প্রতীকী ছবি।
যেন সত্যিই ঢেউ! কোনও দিন সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা কমছে, তো পরের দিনই মাথাচাড়া দিচ্ছে কোভিডের রেখচিত্র। এ হেন নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা স্ট্রেনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞেরা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই ওঠানামার মাঝেই যে কোনও দিন আছড়ে পড়তে পারে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ।
তবে বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকেরা জানান, ডেল্টা স্ট্রেন নাকি কোনও নবরূপে জীবাণু হানা দেবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন নজরদারির পদ্ধতি বেছেছে স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, দ্বিতীয় বার করোনা আক্রান্ত হওয়া এবং টিকার দু’টি ডোজ় নেওয়ার পরেও কোন এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, সে দিকে জোরদার নজরদারি চালানো হচ্ছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘তেমনটা হলেই, ওই এলাকার আক্রান্তদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সে পাঠাতে হবে। কারণ ওই দু’টি বিষয় যদি বেশি রকমের বৃদ্ধি পায়, তখন বুঝতে হবে নতুন কোনও স্ট্রেনের প্রভাবেই সেটি ঘটছে।’’
বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের অভিমত, সমাজে কোভিড বিধি না-মানার সংখ্যা যত বাড়বে, তত তাড়াতাড়ি সেই ঢেউ আছড়ে পড়বে বঙ্গে। বিশেষত মাস্ক খুলে ঘুরে বেড়ানোর মতো প্রবণতা সব থেকে বেশি বিপজ্জনক বলেই মত তাঁদের। সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলছেন, ‘‘নতুন স্ট্রেন এলে, তবেই সেটা মারাত্মক ভাবে ছড়াতে পারে। তবে নতুন স্ট্রেন এসে গিয়েছে কি না, সেটা এখনও জানা যায়নি। কারণ, জিনোম সিকোয়েন্সের রিপোর্ট আসতে ১৫ থেকে ৩০ দিন সময় লাগে। সেই সময়ের মধ্যে নতুন স্ট্রেন ছড়িয়ে যেতে পারে।’’
রাজ্যের কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘‘মাস্ক হচ্ছে পরীক্ষিত অস্ত্র। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ সেটিকে আঁকড়ে না-ধরে, ছেলেখেলা করছেন। এটা আত্মহানিকর। আর এই ব্যবহারিক প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ মানুষের হাতেই রয়েছে। তার জন্য সরকারের মুখাপেক্ষীও হতে হয় না।’’
স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, সংক্রমণের প্রথম পর্বে ভাইরাসের ‘আর-নট’ ভ্যালু (এক জনের থেকে কত জনের মধ্যে ছড়াতে পারে) ছিল ১.৮। দ্বিতীয় ঢেউতে ডেল্টা স্ট্রেনে সেই ‘আর-নট’ ভ্যালু ৪-র কিছুটা বেশি। অর্থাৎ প্রথম পর্বে ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে এক জন থেকে ২৩০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। দ্বিতীয় তরঙ্গে সেটাই কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেখা গিয়েছে, ২৫-৩০ দিনে সংক্রমিতের সংখ্যাটি হয়েছে ১০ হাজার। গত মার্চে রাজ্যে ডেল্টা স্ট্রেনের প্রকোপ ছিল দুই শতাংশ। এপ্রিলে সেটি ৫০ শতাংশ। মে থেকে এখনও পর্যন্ত সেটি দাঁড়িয়ে ৯০ শতাংশে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তৃতীয় ঢেউ আসবেই। তার জন্য প্রস্তুতিতে খামতি রাখতে নারাজ স্বাস্থ্য দফতরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy