রাজ্য মৎস্য দফতরের আধিকারিকদের মধ্যে বদলি, পদোন্নতি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন ক্যাডারে একাধিক পদ দীর্ঘদিন ফাঁকা পড়ে। তবু কারও পদোন্নতি হচ্ছে না। মৎস্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এর ফলে দফতরের কর্মচারীরা যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনই জেলা এবং রাজ্য স্তরের আধিকারিক পদগুলি ফাঁকা থাকায় দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পের দেখভালে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। মাছের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধাক্কা খাচ্ছে।’’
মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, জেলা স্তরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ হল ডিস্ট্রিক্ট ফিশারিজ অফিসার (ডিএফও) এবং ডেপুটি ডিরেক্টর অব ফিশারিজ (ডিডিএফ)। বর্তমানে রাজ্যে ডিএফও-র ১২৮টি পদের মধ্যে ৬৫টি ফাঁকা এবং ১২টি ডিডিএফ পদে আছেন মাত্র চার জন। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এক-এক জনকে একাধিক জেলার দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলি ফাঁকা থাকায় মাছের উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পগুলির নজরদারিতে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।’’ অন্য দিকে, বদলি নিয়ে পক্ষপাত এবং অনিয়মের অভিযোগও তুলছেন দফতরের আধিকারিকদের একাংশ। মালদহে কর্মরত এক আধিকারিকের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন বাড়ি থেকে দূরে কাজ করে আসা কর্মীদের অন্যায় ভাবে আরও দূরের জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আধিকারিকেরা বছরের পর বছর ধরে একই জায়গায় পোস্টিংয়ে আছেন। কোনও নিয়মের বালাই নেই।’’এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দফতরের রীতি অনুযায়ী, নতুন নিয়োগের আগে বিভিন্ন দূরবর্তী জেলাতে কর্মরত আধিকারিকদের বাড়ির কাছাকাছি আনা হয় আর নতুন আধিকারিকদের দিয়ে সেই জায়গাগুলি ভর্তি করা হয়। এ বারে সেই নিয়মেও গরমিল। বিভিন্ন দূরবর্তী জেলায় প্রায় ১০০ জন আধিকারিক তিন বছরের বেশি সময় কাজ করছেন। অথচ তাঁদের বদলির বিষয়টি না ভেবে নতুনদের বাড়ির কাছাকাছি পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।’’ পুরো বিষয়টি নিয়ে স্টেট ফিশারিজ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নারায়ণ বাগ বলেন, ‘‘গত বছর তিনেক ধরে আধিকারিকদের বদলি ও পদোন্নতি নিয়ে মৎস্য দফতরে একটা অস্থিরতা চলছে। সংগঠনের তরফে দফতরের মন্ত্রী, অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকে একাধিক বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। সমস্যার সমাধানে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’’ এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীকে একাধিক বার ফোন করা হয়েছিল। তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। মেসেজ বা ওয়টস্যাপ বার্তায় সাড়া মেলেনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)