Advertisement
E-Paper

CPIM: ‘দুর্বলতা, অহমিকা’ ছেড়ে এগোনোর ডাক সিপিএমে

সিপিএম নেতৃত্ব এ দিন বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারের নানা কাজকর্মের জেরে প্রান্তিক মানুষ বিপন্ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২২ ০৬:৩০
মুজফফর আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিপিএমের সভায়

মুজফফর আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে সিপিএমের সভায় নিজস্ব চিত্র।

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বিস্তর উপকরণ রয়েছে। সেই ক্ষোভকে সংগঠিত করার জন্য নিজেদের ‘দুর্বলতা ও অহমিকা’ কাটানোর ডাক উঠে এল সিপিএমের মঞ্চে। তাদের বক্তব্য, বিজেপি এবং তৃণমূল কারও আধিপত্য না মেনেই জনস্বার্থের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘নাকতলা নাক কেটেছে, তৃণমূল রাজ্যের কান কেটেছে, কিন্তু মানুষের জিভ এখনও আছে! মানুষের ক্ষোভকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’’

দেশে কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুজফ্ফর আহমেদের (কাকাবাবু) ১৩৪তম জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার মহাজাতি সদনে ছিল সিপিএমের সভা। অতিমারির সময়ে দু’বছর অনুষ্ঠান হয়েছিল ভার্চুয়াল। এ বারের সভায় ভিড় ছিল উপচে পড়া, সকলের জায়গা হয়নি প্রেক্ষাগৃহে। স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশের ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে এবং স্বাধীনতার পরে বামপন্থী আন্দোলনে মানুষকে সংগঠিত করার কাজ করেছিলেন কাকাবাবু, জেল খেটেছিলেন বহু বছর। সেই ইতিহাস স্মরণ করতে গিয়েই বর্তমান পরিস্থিতি তুলে এনেছেন সিপিএম নেতারা। সেই সূত্রেই দলের রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেন, ‘‘অনেক মানুষ আমাদের সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু আমাদের দুর্বলতা, অহমিকা এবং আহাম্মকপনার জন্য দূরে সরে গিয়েছেন। তাঁদের আবার আমাদের কাছে নিয়ে আসতে হবে। সম্মেলনে সেই ডাকই দেওয়া হয়েছে। সেই লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মানুষের ভরসা করার উপযুক্ত পার্টি করতে হবে। সকলেই বামপন্থী হবেন, তার কোনও মানে নেই। বাম নন, তেমন মানুষকেও আমাদের দাবি, লড়াইয়ের কাছে নিয়ে আসতে হবে।’’

সিপিএম নেতৃত্ব এ দিন বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারের নানা কাজকর্মের জেরে প্রান্তিক মানুষ বিপন্ন। অসন্তোষের পাহাড় জমছে। বিশেষত, শ্রমজীবী ও কৃষিজীবী মানুষকে দল নির্বিশেষে এক জায়গার আনার ডাক দিয়েছেন তাঁরা। রাজ্যে ডেউচা-পাঁচামির খনি প্রকল্পের বিরোধিতায় জনজাতিদের, ফরাক্কায় জোর করে জমি দখলের প্রশাসনিক চেষ্টার অভিযোগ সামনে রেখে স্থানীয় মানুষের বা শিক্ষায় নিয়োগ-দুর্নীতির প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্মের চলতি আন্দোলনের উদাহরণ দিয়ে তাঁরা বলেছেন, সব আন্দোলনকে এক সূত্রে গাঁথাই দল হিসেবে তাঁদের কাজ। সেলিমের বক্তব্য, ‘‘দেশে মোদীর আর রাজ্যে দিদির লুট চলছে। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কথা বললে জিভ কেটে নিতে পারতেন! কিন্তু লক্ষীর ভাণ্ডার দেখিয়ে সবাইকে থামিয়ে রাখা যাবে না, জোকার শ্রমজীবী হাসপাতালের ওই মহিলা (যিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে জুতো ছুড়েছিলেন) দেখিয়ে দিয়েছেন।’’

দলের পলিটবুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘বাংলায় আর ত্রিপুরায় যা হচ্ছে, দু’টোর চরিত্র একই। যাঁরা ভাবছেন এখানে বিজেপিও তো প্রতিবাদ করছে, তাঁদের বলব বিজেপি-শাসিত ত্রিপুরার দিকে তাকান।’’ ফ্যাসিবাদী আক্রমণের বিরুদ্ধে সব মানুষকে একজোট করার ডাক দিয়ে সূর্যবাবুর মন্তব্য, ‘‘আমরা কথায় কথায় বলি যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলা রে। রবীন্দ্রনাথও কিন্তু একটা শর্ত রেখেছেন! আগে তো ডাক দিতে হবে!’’ সংবিধান এবং গণতন্ত্রকে যে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে এখন দেশে, তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সিপিএমের আর এক পলিটবুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোম। কাকাবাবুর জন্মদিন পালনের পরিপ্রেক্ষিত ও তাৎপর্য এ দিন ফের ব্যাখ্যা করেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।

CPIM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy