ফাইল চিত্র।
কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ১৮ লক্ষ প্রতিষেধক কেনার জন্য প্রাথমিক ভাবে ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত মিলেছে ১১ লক্ষ টিকা। তবে প্রথম ধাপে ওই দুটি ধরনের টিকা মিলিয়ে রাজ্য মোট ৩ কোটি প্রতিষেধক কিনতে চায়।
সূত্রের খবর, রাজ্য যত প্রতিষেধক কেনার জন্য টাকা দিয়েছে, তার মধ্যে ১১ লক্ষ মিলেছে। বাকি রয়েছে আরও ৭ লক্ষ টিকা। ওই টিকা তো জুুনে আসছেই, তা ছাড়া আরও ৫ লক্ষ টিকা আসতে পারে বলে আশা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। তখন সেই টিকার জন্যও টাকা দিতে হবে সরকারকে।
রাজ্যে প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য সাধারণ প্রাপক ও বিভিন্ন পেশায় যুক্ত লোকজনকে আলাদা ভাগে ভাগ করেছে সরকার। রাজ্য সরকারি, আধা সরকারি কর্মী, সরকার অধিগৃহীত সংস্থার কর্মী, শিক্ষক, ব্যাঙ্ক, পুলিশ-সহ বিভিন্ন পেশার লোককে সুপার স্প্রেডার হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁদের টিকার অগ্রাধিকার গ্রুপে রাখা হয়েছে।
এ দিন সেই প্রতিষেধক দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত জেলা শাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ অন্যান্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে করোনা সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, অগ্রাধিকারের তালিকায় যাঁরা রয়েছেন তাঁদের তথ্য ভান্ডার তৈরি করতে হবে জেলা শাসকদের। কলকাতা পুরসভা এলাকায় সেই কাজটি করবেন পুর কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন দফতরের সচিবেরা তাঁদের অফিসার, কর্মীদের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট জেলা শাসকদের পাঠিয়ে দেবেন। অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা বাকি প্রাপকদের তথ্য ভান্ডার তৈরি করবেন জেলা শাসকেরাই। স্বাস্থ্য শিবিরের অনুমান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেই তথ্য ভান্ডার তৈরি হয়ে যাবে।
এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, রাজ্যে টিকার জোগান ঠিক মতো হয়ে গেলে আশা করা যায় মাস খানেকের মধ্যে সুপার স্প্রেডারদের প্রতিষেধকের আওতায় আনা সম্ভব হবে। ওই আধিকারিক আরও জানান, সময়ের ব্যবধান বেড়ে যাওয়ায় কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ়ে এখন সমস্যা নেই। সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ায় শহরের কোভিড ব্যবস্থাপনার জন্য তৈরি হওয়া কমিটির দায়িত্বে থাকবেন মুখ্যসচিব।
রাজ্যে সংক্রমণ মোকাবিলায় বিবিধ পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। কিন্তু বঙ্গের দৈনিক আক্রান্ত যে দ্রুত নামছে তা নয়। এ দিন রাজ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৬ জন। যা শেষ কয়েক দিনের তুলনায় একটু কম। কিন্তু শেষ দশ দিনের পরিসংখ্যান দেখলে একটা বিষয় স্পষ্ট যে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এ দিন ১৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্য সরকারের দাবি, মৃত্যু হার কমানোর জন্যও বিবিধ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রোগী সঙ্কটজনক হলে তাঁর পজ়িটিভ রিপোর্ট না থাকলেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত হাসপাতালকে।
প্রয়োজনে ওই রোগীর র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। প্রশাসনের মতোই কোভিড ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে এগিয়ে এসেছে বেসরকারি হাসপাতাল ও বিভিন্ন সংস্থাও। কয়েক দিন আগে শহরের এক হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকা সত্ত্বেও শুধু ফ্লো মিটার না থাকায় দুই রোগীকে অক্সিজেন দিতে না পারার অভিযোগ উঠেছিল। ওই দুই রোগীরই মৃত্যু হয়। সেটি জানার পরে এ দিন বেলুড়ের বাসিন্দা উৎপল দাস তাঁর কারখানায় তৈরি হওয়া ২০০টি ফ্লো মিটার রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। প্রথম দফায় এ দিন ৫০টি ফ্লো মিটার হাওড়ার জেলা শাসক মুক্তা আর্য ও মন্ত্রী অরূপ রায়ের হাতে তুলে দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy