গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রোজই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে রাজ্যে। শুক্রবারও সেই ছবির কোনও ব্যতিক্রম হল না। তবে বৃহস্পতিবারের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কম এ দিন। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ১৯২ জন। যেখানে বৃহস্পতিবার এই সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজার ১৯৭। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এই মুহূর্তে ২ লক্ষ ১৮ হাজার ৭৭২।
তবে, আক্রান্তের পাশাপাশি সুস্থতার হারও বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লক্ষ ৯০ হাজার ২১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৯৬০ জন। বৃহস্পতিবার সুস্থতার ছিল ৮৬.৭৭ শতাংশ। এ দিন তা বেড়ে হয়েছে ৮৬.৮৬ শতাংশ। সব মিলিয়ে সুস্থতার হার বেশ আশাপ্রদ।
গত দু’দিন ধরে মৃত্যুর সংখ্যাটা যাটের ঘরেই ঘোরাফেরা করছিল। শুক্রবারও খুব একটা হেরফের হয়নি। বুধ ও বৃহস্পতিবার মৃত্যুর সংখ্যাটা ছিল যথাক্রমে ৬০ ও ৬১। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ২৪২। মৃতের সংখ্যার দিক থেকে রাজ্যে প্রথম স্থানেই রয়েছে কলকাতা, তার পর উত্তর ২৪ পরগনা।
প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৪৫ হাজার ২২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ২৬ লক্ষ ৫৪ হাজার ৭০ জনের।
গত কয়েক দিন ধরে করোনার সংক্রমণের হারও ৭ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। শুক্রবারও সেই ছবির খুব একটা হেরফের হয়নি। বুধ ও বৃহস্পতিবারে সংক্রমণের হার ছিল যথাক্রমে ৭.০৮ এবং ৭.০২ শতাংশ। এ দিন সেই হার গত দু’দিনের মাঝামাঝি পর্যায়েই রয়েছে।
মোট সংক্রমণ এবং মৃত্যু— দু’টি ক্ষেত্রেই প্রথম থেকেই ঊর্ধ্বমুখী কলকাতার গ্রাফ। তবে দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে কলকাতাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। শুক্রবার কলকাতায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯৩ জন। উত্তর ২৪ পরগনায় ৫০২ জন আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ ঘণ্টায়। রাজ্যে ৫৯ জন মৃতের মধ্যে ১৪ জন কলকাতার বাসিন্দা, ১০ জন হাওড়ার, উত্তর ২৪ পরগনার ৭ জন। কলকাতায় মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৫৫১, উত্তর ২৪ পরগনায় ৯৫০ এবং হাওড়ায় ৪৮৯।
অন্য দিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২২২। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। পশ্চিম মেদিনীপুরে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২৩০। পশ্চিম বর্ধমানে ১৩১, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৪৫, পূর্ব বর্ধমানে ৬৫ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুরে ৫৩, দার্জিলিঙে ১১৮, কোচবিহারে ৮২, জলপাইগুড়িতে ৯৪ এবং উত্তর দিনাজপুরে ৪৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy