Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Jyoti Basu

মুখ তিনিই, জনতাকে নিয়ে বসু-শরণে দল

রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আর দেরি নেই। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সিপিএমের কাছে জনসমর্থন আদায়ের প্রধান মুখ বরাবরই জ্যোতিবাবু।

জ্যোতি বসু।—ফাইল চিত্র।

জ্যোতি বসু।—ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৪
Share: Save:

আনুষ্ঠানিক ভাবে দল এখনও পালন করে শুধু ‘কাকাবাবু’র (মুজফ্ফর আহমেদ) জন্মদিন। ঠিক তেমন ভাবে আনুষ্ঠানিকতার ছাপ না থাকলেও জ্যোতি বসুর জন্মদিনে দল এবং দলীয় লোকজনের উদ্যোগেই রক্তদান, চোখ পরীক্ষা বা চক্ষুদানের শিবির আয়োজন হয়ে আসছে তাঁর মৃত্যুর পর থেকে। এ বার ‘বিশেষ’ পরিস্থিতিতে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জন্মদিনের পরিকল্পনাতেই আরও এক ধাপ এগোল সিপিএম। জ্যোতিবাবুকে স্মৃতিকে জড়িয়ে আম জনতার কাছ থেকে আঁকা ছবি, ভিডিয়ো, গ্রাফিক্স বা পোস্টার চাইছে তারা। সামাজিক মাধ্যমে যার প্রদর্শনী হবে ৮ জুলাই জ্যোতিবাবুর জন্মদিনে। দলের তরফে এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আপনার চোখে জ্যোতি বসু’।

রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আর দেরি নেই। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সিপিএমের কাছে জনসমর্থন আদায়ের প্রধান মুখ বরাবরই জ্যোতিবাবু। আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এক সময়ে মুখ হয়ে উঠলেও এখন তিনি রাজনৈতিক সন্ন্যাসে। করোনার জেরে সামাজিক অনুষ্ঠানের ধরনে যে বদল আনতে হয়েছে, সেই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে সিপিএম আসলে জ্যোতিবাবুর স্মৃতিকে উস্কে দিয়ে মানুষের মন টানতে চাইছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক শিবিরের অনেকে। রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ এবং বিশেষত বিজেপির মোকাবিলার সময়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা সামনে রাখার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করছেন না সিপিএম নেতৃত্বও। জ্যোতিবাবুর স্মৃতির সূত্রে সাধারণ মানুষকে জড়িয়ে নিয়ে এগোতে চাইছেন তাঁরা।

এ বার ৮ তারিখ সন্ধ্যায় ‘জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশ্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ’-এর আয়োজনে জ্যোতিবাবুর নামে স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার কথা সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির। রাজ্য দলের ফেসবুক পেজ থেকেই তা সম্প্রচার করা হবে। তার পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর এবং ই-মেল আইডি দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জ্যোতিবাবু সম্পর্কে ছবি, ভিডিয়ো চাওয়া হচ্ছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে ডিজিটাল মাধ্যম দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিয় পাত্রের কথায়, ‘‘প্রতি বছর নানা অনুষ্ঠান হয়।। এ বার আমাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ, তথ্য ভাগ করে নেওয়া আরও বাড়াতে চাইছি। উৎসাহী মানুষের কাছ থেকে যা পাওয়া যাবে, সেগুলো আমরা তুলে ধরব। কারও কাছে তেমন কোনও ছবি (আলোকচিত্র) থাকলে তা-ও আমরা দিতে বলছি।’’ অমিয়বাবুর মতে, বাংলা ও দেশের রাজনীতিতে জ্যোতিবাবুর ভূমিকার তাৎপর্য এখন প্রতিনিয়তই বোঝা যাচ্ছে। সেই পথ ধরেই তাঁরা পরিকল্পনা নিয়েছেন।

দুষ্প্রাপ্য কোনও রাজনৈতিক ছবি পেলে সংগ্রহকারীর সম্মতি নিয়েই তা দেখানো এবং আর্কাইভে রাখা হবে বলে সিপিএম সূত্রের বক্তব্য। এ সবই আধুনিক যুগের পদক্ষেপ হিসেবেই ধরছেন বিমান বসুর মতো প্রবীণ নেতারাও। অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টিতে তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক জ্যোতিবাবুর সই করা ‘রেড কার্ড’ নিয়ে দলীয় সদস্য হয়েছিলেন বিমানবাবু। জ্যোতিবাবুকে নিয়ে বাম রাজনীতিতে আলাদা আবেগ আছে বলে তাঁরা মনে করেন। বিমানবাবু বলছেন, ‘‘আমরা পালন করি কাকাবাবুর জন্মদিনটাই। কিন্তু জ্যোতিবাবুর জন্মদিনে নানা সামাজিক অনুষ্ঠান হয়। প্রমোদ দাশগুপ্ত মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এ বারও কলকাতায় রক্তদানের আয়োজন করবে। আমিও যেতে চাই সেখানে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jyoti Basu CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE