Advertisement
E-Paper

নির্দোষ-নিগ্রহ কেন, ভর্ৎসনা সিবিআই-কে

দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় নির্দোষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে চার্জশিট দাখিল করেছিলেন এক সিবিআই অফিসার। কিন্তু তদন্তকারী অফিসার ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতগ্রাহ্য কোনও তথ্যপ্রমাণই দাখিল করতে পারেননি। ৩০ জন সাক্ষী হাজির করেছিলেন তিনি।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৩১

হাজার অপরাধী আইনের ফাঁক গলে যদি বেরিয়ে যায় তো যাক, এক জন নিরপরাধ ব্যক্তিও যেন শাস্তি না-পায়। ন্যায়বিচারের চিরাচরিত বিধানে এ ভাবেই নির্দোষের রক্ষাকবচ নির্দিষ্ট করা আছে। তা সত্ত্বেও নির্দোষ ব্যক্তির গায়ে দোষীর তকমা সেঁটে দিয়ে দীর্ঘ দু’যুগ ধরে তাঁকে নাস্তানাবুদ করায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিবিআই।

দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় নির্দোষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে চার্জশিট দাখিল করেছিলেন এক সিবিআই অফিসার। কিন্তু তদন্তকারী অফিসার ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতগ্রাহ্য কোনও তথ্যপ্রমাণই দাখিল করতে পারেননি। ৩০ জন সাক্ষী হাজির করেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও সাক্ষীর বয়ানেই ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী। সিবিআইয়ের সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ৎসনা করে সম্প্রতি রায় দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে ওই নির্দোষ ব্যক্তিকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।

কী ভাবে হয়েছিল এই মামলা?

আদালত সূত্রের খবর, ১৯৯৩ সালে আর বিশ্বাস নামে সিবিআইয়ের এক অফিসার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি দুর্নীতির মামলা দায়ের করেন। তিনি সেই মামলায় জানান, ২২ লক্ষ টাকার বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম সরবরাহ করার জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার তরফে ‘জেনিথ ইলেকট্রনিক্স পাওয়ার সিস্টেম’ নামে এক সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, ওই সংস্থা প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা অগ্রিম নেওয়ার পরেও তেল সংস্থাকে সেই সব সরঞ্জাম সরবরাহ করেনি। তেল সংস্থার আধিকারিক পিবিকে মেনন-সহ চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। চার্জশিটে বলা হয়, ১৭ লক্ষ টাকা নেওয়ার পরেও বেসরকারি সংস্থাটি যে কোনও সরঞ্জামই সরবরাহ করেনি, তাতে তেল সংস্থার কর্তা মেনন জড়িত। বেসরকারি সংস্থার মালিক এমভি প্রভাকরনের নামও ছিল চার্জশিটে।

আরও পড়ুন: শৌচাগার না বানানোয় স্বামীকে ডিভোর্স দিলেন স্ত্রী

বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন চার অভিযুক্তের মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে মেনন নির্দোষ প্রমাণিত হন। প্রভাকরনের বিরুদ্ধেও কোনও প্রমাণ মেলেনি। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মামলা ঠোকার পরেই মেননকে বরখাস্ত করেছিল তেল সংস্থা। বিচারকের পর্যবেক্ষণ, বিচার ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য মানবাধিকার রক্ষা করা। কিন্তু সামাজিক সম্মান হারিয়ে দীর্ঘ ২৪ বছর কার্যত অপরাধীর তকমা বয়ে বেড়াতে হয়েছে মেননকে। সে-ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেই মনে করছেন বিচারক। তাঁর নির্দেশ, ক্ষতিপূরণ হিসেবে মেননকে ১০ লক্ষ টাকা দেবে তেল সংস্থা। এবং বার্ষিক ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ অবসরগ্রহণের দিন পর্যন্ত বেতন এবং অন্যান্য প্রাপ্য মেটাবে।

আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ওই তেল সংস্থার মুখপাত্র জানান, তাঁরা এখনও রায়ের নথি পাননি। তা হাতে আসার পরেই আইন অনুযায়ী যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

CBI Officer CBI False Case Reproach guiltless সিবিআই
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy