আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই রাজ্যের ভোটার তালিকায় নানা গরমিলের অভিযোগ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর অনিয়ম ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপও করছে। এরই মধ্যে এ বার ভোটার তালিকার বেনিয়ম নিয়ে ফের সরব হল বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বিধাননগর এবং বেলেঘাটা বিধানসভার ভোটার তালিকায় দু’টি ‘গরমিলের উদাহরণ’ দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন। পাল্টা সুকান্তের স্ত্রীর দু’জায়গায় ভোটার তালিকায় নাম থাকার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরব হয়েছে তৃণমূল।
সুকান্ত শনিবার অভিযোগ করেছেন, সৌরভ সর্দার নামে তৃণমূলের এক যুব নেতা এবং রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুর ‘ঘনিষ্ঠ’ বিপ্লব পালিতের দু’জায়গায় ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। সুকান্ত জানিয়েছেন, সৌরভের নাম ভোটার তালিকায় বিধাননগরে প্রান্তিক সমাজ সদনের ২৬৯ এবং ২৭০ নম্বর বুথের যথাক্রমে ৪১৯ এবং ৭৮১ নম্বরে রয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, বিপ্লব নামে ওই ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকায় বেলেঘাটার মোহিনী বিদ্যালয়ে ৩০৬ নম্বর বুথ এবং বিধাননগরের প্রান্তিক সমাজ সদনের ২৬৯ নম্বর বুথের যথাক্রমে ৩৮ এবং ২১৬ নম্বরে রয়েছে। এই দাবির পরেই শাসক দলকে নিশানা করেছেন সুকান্ত। তাঁর বক্তব্য, “নির্বাচন এলে এঁরা তৃণমূলকে দু’বার করে ভোট দেবেন।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতির আরও অভিযোগ, “তৃণমূল যেমন আনসারুল্লা বাংলার সদস্যকে ফরাক্কা এবং মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দু’টি ভোটার কার্ড দিয়ে রেখেছিল তেমনই বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ও রোহিঙ্গাদের তৃণমূল ভোটার কার্ড দিয়েছে।” এই সূত্রেই সুকান্তের স্ত্রীর দু’জায়গায় ভোটার তালিকায় নাম থাকার অভিযোগটি উস্কে দিয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “যাঁর স্ত্রীর দু’জয়গায় নাম আছে, তিনি অন্যের দিকে আঙুল তোলেন কী করে? নজর ঘোরাতে প্রলাপ বকছেন।”
প্রসঙ্গত, সুকান্তের স্ত্রীর দু’জায়গার ভোটার তালিকায় নাম থাকার বিষয়ে দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনে এক জন অভিযোগ জানিয়েছিলেন। দিল্লি থেকে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজ আগরওয়ালকে বিষয়টি জানানো হলে, তিনি সংশ্লিষ্ট জেলাশাসককে এই নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের দাবি। সুকান্তের অবশ্য বক্তব্য, “আমি বা আমার স্ত্রী ভোটার তালিকার কাজ করি না। সেটা করে রাজ্য।” তাঁর সংযোজন, “আমার স্ত্রীর বাবার বাড়ি জলপাইগুড়িতে। ২০২০ থেকে ২০২১-এর মধ্যে তিনি জলপাইগুড়ি থেকে বালুরঘাটে নাম স্থানান্তর করিয়েছেন। নথিও আছে। পরে তিনি বালুরঘাটেই ভোট দিয়েছেন। তৃণমূল প্রমাণ করুক নাম স্থানান্তরের পরে আমার স্ত্রী জলপাইগুড়িতে ভোট দিয়েছেন।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)