সমঝোতার মূল জট খুলে দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। এ বার মুখোমুখি বসে আসন ভাগাভাগির রাস্তা আরও পরিষ্কার করে ফেললেন রাজ্য সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা।
এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে পুরুলিয়া ছাড়া অন্য প্রায় সব আসনেই বোঝাপড়া শেষ পর্যায়ে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের আলোচনার টেবিলে বসার কথা কাল, বুধবার। তখনই সমঝোতা চূড়ান্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বুধবার বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার নির্ধারিত সূচি পিছিয়ে যেতে পারে।
এআইসিসি-র তরফে প্রাথমিক ভাবে ২৫-১৭ আসনের রফাসূত্র দেওয়া হয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেসকে। তবে একই সঙ্গে বলা হয়েছিল, পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতেই আসন বণ্টনের নিষ্পত্তি করা হবে। দক্ষিণ কলকাতায় সোমবার সন্ধ্যায় সিপিএম ও কংগ্রেস নেতাদের বৈঠকের পরে পরিস্থিতি যেখানে দাঁড়িয়েছে, তাতে সোমেনবাবুরা লড়তে পারেন ১৩-১৪টি আসনে। সিপিএমের সঙ্গে আসন ভাগে কংগ্রেসের এখন বিশেষ কোনও সমস্যাও নেই। যা আছে, মূলত বাম শরিকদের সঙ্গে।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির দুই সদস্য রবীন দেব ও মৃদুল দে-র সঙ্গে আলোচনায় এ দিন হাজির ছিলেন স্বয়ং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য ও শঙ্কর মালাকার। বৈঠক থেকেই সোমেনবাবু ফোনে কথা বলেন বাম শরিক নেতাদের সঙ্গে। রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূলের মোকাবিলায় তাঁরা যে বামেদের সঙ্গে ‘আন্তরিক ভাবে জোট’ চান, তা জানিয়ে শরিক নেতাদের সহযোগিতা চান সোমেনবাবু। বৈঠকের পরে প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘আলোচনা ইতিবাচক দিকেই এগোচ্ছে। হাতে এখনও সময় আছে। আমরা ওঁদের (বাম) অনুরোধ করেছি বুধবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করতে।’’ রবীনবাবুরও বক্তব্য, ‘‘সাত দফায় ভোট, সময় আছে। আলোচনা এগোচ্ছে। যতটুকু সমস্যা আছে, সবটাই আলোচনায় মিটে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’’
কংগ্রেস সূত্রের খবর, কলকাতার দু’টি আসনের মধ্যে একটি, হাওড়া ও উলুবেড়িয়ার মধ্যে একটি, শ্রীরামপুর ও হুগলির মধ্যে একটি, বর্ধমান-দুর্গাপুর ও আসানসোলের মধ্যে একটি এবং জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে লড়তে চেয়েছে তারা। এতে সিপিএমের বিশেষ কোনও সমস্যা নেই। বসিরহাট আসন নিয়েও আগ্রহী কংগ্রেস। তাই সিপিআইকে বলা হয়েছে, তাদের ভাগের ওই আসনটির ব্যাপারে পুনর্বিবেচনা করতে। কিন্তু জট পেকেছে পুরুলিয়ায়। কংগ্রেস ওই আসন নিতে চায়, ফরওয়ার্ড ব্লকও পুরুলিয়া ছাড়তে নারাজ।
সিপিএম-কংগ্রেস বৈঠকের আগেই এ দিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সিপিআই এবং ফ ব-র দুই রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে বসিরহাট ও পুরুলিয়া আসন নিয়ে কথা বলেছেন। স্বপনবাবুরা বসিরহাট রাখতে চান। আর নরেনবাবুরা কংগ্রেসের সঙ্গে কথা বলতেও রাজি নন! পরে ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে দলের উভয় সঙ্কটই উঠে এসেছে। দলীয় সম্মেলন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসে কংগ্রেসকে আসন ছেড়ে দেওয়া তাদের মুশকিল। আবার ‘বিদ্রোহ’ করে একা লড়তে গেলেও অস্তিত্ব সঙ্কটের আশঙ্কা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy