প্রতীকী ছবি।
অতিমারি তো শুধু রাজ্যে নয়, মোক্ষম আঘাত হেনেছে সারা দেশেই। তারই মধ্যে আপৎকালীন তৎপরতায় দিল্লির জোড়া বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে, তাদের আগামী বছরের দশম ও দ্বাদশের চূড়ান্ত পরীক্ষা কখন ও কী ভাবে হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কী হবে, সেই প্রশ্ন জোরদার হয়েছে। শিক্ষা শিবির-সহ সর্বস্তরেই অভিযোগ উঠছে, একটা শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে চলল, কিন্তু পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের মূল্যায়ন কী ভাবে হবে, কবে হতে পারে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক, এখনও তার কোনও দিশা দেখাতে পারল না বাংলার শিক্ষা দফতর।
মিড-ডে মিলের জিনিসপত্র মিলছে সময়মতো। সরকারি প্রকল্পগুলিও চালু আছে। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর মূল্যায়নের বিষয়ে এত অনিশ্চয়তা কেন? সিআইএসসিই বোর্ড এবং সিবিএসই বোর্ড কিন্তু আগেই জানিয়েছে, তাদের দশম ও দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষা নভেম্বর ও এপ্রিল নাগাদ দু’টি সিমেস্টারে ভাগ করে নেওয়া হবে। ওই দু’টি সর্বভারতীয় বোর্ড যদি তাদের দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষা নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দিতে পারে, তা হলে রাজ্য বোর্ড এখনও সেটা কেন পারছে না? কেন পঞ্চম থেকে দশমের ক্লাসের পরীক্ষার কোনও পরিকল্পনার কথা বলছে না শিক্ষা দফতর? বঙ্গে এই নিয়ে এত টালবাহানা কিসের?
প্রতি বছরই অন্তত ২০ লক্ষ পড়ুয়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। এ নিয়ে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকদের বড় অংশের বক্তব্য, করোনা আবহে নির্দিষ্ট করে তারিখ বলতে না-পারলেও কবে নাগাদ ওই দু’টি পরীক্ষা হতে পারে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কোনও পরিবর্তন হবে কি না, সেগুলো অবিলম্বে জানিয়ে দেওয়া দরকার। এই নিয়ে দীর্ঘকালীন অনিশ্চয়তায় পড়ুয়াদের মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হচ্ছে।
স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ জানাচ্ছেন, পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্রথম এবং অগস্টের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় সামগ্রিক মূল্যায়ন হয়। গত বছরের মতো এই শিক্ষাবর্ষে এখনও তা নেওয়া সম্ভব হয়নি। গত বছর পড়ুয়ারা ক্লাসে উঠলেও মার্কশিট পায়নি। এ বারেও কি তা-ই হবে? পুজোর ছুটির পরে স্কুল খোলার মাস খানেকের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট হয়। এ বার সেই টেস্ট হবে কি? কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “হাতে সময় আর বেশি নেই। দুর্গাপুজোর আগেই বিভিন্ন ক্লাসের পরীক্ষা, বিশেষ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যাপারে পরিকল্পনার কথা জানানো উচিত শিক্ষা দফতরের।”
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “করোনা পরিস্থিতি ঠিক থাকলে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে স্কুল খোলার উপরে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে অফলাইন মোডে পরীক্ষা হবে।” মাধ্যমিক পরীক্ষার ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। ফোনে পাঠানো বার্তারও উত্তর দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy