অতিমারিতে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল রেড ভলান্টিসার্য়রা। সে কথা উল্লেখ করেই ভোট চাইছে সিপিএম। প্রতীকী ছবি
লকডাউন চলাকালীন সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠনের কর্মীরা ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’ নামে নানা প্রয়োজনে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। রাজ্যের বিভিন্ন অংশের মতোএই কলকাতা শহরেও। এ বার সেই পরিষেবার কথা তুলে ধরেই কলকাতার পুরনির্বাচনে ভোট চাইছেন বামপ্রার্থীরা। কিন্তু বাম প্রার্থীদের ভোট চাওয়ার এই পদ্ধতি ঘিরে প্রশ্ন উঠছে। কারণ,অতিমারি কালের কঠিন সময়ে বিশ্ব জুড়েই মানুষ একে অপরের দিকে নির্দ্বিধায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কলকাতায় সেই বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিনিময়ে ভোট চাওয়াটা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। পুরভোটের প্রচারে নেমে বামপ্রার্থীরা পুর পরিষেবা বা বিকল্প ভাবে পুরসভার পরিচালনার কথা সেভাবে বলছেন না। বরং তাদের প্রচারে ঘুরে ফিরে আসছে চলতি বছর বিধানসভা ভোটের আগে ও পরে লকডাউনের সময় তাদের কর্মীদের পরিষেবা দেওয়ার কথাই। কলকাতা পুরনির্বাচনে এ ভাবে ভোট চাওয়ার পদ্ধতিকে সমর্থন করছেন না আলিমুদ্দিনের একাংশও। তাদেরও প্রশ্ন, বিপন্ন মানুষের পাশে থাকার বিনিময়ে এ ভাবে কি ভোট চাওয়া যায়?
সিপিএমের প্রতীক কাস্তে-হাতুড়ির সঙ্গে রেড ভলান্টিয়ার্সদের নাম ও লোগো ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে ব্যানার-হোর্ডিং। এমনকি, সিপিএমের দলীয় নীতি ভেঙে প্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের রেড ভলান্টিয়ার্সদের নাম। যদিও এতে কোনও ভুল দেখছেন না ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমপ্রার্থী জয়দীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘করোনা অতিমারির সময় আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যে পরিষেবা দিয়েছি, যেভাবে মানুষের পাশে থেকেছি, তার ভিত্তিতেই আমরা মানুষের সমর্থন চাইছি।’’ ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সিপিএমনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের প্রচারেও রেড ভলান্টিয়ার্সদের নাম করে ভোট চাওয়া হয়েছে। তাঁর হোর্ডিংয়ে লেখা হয়েছে, ‘ওয়ার্ডের নির্বাচিত পুরপ্রতিনিধি নয়, কোভিড অতিমারি সময়ে আমদের পাশে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়’। সঙ্গে আরও লেখা হয়েছে, ‘জনতার রান্নঘর, শ্রমজীবী ক্যান্টিন, মুমূর্ষু রোগীকে অক্সিজেন সরবরাহ, হাসপাতালে ভর্তি করা ও স্যানিটাইজেশনের কাজ করেছে রেল ভলান্টিয়ার্স’। প্রসঙ্গত, রেড ভলান্টিয়ার্সরা যেমন পরিষেবা দিয়েছিলেন, তেমনই শ্রমজীবী ক্যান্টিনও শুরু হয়েছিল সিপিএমের উদ্যোগেই। সে সব কথা উল্লেখ করেই ভোট চাইছেন সিপিএমপ্রার্থীরা।
যদিও রেড ভলান্টিসার্য়দের সমাজসেবামূলক কাজের বিনিয়মে ভোট চাওয়ার কথা মানতে চাননি সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার। তবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রার্থীরা কেউই রেড ভলান্টিসার্য়দের কাজের কথা বলে ভোট চাইবেন না। কোথাও যদি এমনটা হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে আমি কথা বলব। আমরা করোনা অতিমারি ও লকডাউনের সময় যে কাজ করেছি, তা সামাজিক তাগিদেই। সেখানে কোনও রাজনীতি ছিল না। তাই সেই পরিষেবার কথা বলে ভোট চাওয়ার প্রশ্ন নেই। বড়জোর কঠিন সময়ে আমরাই যে তাঁদের পাশে ছিলাম, সে কথা ভোটারদের স্মরণ করানো যেতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy