাল ১০টায় সাংগঠনিক বৈঠকে উপস্থিত থাকতে। সেই মতো জেলা কমিটি ও রাজ্য শাখা সংগঠনের নেতারা উপস্থিত হন। কিন্তু অভিযোগ, সেখানে বৈঠকের বদলে আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েকের জন্মদিন পালনের বিপুল আয়োজন দেখে তাঁরা বিস্মিত হন।

সংগঠনের একাধিক নেতার কথায়, খাদ্যভবনের অফিস সাজানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের নীল-সাদা রঙের বেলুনে। ঝোলানো হয়েছিল নীল-সাদা ফিতে। ঘরের ভিতরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ বিশাল ব্যানার। তাতে সাংগঠনিক সভা বলে লেখা। কিন্তু কার্যত নমো-নমো করে সভা সেরে শুরু হয়েছিল জন্মদিনের মোচ্ছব, খাওয়াদাওয়া। অন্তত ২০-২২টি কেক সাজানো ছিল টেবিলে। গলায় একাধিক মালা পরে একে-একে সেই কেক কেটেছেন পদমর্যাদায় নবান্নের আপার ডিভিশন ক্লার্ক তথা ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক। পরে সমাজমাধ্যমে সেই ছবি পোস্ট করে সকলকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি।

ফেডারেশনের একাধিক নেতার কথায়, “স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তৈরি হওয়া নতুন সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন’-এ কোন কোন কর্মীকে যুক্ত করা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে ভেবেছিলাম। তার বদলে হল জন্মদিনের পার্টি! এত টাকা আসে কোথা থেকে!” যদিও প্রতাপের দাবি, “নেতা-কর্মীরাই ভালবেসে জন্মদিনের কেক এনেছেন। ওঁদের তো ফিরিয়ে দিতে পারি না।” সে দিনের বৈঠকের শেষের দিকে এসেছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তাঁর বক্তব্য, “বৈঠকে আমিই সবাইকে ডেকেছিলাম। আলোচনা যা হওয়ার হয়েছে। তার পরে জন্মদিন হতেই পারে। প্রতাপকে ছেলের মতো ভালবাসি। তাঁর জন্য ১০-২০টা কেক এসেছে তো কী হয়েছে? কারা এটা নিয়ে রাজনীতি করছে আমি জানি।”

তৃণমূলপন্থী রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, “আমাদের সময় হলে এটা কখনও করা যেত না। কর্মচারীদের স্বার্থ এখন গৌণ, চার বছর চাকরি করে সংগঠনের বড় পদ পেয়ে যাচ্ছে। তাই দলের এই অবস্থা।” তাঁর আরও মন্তব্য, “মদন মিত্র কিছু দিন আগে বলেছিলেন টাকা দিয়ে পদ পাওয়ার কথা। যদিও পরে তাঁকে দুঃখ প্রকাশ করতে হয়েছে। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে সেটাই চলছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Birthday Celebration

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy