Advertisement
E-Paper

পছন্দ সুজন, পিএসি পেতে পারে বাম

শঙ্কর-জয়কিষেণ। লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারেলাল। বা নন্দিতা-শিবপ্রসাদ! সুরকার বা ছবি পরিচালনার মতোই রাজ্য রাজনীতিতে এখন সুজন-মান্নান জুটি! অতীতে কংগ্রেস রাজনীতিতে প্রিয়-সুব্রত জুটিকে দেখেছে বাংলা। কিন্তু সিপিএম-কংগ্রেসের এমন জুটি এই প্রথম!

প্রসূন আচার্য

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০৩:৩০

শঙ্কর-জয়কিষেণ। লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারেলাল। বা নন্দিতা-শিবপ্রসাদ!

সুরকার বা ছবি পরিচালনার মতোই রাজ্য রাজনীতিতে এখন সুজন-মান্নান জুটি! অতীতে কংগ্রেস রাজনীতিতে প্রিয়-সুব্রত জুটিকে দেখেছে বাংলা। কিন্তু সিপিএম-কংগ্রেসের এমন জুটি এই প্রথম!

জোট ও জুটি রক্ষার স্বার্থে কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ চাইছেন, বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তীই বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান হোন। তাঁদের ইচ্ছা মঞ্জুর করে চেয়ারম্যান পদটি বামেদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলেই কংগ্রেস সূত্রের খবর।

বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার পরেই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ পিএসি-র চেয়ারম্যান। অতীতে সচরাচর বিরোধী দলনেতাই পিএসি-র চেয়ারম্যান হতেন। কিন্তু বিরোধী দলনেতার আসনে বসে সূর্যকান্ত মিশ্র এই রেওয়াজের ব্যতিক্রম ঘটিয়েছিলেন। তাঁর কাছে একটি পদ আছে বলে পিএসসি-র দায়িত্ব তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন দলীয় সতীর্থ আনিসুর রহমানকে। পিএসি চেয়ারম্যানের আলাদা মর্যাদা এবং দফতর, গাড়ি-সহ কিছু অধিকার প্রাপ্য। বিরোধী দলনেতা বাদে অন্য কেউ ওই পদে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক কিছু সুবিধা দু’জনে ভাগ করে নেওয়া যেতে পারে, এটাই ছিল তখন যুক্তি। পরে বিধানসভার মেয়াদের মাঝপর্বে রদবদলের সময়ে পিএসি-র চেয়ারম্যান পদ গিয়েছিল আর এক বিরোধী দল কংগ্রেসের কাছে।

এ বার জোটের স্বার্থেই প্রধান বিরোধী দল হয়েও কংগ্রেস পিএসি-র চেয়ারম্যানের পদ বামেদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এআইসিসি-র একটি সূত্রের খবর। যদিও বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লি। আর পিএসি-র চেয়ারম্যান কে হবেন, তা ঠিক করা স্পিকারের অধিকারের মধ্যে পড়ে।’’

কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ বলছেন, অল্প দিনেই সুজনের সঙ্গে তাঁদের সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। তাঁকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হলে সুজন-মান্নান জুটি আরও ভাল কাজ করবে বলে ওই বিধায়কদের বক্তব্য।

সিপিএম বিধায়ক আনিসুরও অবশ্য পিএসি-র চেয়ারম্যান পদের দাবিদার। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে ব্যক্তিগত ভাবে তিনি এক বার দাবি জানিয়েও এসেছেন বলে বিধানসভা সূত্রের খবর। কিন্তু তাঁর কেন্দ্র ডোমকলে কংগ্রেস এবং সিপিএমের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ হয়েছিল। ফলে, পিএসি-র চেয়ারম্যান পদ বামেদের ছাড়লেও আনিসুরে যে অধীরের আপত্তি থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। আবার ওই চেয়ারম্যান পদ ঘিরে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের মধ্যেও কোন্দল লেগে যাওয়ার আশঙ্কা। সব মিলিয়ে সুজনই ওই পদের দৌড়ে এগিয়ে। বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক, অধীর-ঘনিষ্ঠ মনোজ চক্রবর্তীকে বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক করা হতে পারে বলে এআইসিসি সূত্রে খবর।

দু’বছর আগে সারদা-সহ অর্থলগ্নি সংস্থায় প্রতারিতদের টাকা ফেরত বা ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’-র ছাতার তলায় গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে পথে নামার ক্ষেত্রে সুজন-মান্নান জুটিকে প্রথম দেখা গিয়েছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদক সুজনের উপরে দলে বিমান বসুর মতো শীর্ষ নেতাদের একাংশ ক্ষুব্ধ হলেও মান্নানের সঙ্গে যৌথ আন্দোলন থেকে তিনি সরেননি। এ বার বিধানসভার শুরু থেকে এই জুটি এমন ভাবে খেলছে, তা বিরোধী শিবিরে তাক লাগিয়ে দিয়েছে! তাঁরা বৃহস্পতিবার বসিরহাট গিয়েছেন, তো আজ, শুক্রবার যাবেন হরিদেবপুরে চোর সন্দেহে পিটুনিতে নিহত ছাত্রের বাড়িতে। মান্নান বলেন, ‘‘এর পরে সুজনকে নিয়ে কোলাঘাট ও পরে বীরভূমে যাব। খয়রাশোলের যে সরকারি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে, সেখানেও যাব।’’ সুজন বলেন, ‘‘যা করব, মান্নানদা’র সঙ্গে কথা বলেই। উনিই আমাদের নেতা।’’

Congress CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy