Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

টানা এক সপ্তাহ পর কমল সুস্থতা, রাজ্যে ফের ৩ হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ

সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:৩০
Share: Save:

গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন যত জন মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছিলেন, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। রাজ্যের এই সামগ্রিক চিত্রতে আশার আলো দেখছিলেন বিশেষজ্ঞেরাও। কিন্তু সোমবার ফের সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হয়ে দাঁড়াল। একই সঙ্গে দৈনিক মৃতের সংখ্যাও ফের ৬০ ছুঁইছুঁই।

একটানা বেশ কিছু দিন ২ হাজারের কোটায় ঘোরাফেরার পর গত দু’দিন ধরে রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজারের ঘরে পৌঁছেছে। এ দিনও একই ছবি। স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৩ হাজার ৭৭ জন নতুন করে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল এই সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজার ৮৭।

সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২৩ হাজার ২১৭, গতকালের চেয়ে যা ২ কম।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আরও পড়ুন: বাইপাস কাণ্ডে সেই গাড়ি আটক, হদিশ মেলেনি অভিযুক্তের​

পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশি সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষায় শুরু থেকেই জোর দিয়ে আসছিল রাজ্য প্রশাসন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার রাজ্যে কোভিড টেস্টের সংখ্যা বেড়েছিল। রবিবার সর্বোচ্চ—৪৬ হাজার ৫০৫টি করোনা পরীক্ষা হয়। তার চেয়ে কম সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা হয় এ দিন, ৪২ হাজার ২১৬টি। তার পরেও ৩ হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে।

প্রতি দিন যত জনের কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত কয়েক দিন ধরে আক্রান্তের চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছিলেন বলে সংক্রমণের হারও ৬ শতাশের ঘরে ঘোরাফেরা করছিল। এ দিন তা বেড়ে ৭.২৯ শতাংশ হয়েছে।

একই সঙ্গে মাঝে এক দিন বিরতির পর ফের রাজ্যে দৈনিক মৃত্যুসংখ্যা ষাট ছুঁইছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৩ হাজার ৬২০ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।

টানা এক সপ্তাহ দৈনিক আক্রান্তের চেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা বেশি থাকলেও, এ দিন উল্টো ছবি ধরা পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ২১ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ২৯ জন করোনা রোগী। এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার ৮৫.৪০ শতাংশ।

দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে জেলাগুলির মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৫৭৬ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৭৭ জন রোগী। করোনার প্রকোপে প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন। এর পরেই তালিকায় রয়েছে কলকাতা। গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে ৪৫৮ জন নোভেল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৪৮ জন। প্রাণ হারিয়েছেন ১৬ জন রোগী।

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২০৩ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৯৪ জন করোনা রোগী এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১১০ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০৮ জন রোগী। প্রাণ হারিয়েছেন ৮ জন। হুগলিতে এ দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ফের ২০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২৭১ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫৮ জন করোনা রোগী। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।

এ ছাড়াও এ দিন যে জেলাগুলোতে শতাধিক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন— পশ্চিম মেদিনীপুর (২০৪), পূর্ব মেদিনীপুর (২১৯), পশ্চিম বর্ধমান (১৫৮), বাঁকুড়া (১০৭), নদিয়া (১৪৬) এবং দার্জিলিং (১১০)। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। ২ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে নদিয়া এবং আলিপুরদুয়ারে। ১ জন করে করোনা রোগী মারা গিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরে।

আরও পড়ুন: সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ১৫ কোটি! আদৌ কি টাকা জমা পড়েছিল? পরিচালকের মন্তব্যে বাড়ছে ধন্দ​

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হলসেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দুদিনের সংখ্যা এবং তার পরের দুদিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবেদৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দুদিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE