Advertisement
E-Paper

হাত বাঁধা ছিল আইনে, ভুলও মানল সিপিএম

সিঙ্গুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা ঠিক করতে ঝাড়া ৪৮ ঘণ্টা সময় নিল সিপিএমের পলিটব্যুরো! বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জমানায় টাটার কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণকে সুপ্রিম কোর্ট অবৈধ বলে দেওয়ার দু’দিন পরে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব বললেন, সব দোষ ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৫

সিঙ্গুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা ঠিক করতে ঝাড়া ৪৮ ঘণ্টা সময় নিল সিপিএমের পলিটব্যুরো! বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জমানায় টাটার কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণকে সুপ্রিম কোর্ট অবৈধ বলে দেওয়ার দু’দিন পরে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব বললেন, সব দোষ ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনের। পলিটব্যুরোর যুক্তি, ‘ওই সময় জমি অধিগ্রহণের জন্য ওটাই একমাত্র আইন ছিল। তাই ওই আইনেই জমি নিতে হয়েছিল। আইনে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার দিকটি যথেষ্ট দেখা হত না’।

সিপিএম নেতৃত্ব ব্রিটিশ জমানার আইনকে দোষ দিলেও সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, সিঙ্গুরে জমি নেওয়ার সময় সেই আইনটাই অনুসরণ করা হয়নি। যে সব কৃষকদের স্বার্থরক্ষার কথা ছিল, তা সে ক্ষতিপূরণই হোক বা অনিচ্ছুক কৃষকদের আপত্তি খারিজ করার কারণ দেখানো, মানা হয়নি। সেই ভুল যে হয়েছে, তা-ও মানতে বাধ্য হয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। পলিটব্যুরোর বক্তব্য, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর্যালোচনাতেই বলা হয়েছিল যে, জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ভুলের মাসুল দিতে হয়েছে।

প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ভুলের চ়ড়া মাসুলের কথা বলে পলিটব্যুরো কি ফের বুদ্ধবাবুকেই কাঠগ়়ড়ায় তুলল? দলের পলিটব্যুরোর প্রবীণ সদস্য বিমান বসুর জবাব, ‘‘এটা বিলম্বিত বোধোদয় নয়! নতুন কথাও নয়। সেই ২০১১-র পরে দলের পর্যালোচনা রিপোর্টেই ভুলের কথা বলা আছে। কাউকে দায়ী করার কথা এখানে আসছে না।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘কৃষকদের মেরে শিল্প করা যায় না। ১৮৯৪ সালের জমি আইনটি কালা আইন বলে বাতিল করতে চেয়েছিলাম। এখন ওদের বোধোদয় হয়েছে। টিউবলাইটের দল!’’

বস্তুত, গত দু’দিন ধরে সিপিএমের এ কে গোপালন ভবনের নেতারা কেউ সিঙ্গুরের রায় নিয়ে মুখ খুলতেই রাজি হচ্ছিলেন না। দু’দিনের ভাবনাচিন্তার পরে আজ বিবৃতি জারি করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলেছেন, কারখানার কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে তৃণমূল সরকার ক্ষতিপূরণ না নেওয়া কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দিতে বিল এনেছিল। তখনই সিপিএম বলেছিল, সব জমিই পুরনো মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক। ‘ইচ্ছুক’ আর ‘অনিচ্ছুক’ বলে ভেদাভেদ যেন না করা হয়।

পলিটব্যুরো নেতা তথা দলের কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘সিঙ্গুরের অনেক আগে ১৮৯৪-র সাম্রাজ্যবাদী আইন তুলে দিয়ে কৃষক-স্বার্থ রক্ষা করে নতুন আইনের দাবিতে আন্দোলন করছিলাম। দল এক কথা বলতে পারে। কিন্তু সরকারকে চলতি আইন মেনেই চলতে হয়।’’ হান্নানের দাবি, তাঁদের দাবিতেই ইউপিএ সরকার ২০১৩-র জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন আইন তৈরি করেছে। যেখানে কৃষকদের অনেকটাই স্বার্থ রক্ষা হয়েছে। পলিটব্যুরোর যুক্তি, বাম সরকারের উদ্দেশ্য ছিল শিল্পায়ন, কর্মসংস্থানের জন্য কারখানা তৈরি। সেই পথে পদ্ধতিগত ভুল হয়েছিল, যা তারা আগেই স্বীকার করেছে।

CPM Singur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy