Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

Corona Virus: এক মাসের বেশি ত্রাণ শিবিরে, থাবা করোনারও

ইতিমধ্যে ত্রাণ শিবিরে হানা দিয়েছে করোনা। স্বাস্থ্য দফতরের অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।

চাঁদপুর আয়লা কেন্দ্রেই আপাতত সংসার। নিজস্ব চিত্র

চাঁদপুর আয়লা কেন্দ্রেই আপাতত সংসার। নিজস্ব চিত্র

কেশব মান্না
রামনগর শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২১ ০৬:০৯
Share: Save:

ঝড়ের ঝাপটা আর জলোচ্ছ্বাসের ঘূর্ণি সব কেড়েছে। ঘর, চাষজমি, পানের বরজ— ইয়াসে সব কিছু হারিয়ে প্রাণ বাঁচাতে এসে উঠেছিলেন সরকারি ত্রাণ শিবিরে। তার পরে দেড় মাস হতে চলল। এখনও আয়লা কেন্দ্রই ঠিকানা চাঁদপুর গ্রামের ৫৫ টি পরিবারের। এক ছাদের তলায় ১৭০ জন থাকার এই পর্বে করোনাও থাবা বসিয়েছে ত্রাণ শিবিরে।

পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-১ ব্লকের অন্তর্গত তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে চাঁদপুর। বঙ্গোপসাগরের একেবারে গা ঘেঁষে এই গ্রাম। গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসের’ জেরে জলোচ্ছ্বাসের দাপটে সমুদ্রের শক্তপোক্ত বাঁধ কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়েছিল। তোড়ে জল ঢুকেছিল গ্রামে। স্থানীয় মন্দির সংলগ্ন আয়লা কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন চাঁদপুরে প্রায় দু’শো জন। তার মধ্যে হাতেগোনা কয়েক জনই বাড়ি ফিরেছেন।

ইতিমধ্যে ত্রাণ শিবিরে হানা দিয়েছে করোনা। স্বাস্থ্য দফতরের অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তাঁদের দিঘায় সরকারি সেফ হোমে নিয়ে গিয়ে নিভৃতবাসে রাখা হয়। পরে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন সকলেই। তবু ভয় আছে। তাই পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় গোটা আয়লা কেন্দ্র মাঝেমধ্যেই জীবাণুমুক্ত করছেন ইয়াস-বিধ্বস্তরাই।

ইয়াসের দিন থেকে পরিবার নিয়ে ত্রাণ শিবিরে আছেন পেশায় মৎস্যজীবী অভিজিৎ মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘ঘরদোরের চিহ্নটুকু নেই। সমুদ্র বাঁধও পোক্ত নয়। সামনে আবার ষাড়াষাড়ির কটাল। সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকাও অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। ধার-কর্জ করে ঘর তৈরির সাহস পাচ্ছি না।’’ অমল বারিকরা দুই ভাই অবশ্য আয়লা কেন্দ্রে থেকেই ধূলিসাৎ হওয়া অ্যাসবেস্টসের ঘরের সামনে ফের কাঠামো তৈরি করছেন। অমল বলছেন, ‘‘কত দিন আর নিজের বাড়ি ছেড়ে থাকব।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অজিত মাঝিও আছেন এই আয়লা কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ‘‘এখন বর্ষা। সেপ্টেম্বরের আগে ঘর বানানোর ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। ব্লক প্রশাসনকে বলেছি, তত দিন আমরা এখানেই থাকতে চাই।’’

শতায়ু জাহ্নবী মাঝি থেকে কচিকাঁচার দল, সকলেরই ঠিকানা এখন ত্রাণ শিবির। পরিবার পিছু একটি করে স্টোভ, কিছু চাল, আনাজ আর নগদ কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে প্রশাসন। নিজেরাই রেঁধেবেড়ে খাচ্ছেন দুর্গতরা। রামনগর ১-এর বিডিও বিষ্ণুপদ রায় বলেন, ‘‘প্রশাসনিক ভাবে সাধ্যমতো সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে আয়লা কেন্দ্রে এত জন একসঙ্গে রয়েছেন। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে আগামী সপ্তাহে ফের করোনা পরীক্ষার শিবির হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Relief Camp Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE