Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ISF

আইএসএফ-প্রশ্নেই উত্তাপ সিপিএমের অন্দর মহলে

প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যকে তিন মাস প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২১ ০৬:৫৯
Share: Save:

বিধানসভা ভোটে বামেদের বেনজির ভরাডুবির পরে সিপিএমের প্রথম রাজ্য কমিটির বৈঠক তপ্ত হল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) সঙ্গে জোটের সিদ্ধান্তকে ঘিরে। আব্বাস সিদ্দিকীর নতুন দলের সঙ্গে জোট গড়ার কারণ, তাড়াহুড়ো এবং পদ্ধতি নিয়ে বৈঠকে সরব হলেন একাধিক নেতা। দলে নানা প্রশ্নের মুখে পড়লেও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন, হেরে গিয়েছেন বলেই আগ বাড়িয়ে কোনও জোট ভেঙে দেওয়ার ‘অসৌজন্য’ তাঁরা দেখাবেন না। জোট-শরিকদের কেউ যদি বামেদের সঙ্গত্যাগ করতে চায়, তা হলে আলাদা কথা।

তবে রাজ্য কমিটির অন্দরে এই কাটাছেঁড়ার আগে ভোটের ফলপ্রকাশ হওয়া মাত্রই যে নেতারা প্রকাশ্যে তোপ দেগেছেন, তাঁদের সতর্ক করেছে দল। প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যকে তিন মাস প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে। বর্ধমানের নেতারা সামাজিক মাধ্যমে মুখ খোলার জন্য জোলাতেই দলের কাছে মার্জনা চেয়ে নিয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর, প্রবীণ নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যের জেরে তাঁর সঙ্গে সূর্যবাবুর দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছে শনিবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে।

সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, নবগঠিত আইএসএফের মতো দলের সঙ্গে তড়িঘড়ি জোট কেন, তা মানুষের কাছে বোঝানোই যায়নি। বরং, প্রতিক্রিয়া হয়েছে উল্টো। অন্য একাংশের আরও মত, আইএসএফের হাত ধরার আগে রাজ্য কমিটিতে আলোচনা হয়নি। ফলে, ভোটের আগে জেলার নেতারা জানতেই পারেননি, এই বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য কী হবে! তাঁদের শুধু আসন ছাড়ার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। ভোটের আগে ওই সময়ে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে আলোচনা করেই আইএসএফ-কে আসন ছাড়তে উদ্যোগী হয়েছিল আলিমুদ্দিন। জবাবি ভাষণে সূর্যবাবু অবশ্য বলেছেন, রাজ্য কমিটিই ওই পরিস্থিতিতে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার অর্পণ করেছিল।

বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী প্রথম রাজ্য কমিটির অনলাইন বৈঠক চলেছে রাত পর্যন্ত। দলীয় সূত্রে যা খবর, জেলা থেকে বেশ কিছু আত্মসমালোচনার সুর উঠে এসেছে বৈঠকে। যেমন, রাজ্য কমিটির সদস্যদের কেউ কেউ বলেছেন, তৃণমূল সরকারের যে সব পদক্ষেপকে ‘অনুদানমূলক’ বলে আক্রমণের পথে গিয়েছিল বামেরা, দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষ ফায়দার আশায় সেই সব প্রকল্পের পক্ষেই মত দিয়েছেন। মানুষের জীবনের সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য এই ধরনের চটজলদি সুবিধার প্রকল্পই যে শেষ কথা নয়, তা বোঝাতে সমালোচনার ধারা পাল্টানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন দলের এই অংশ।

বিধানসভায় এ বার বাম ও কংগ্রেস যখন শূন্য হয়ে গিয়েছে, সংযুক্ত মোর্চার শরিক হয়ে একমাত্র আসনটি আইএসএফ-ই জিতেছে। তারা জোট ধরে রাখারই পক্ষপাতী। দলের ভিতরে-বাইরে সমালোচনা থাকলেও সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বও আগ বাড়িয়ে জোটে ইতি টানতে নারাজ। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আমরা ৩% না ৫% ভোট পেয়েছি, সেটা মাথায় রাখলে চলবে না। সোজা কথায়, মানুষের সমর্থন পাইনি! আবার মানুষের কাছে গিয়েই বুঝতে হবে, আমাদের কাছে তাঁরা কী চান।’’ রাজ্য কমিটির পরবর্তী বৈঠক ডাকা হয়েছে আগামী ১৯-২০ জুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM indian politics ISF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE