Advertisement
E-Paper

Marriage: সৌজন্যে ভিডিয়ো কল, একে অপরকে মনের কথা ‘বুঝিয়ে’ সাত পাকে বাঁধা পড়লেন ওঁরা

বছর দেড়েক আগে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে পুরুলিয়ার ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। প্রাথমিক কথাবার্তা হলেও তা বিশেষ এগোয়নি।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:১৮
বিয়ের আসরে শকুন্তলা এবং মৃত্যুঞ্জয়। নিজস্ব চিত্র

বিয়ের আসরে শকুন্তলা এবং মৃত্যুঞ্জয়। নিজস্ব চিত্র

ওঁরা কথা বলতে পারেন না। শুনতেও পান না। তা কি মন দেওয়া-নেওয়ায় বাধা ফেলতে পারে? পারে যে না, তার সাক্ষাৎ প্রমাণ পুরুলিয়ার শকুন্তলা এবং বীরভূমের মৃত্যুঞ্জয়। মনের কথা বলতে বা শুনতে না-পারলে কী হবে, আকার-ইঙ্গিতেই পরস্পরের প্রতি ভালবাসা বুঝিয়েছেন তাঁরা। সেই ভালবাসা পরিণতি পেল রবিবার, যখন মূক ও বধির এই যুবক-যুবতী সাতপাঁকে বাঁধা পড়লেন। সৌজন্যে ভিডিয়ো কল। এমন বিয়ের সাক্ষী থাকতে পেরে খুশি আত্মীয়-পড়শিরা। বলছেন, দিব্যি জুটি হল!

পুরুলিয়া জেলার মুরান্ডি পঞ্চায়েতের যশপুরে বাড়ি বছর উনিশের শকুন্তলার। বাবা সনাতন গড়াই প্রান্তিক ব্যবসায়ী। দশম শ্রেণিতে পড়া মেয়ে দেখতে সুন্দরী হলেও মূক-বধির মেয়ে বিয়ে কী ভাবে দেবেন, চিন্তায় ছিলেন পরিজন। চলছিল দেখাশোনা। একই অবস্থা ছিল বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের বাবুইজোড় ঘেঁষা গ্রাম বেলঘরিয়ার বছর একুশের যুবক মৃত্যুঞ্জয়ের ক্ষেত্রে। বাবা দিলীপ গড়াই ট্রাক্টর চালক। তিনিও ছেলের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন।

বছর দেড়েক আগে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে পুরুলিয়ার ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। প্রাথমিক কথাবার্তা হলেও তা বিশেষ এগোয়নি। কারণ, দুই পরিবারেরই মনে হয়েছিল, বর-কনে, দু’জনেই যদি কথা বলতে না পারে বা শুনতে না পায়, তাহলে কী ভাবে তাদের দিন চলবে। তার চেয়ে বরং এমন কাউকে খোঁজা হোক যে ওই দু’জনের পাশে যথার্থ ভাবে পাশে দাঁড়াবে। অভিভাবকেরা এমন ভাবলেও অন্য রকম ভেবেছিলেন মৃত্যুঞ্জয় ও শকুন্তলা।

পরিবার সরে গেলেও সামাজিক মাধ্যমে একে অন্যের ছবি দেখা দিয়ে শুরু। এবং প্রেমও। নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েক মাস ভিডিয়ো কলে আকার ইঙ্গিতে কথাবার্তা শুরু হয় কয়েক মাস আগে থেকে। মন দেওয়া-নেওয়ার পর্ব চলাকালীন দু’টি পরিবারই যখন জানতে পারে ছেলেমেয়ে ভালবাসায় পড়েছেন, তখন আর বাধা না দিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ান। চার হাত এক হয়। পাত্রের বাবা-মা দিলীপ গড়াই, পূর্নিমা গড়াই এবং পাত্রীর বাবা-মা সনাতন গড়াই টুসি গড়াইরা বলেন, ‘‘ওরা যখন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন আমরা কেন আর বাধা হব! ওরা আনন্দে থাকলেই আমাদের শান্তি।’’

সোমবার খয়রাশোলের বাডিতে প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে দৃশ্যতই খুশি দেখাচ্ছিল নব দম্পতিকে। আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন, পরিবারের সিদ্ধান্তে একে অন্যের জীবন সঙ্গী হতে পেরে তাঁরা আনন্দিত। জীবনের পথ চলায় কোনও সমস্যা নেই তাঁদের। ঠিক যেমন সমস্যা এলেও দু’জনে মিলে সামাল দিয়েছেন ‘কোশিস’-এর মূক-বধির ‘হরিচরণ’ ওরফে হরি এবং ‘আরতি’। রুপোলি পর্দায় হরি (সঞ্জীব কুমার) ও আরতি (জয়া ভাদুড়ি) দেখিয়ে দিয়েছিলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে কী ভাবে দাম্পত্য জীবনকে সুখী করা যায়।

মৃত্যুঞ্জয়-শকুন্তলাও সেই প্রত্যয় নিয়েই নতুন জীবন শুরু করলেন।

Specially abled people handicap
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy