Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

এক দিনে রাজ্যে মৃত্যু ৫৩ জনের, সুস্থতার হার প্রায় ৭০ শতাংশ

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭১৬ জন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ২২:০০
Share: Save:

প্রতি দিনই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। রবিবার রাজ্যে এক দিনে করোনায় মৃত্যু ছিল সর্বাধিক, ৪৯। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন প্রকাশের পর দেখা গেল, এক দিনে মৃত্যুর সব হিসেব ছাপিয়ে গিয়েছে। এত দিন করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাটা যেখানে চল্লিশের ঘরে ঘোরাফেরা করছিল, এ দিন তা একধাক্কায় ৫৩-য় পৌঁছেছে। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭৩১ জনের।

তবে গত কাল রাজ্যে এক দিনে নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক (২ হাজার ৭৩৯) থাকলেও, এ দিন তা সামান্য কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭১৬ জন। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৭৫ হাজার ৫১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। রাজ্য সরকারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ২২ হাজার ১২২ জনের কোভিড টেস্ট করা হয়েছে, যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। তবে গত দু’দিন রাজ্যে সংক্রমণের হার যেখানে ১২.৯০ এবং ১৩ শতাংশ ছিল, গত ২৪ ঘণ্টায় তা কমে ১২.২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সবমিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫৩৭ জনের কোভিড পরীক্ষা করা হয়েছে।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আরও পড়ুন: রাজ্যে ফের বদলাল লকডাউনের সূচি​

তবে প্রতিদিন যে ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যে ভাবে বেডে় চলেছে মৃত্যুসংখ্যা, সেই তুলনায় রাজ্যে সুস্থতার হার স্বস্তিদায়ক। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে ৭৫ হাজার ৫১৬, তার মধ্যে ৫৪ হাজার ৮১৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার ৭০.০৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৮৮ জন।

তবে কলকাতায় মৃতের সংখ্যা যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় যত জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ২১ জনই কলকাতার বাসিন্দা। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা থেকে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫৬ জন। এখনও পর্যন্ত শহর কলকাতার ২৩ হাজার ৮১৮ জন বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে থেকে ১৬ হাজার ১৯৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছন ৫৩১ জন।

কলকাতা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনাতেও গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫১০ জন। ৪৮৬ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়াতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জন করে প্রাণ হারিয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৩৯ জন। ১৭৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন হাওড়ায়। হুগলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১ জন। ৮৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরেও গত ২৪ ঘণ্টায় এক জন করে প্রাণ হারিয়েছেন। দার্জিলিঙে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫১ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। ৭৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন কোচবিহারে। উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, জলপাইগুড়িতে যথাক্রমে ৫৮, ৯০, ৫৭, এবং ৫৭ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন।

পূর্ব মেদিনীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ জন। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫০ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে এই সংখ্যাটা যথাক্রমে ৭১ ও ৮০। নদিয়াতেও এ দিন ৬৬ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন। বীরভূমে ৪৯ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আপত্তি রাজ্যের, খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন​

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE