E-Paper

বিকল্পের বার্তাতেই সমাপ্ত সিপিএমের ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’

কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল। পানিহাটি থেকে শেষ দিনের পদযাত্রা শুরু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৬:০৮
শেষ দিনে সিপিএমের ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’।

শেষ দিনে সিপিএমের ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’। — নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল কংগ্রেসের বিকল্প বিজেপি নয়, মানুষ এটা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারছেন— দলের ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’র বুধবার সমাপ্তি সমাবেশ থেকে এই দাবি করেই দলের লড়াইকে আরও জোরদার করার ডাক দিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে শোরগোলের মধ্যে জনজীবনের বিভিন্ন বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিতে ২৯ নভেম্বর থেকে ১১টি জেলা জুড়ে টানা এই পদযাত্রা করেছে সিপিএম।

কোচবিহারের তুফানগঞ্জ থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল। পানিহাটি থেকে শেষ দিনের পদযাত্রা শুরু হয়। উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির দেওয়ান বাগান ময়দানে এ দিন সমাপ্তি সমাবেশের আগে নিউটাউনে ‘জ্যোতি বসু সমাজচর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রে’ পদযাত্রার স্থায়ী যোগদানকারীদের সংবর্ধনা জানিয়েছেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা বিমান বসু। অতীতের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বিমানের দাবি, “এই পদযাত্রা পুরোপুরি প্রতিকূল পরিবেশে, শত্রু-বেষ্টিত এলাকা দিয়ে হয়েছে।” সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির ডাকে সিঁথি থেকে মিছিল করে সমাবেশে পৌঁছন নেতা-কর্মীদের একাংশ।

জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রে ‘বাংলা বাঁচাও’ যাত্রীদের সংবর্ধনায় বিমান বসু। নিউ টাউনে।

জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রে ‘বাংলা বাঁচাও’ যাত্রীদের সংবর্ধনায় বিমান বসু। নিউ টাউনে। — নিজস্ব চিত্র।

সমাপ্তি সমাবেশে বক্তৃতা করতে গিয়ে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “এটা যাত্রার সমাপ্তি। লড়াইয়ের শেষ নয়।” প্রসঙ্গত, পদযাত্রা চলাকালীন রাজ্য থেকে কোনও নির্দিষ্ট নেতাকে ঠিক করে না-দিয়ে এলাকাভিত্তিক ‘মুখ’, নতুন মুখে জোর দিয়েছিল সিপিএম। তার রেশ ধরেই এ দিন লড়াইয়ের ময়দানে বয়স্কদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে ‘নতুন কুঁড়িদের শামিল’ করার বার্তা দিয়েছেন সেলিম। বিজেপি ও তৃণমূলের ‘দ্বিমেরুর রাজনীতি’ ভাঙার বার্তা এবং বাম-বিকল্পের কথা বলে তাঁর সংযোজন, “বাংলার রাজনীতিতে নতুন বার্তা আনতেই এই পদযাত্রা। মানুষ ভেবেছিলেন নবান্নকে শায়েস্তা করতে ছাপান্নকে (নরেন্দ্র মোদী) আনতে হবে। কিন্তু দু’টোর যে কোনও ফারাক নেই, তা মানুষ বুঝতে পারছেন। আর জি কর-কাণ্ড, নিয়োগ দুর্নীতি-সহ সর্বত্র ছাড় পেয়েছেন দোষীরা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কিছু করেনি।” যুবভারতী-কাণ্ড, ধর্মের নামে রাজনীতি, ‘বেহাল’ শিল্প-কৃষি, ব্রিগেডের ময়দানে আমিষ বিক্রেতাকে ‘হেনস্থা’, পরিযায়ীদের দুর্ভোগ, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) নামে ‘নাগরিকত্ব যাচাই’-সহ বিভিন্ন প্রসঙ্গেও সরব হয়েছেন সেলিম। কাগজপত্রের নাম করে গরিব মানুষকে বিপদে ফেলা হচ্ছে বলে সমাবেশ থেকে ফের অভিযোগ তুলেছেন দলের নেতা সুজন চক্রবর্তীও।

রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্যের রেশ ধরেই লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন পদযাত্রার অন্যতম যোগদানকারী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “আমরা মানুষের চোখে সাহস, বিজেপি-তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাগ দেখেছি। পেটের ভাত আর হাতের কাজের দাবিতে ’২৬-এর ভোট হবে।” পদযাত্রায় যোগদানকারীদের জন্য মীনাক্ষীর হাতে স্মারক হিসাবে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের রচনা সঙ্কলন তুলে দিয়েছেন সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক পলাশ দাস। কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া গাড়ির চালকদের স্মারক দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CPM cpm rally

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy