E-Paper

আইআইটি-সমাবর্তনে পোশাক নিয়ে বিতর্ক

পোশাক-বিধির এই খুঁটিনাটি নিয়ে শোরগোল পড়েছে। সদ্য উত্তীর্ণ থেকে প্রাক্তন পড়ুয়াদের মতে, এ ভাবে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে নির্দেশিকা দিয়ে পোশাক ও সাজগোজ চাপিয়ে ঠিক নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৪
kharagpur iit

খড়্গপুর আইআইটি। —ফাইল চিত্র।

আগামী ডিসেম্বরে খড়্গপুর আইআইটি-র সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সেখানে পড়ুয়াদের কী পোশাক পরতে হবে, সেই নির্দেশিকা ঘিরেই বাধল বিতর্ক।

প্রতিষ্ঠানের ৬৯তম সমাবর্তন এ বার। সেখানে কী পোশাক পরা হবে, তার খুঁটিনাটি জানিয়ে আইআইটি কর্তৃপক্ষ ই-মেল করেছেন সদ্য প্রাক্তন পড়ুয়াদের। সেখানে পুরুষ ও নারীর পোশাকের উল্লেখ থাকলেও নির্দেশিকায় তৃতীয় লিঙ্গের কোনও উল্লেখ নেই। প্রশ্ন উঠেছে, আইআইটি-র মতো আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে এই ‘উল্লেখ না থাকা’র পিছনে কারণ কী?

নির্দেশিকায় বিশেষ করে ভারতীয় সনাতনী সাজের কথা বলা হয়েছে। ছেলেদের পাঞ্জাবি-পাজামা ও মেয়েদের শাড়ির পরার পাশাপাশি পোশাকের রং, সেলাই, কলার— সব নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশে মেয়েদের সোনালি পাড়ের সাদা শাড়ি ও সাদা ব্লাউজ পরতে বলা হয়েছে। তবে হাতকাটা ব্লাউজ নিষিদ্ধ করেছেন আইআইটি কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে মেয়েরা কেমন অলঙ্কার পরবেন, তা-ও বলা হয়েছে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের পায়েই কোলাপুরী চপ্পল থাকতে হবে— এমনই নির্দেশ এসেছে।

পোশাক-বিধির এই খুঁটিনাটি নিয়ে শোরগোল পড়েছে। সদ্য উত্তীর্ণ থেকে প্রাক্তন পড়ুয়াদের মতে, এ ভাবে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে নির্দেশিকা দিয়ে পোশাক ও সাজগোজ চাপিয়ে ঠিক নয়। কম্পিউটার সায়েন্সের সদ্য উত্তীর্ণ এক পড়ুয়া বলেন, ‘‘ডিগ্রি নিতে সমাবর্তনে যেতে তো হবেই। তার জন্য কোলাপুরী জুতো কিনতে হবে। সবার তো সমান সামর্থ্য নেই। একদিনের জন্য একটা জুতো কিনতে হবে।’’ হিউম্যানিটিজ়ের এক ছাত্রীর মতে, ‘‘শুধু পুরুষ-মহিলায় এখন দুনিয়া ভাগ করা ঠিক নয়। তৃতীয় লিঙ্গ, রূপান্তরকামীর সংখ্যাও তো প্রচুর। আর সবাই সব পোশাকে স্বচ্ছন্দ্য না-ও হতে পারেন।’’

গত বছর সমাবর্তনের মঞ্চ থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন অর্থনীতির স্নাতকোত্তর যশী রাপেটি (রূপান্তরিত হওয়ার পরের নাম)। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তখন রূপান্তরকামী ছিলাম। তবে গত বছর সমাবর্তনে এত কিছু ধরে ধরে বলা হয়নি। আমি তো কুর্তি আর লেগিংস পরে গিয়েছিলাম।’’ সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তনী বেঙ্গালুরুতে কর্মরত মৃণাল যাদবের কথায়, ‘‘গত বছরও সবাই পাঞ্জাবি আর শাড়ি পরেছিল। কিন্তু সবার কাছে সব পোশাক তো মজুত না-ও থাকতে পারে!’’ কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অবসরপ্রাপ্ত এক অধ্যাপক জানালেন, ‘‘১৭ বছরের উপর এই প্রতিষ্ঠানে ছিলাম। অনেক ছাত্রী চুড়িদার পরে এসেছেন। কিন্তু এটা কী!’’

আইআইটির রেজিস্ট্রার অমিত জৈন ফোন ধরেননি। তবে প্রতিষ্ঠানের জনসংযোগ বিভাগের তরফে পড়ুয়াদের এমন নির্দেশিকা পাঠানোর কথা স্বীকার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিষয়টি স্বাভাবিক বলেই দাবি তাঁদের। তবে তৃতীয় লিঙ্গের উল্লেখ না থাকা নিয়ে ঢোঁক গিলেছেন জনসংযোগ বিভাগের আধিকারিকরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

IIT Kharagpur Controversy

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy