Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus In West Bengal

করোনা পরীক্ষা কম বঙ্গে, সতর্ক করল কেন্দ্র

সামনেই দীপাবলি ও ছটের মরসুম। দেশ জুড়ে ঠান্ডা পড়ছে। ফলে এই সময়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৪৮
Share: Save:

অন্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরীক্ষা কম হচ্ছে এবং মৃত্যু বাড়ছে বলে আজ রাজ্য প্রশাসনকে সতর্ক করে দিল কেন্দ্র।উৎসবের মরসুমে অর্ধেক পেরিয়ে যাওয়ার পরে দেশের সর্বাধিক আক্রান্ত রাজ্যগুলির পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে আজ বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। দশটি রাজ্যের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে কেরল ও পশ্চিমবঙ্গ। আজ পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোলের অধিকর্তা সুজিত সিংহ পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে জানান, রাজ্যের হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ছাড়াও সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও মালদহ থেকে। সংক্রমণের নতুন খবর এসেছে দার্জিলিং থেকেও। নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর ওই তথ্য

বেশ চিন্তার বলেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। কেন্দ্রের দাবি, দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ছ’টি রাজ্যের রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার গড় জাতীয় গড়ের চেয়ে কম। যা চিন্তার। ওই রাজ্যগুলিতে মৃত্যুহারও বেশি বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গে বিশেষ করে বলা হয়েছে, রাজ্যে পরীক্ষার সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমে গিয়েছে। যা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রককর্তারা। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে মৃতদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ষাট বছরের ঊর্ধ্বে। ওই মৃত্যুহার কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।

বৈঠকে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম করোনা নিয়ন্ত্রণে রাজ্য এ পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ করেছে তা তুলে ধরেন। তিনি দাবি করেন, রাজ্যে দুর্গাপুজো সত্ত্বেও নমুনা পরীক্ষার নিরিখে আক্রান্তের হার সে ভাবে বাড়েনি। পুজোর সময় ভিড় নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা প্রচারে সক্রিয় ছিল স্বাস্থ্য ভবন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষ। একই সঙ্গে রাজ্যে বাড়ি বাড়ি ঘুরে বয়স্ক ব্যক্তিদের শারীরিক অবস্থার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে কেন্দ্রকে জানান তিনি। তাঁর বক্তব্য, আশা কর্মীদের সাহায্যে ওই কাজের প্রায় ৮৫ শতাংশ শেষ করা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কর্মীদের অভাব মেটাতে রাজ্য নতুন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের কথায়, ‘‘প্রতি সপ্তাহে রাজ্যে মৃত্যুর হার ১.৪ শতাংশের মতো কমেছে। এইচডিইউ বেডের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। আমাদের এ ধরনের পদক্ষেপের কেন্দ্র প্রশংসাই করেছে।’’

সামনেই দীপাবলি ও ছটের মরসুম। দেশ জুড়ে ঠান্ডা পড়ছে। ফলে এই সময়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। তা রোখার প্রশ্নে রাজ্যগুলিকে দশ দফা নীতি মেনে চলার পরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। তিনি মূলত বাজার, কাজের জায়গা, ধর্মীয় স্থলগুলিতে বেশি করে পরীক্ষা বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, ‘‘ওই স্থানগুলি সুপার স্প্রেডার হিসেবে কাজ করে। একসঙ্গে বহু মানুষ বাজার বা ধর্মীয় স্থল থেকে সংক্রমিত হচ্ছেন।’’ আরও বেশি করে আরটি পিসিআর পরীক্ষার উপরে গুরুত্ব দিতে আজ বৈঠকে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE