Advertisement
E-Paper

তাতালেন দেবলীনা, ভিড়ে লড়াইয়ের মেজাজ

প্রতিষ্ঠিত নেতাদের চেনা বক্তৃতার ভিড় থেকে একেবারে সরে এসে সেই ঘাটতি পূরণ করে দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য, জনজাতি নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৩
বামফ্রন্টের ডাকা ব্রিগেড সমাবেশে দেবলীনা হেমব্রম। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

বামফ্রন্টের ডাকা ব্রিগেড সমাবেশে দেবলীনা হেমব্রম। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

মাইকে যখন ‘উই শ্যাল ওভারকাম’ ভাসছে, তার সঙ্গেই ছড়াতে শুরু করেছিল মেজাজটা। যখন তা শেষ হল তখন ব্রিগেড জুড়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের ভিড়ে চোখে পড়লেন এক পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তি। ঠোঁট নড়ছে আর দু’হাত তুলে নিজেকে ছুঁড়ে দিলেন উপরের দিকে।

এই ছিল বামফ্রন্টের ডাকা ব্রিগেড সমাবেশের মেজাজ। ভিড় ছিল বিপুল, তার মধ্যে চোখে পড়ার মতো ছিল তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি। সিপিএম নেতাদের দাবি, ক্ষমতায় থাকার সময়েও এত ‘বড় ও স্বতঃস্ফূর্ত ব্রিগেড’ ক’টা করতে পেরেছেন, সংশয় আছে!

মুর্শিদাবাদের নওদার বাসিন্দা মোস্তাকিন শেখ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের সময় খুব খারাপ অবস্থা তৈরি করেছিল তৃণমূল। আমরা দাঁড়াতে পারিনি। একটু একটু করে চেষ্টা করছি।’’ দল বেঁধে টাটা সুমো ভাড়া করে এসেছেন আলো-মাইকের কর্মচারী মোস্তাকিন। একই রকম উৎসাহ দেখা গিয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে হালিশহর থেকে হাত-প্যাডেল ঘোরানো সাইকেল চালিয়ে আসা রবি দাসের।

পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন মালদহের বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা অরুণ সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা হেরেছিলাম তৃণমূলের কাছে। ভোট চুরি হয়েছে। তবে বিজেপি নেই। বিরোধী রাজনীতি আমরাই করছি।’’ মালদহের চাঁচল থেকে রাজু হোসেন এসেছিলেন। পরনের লাল জামা, লাল লুঙ্গিতে তিন মাস ধরে কাস্তে-হাতুড়ি এঁকেছেন এমব্রয়ডারি করে। বর্ধমানের রায়না থেকে এসেছেন শিবপ্রসাদ রায়। সভা শেষে বললেন, ‘‘ব্রিগেডে এসে শুনছি, এই সমাবেশের জন্য যে বাড়ির দেওয়াল লিখেছিলাম, তার মালিককে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ঠিক করেছি, ফিরে তাঁর কাছেই জানতে চাইব, অন্যায়টা কী!’’

সিপিএম এবং বাম শরিকেরাও লোকসভা ভোটের আগে এই রকম মেজাজই চাইছিলেন। সে কারণেই কানহাইয়া কুমারের মতো তরুণকে জায়গা দেওয়া হয়েছিল সমাবেশে। অসুস্থ কানহাইয়া আসতে পারেননি। প্রতিষ্ঠিত নেতাদের চেনা বক্তৃতার ভিড় থেকে একেবারে সরে এসে সেই ঘাটতি পূরণ করে দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য, জনজাতি নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম। বাংলা ও সাঁওতালি ভাষায় মেশানো বক্তৃতায় তিনি যখন বলছেন, ‘‘মাদল দিতে হবে না। ওটা আমরা এমনিই বাজাই। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান দিন’’, তখন মুহূর্মুহূ হাততালি। যখন বলেছেন, ‘‘ঢপবাজি চলবে না! ওদের আমরা ছাড়বক নাই’’, তখনও মাঠ জুড়ে উচ্ছ্বাস!

Debaleena Hembram Brigade Rally CPM দেবলীনা হেমব্রম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy