Advertisement
E-Paper

ওটা ‘ঐতিহাসিক আত্মহত্যা’ ছিল, বললেন আজকের মুখ্যমন্ত্রী

সিঙ্গুরের যে জমি আন্দোলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মহাকরণে পৌঁছনোর ভিত গড়ে দিয়েছিল, সেই সিঙ্গুর নিয়ে এ বার আদালতে বিরাট জয় পেলেন তৃণমূল নেত্রী। যাকে তিনি ঐতিহাসিক জয় হিসেবেই দেখছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ১৭:৪৯

সিঙ্গুরের যে জমি আন্দোলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মহাকরণে পৌঁছনোর ভিত গড়ে দিয়েছিল, সেই সিঙ্গুর নিয়ে এ বার আদালতে বিরাট জয় পেলেন তৃণমূল নেত্রী। যাকে তিনি ঐতিহাসিক জয় হিসেবেই দেখছেন।

বুধবার এক রায়ে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ২০০৬ সালে সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ অবৈধ ছিল। এর পরেই নবান্নে মমতা বলেন, ‘‘এর জন্য গত ১০ বছর ধরে অপেক্ষা করছি। এই জয় চোখের জল মেশানো। এখন আমি শান্তিতে মরতে পারি।’’ এর পরেই তিনি জানিয়ে দেন, ঐতিহাসিক এই রায়কে সম্মান জানাতে গোটা রাজ্য জুড়ে আগামী শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর ‘সিঙ্গুর উত্সব’ পালন করা হবে।

২০০৬ সালে ফের ক্ষমতায় এসেই তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন। টাটা গোষ্ঠীর ওই প্রকল্পের জন্য এর পরই জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এর পরেই আন্দোলনে নামেন তত্কালীন বিরোধী দলের প্রধান মমতা। এমনকী, তিনি ওই সময় ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ২৬ দিন অনশনে বসেছিলেন। এ দিন সে কথার উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘কৃষক আন্দোলনের ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে এই সিঙ্গুর পর্ব।’’ বিগত সরকারের আমলে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া ভুল ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন। মমতা বলেন, ‘‘সে দিনের সরকারি সিদ্ধান্ত একটি ঐতিহাসিক আত্মহত্যা ছিল।’’

সম্প্রতি বিধানসভায় রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাব সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছে। এমন একটা সময়ে ‘বাংলা মায়ের আঁচলে’ এই ‘সম্পদ’ আসায় স্বভাবতই খুশি হয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। এখনও রায় হাতে পাইনি। শুনেছি ১২ সপ্তাহের মধ্যে জমি ফেরত দিতে বলা হয়েছে।’’ আগামী কাল দুপুরে এই নিয়ে নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছেন তিনি। আদালতের রায় কোন পদ্ধতিতে মানা হবে, তা নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হবে। এর পর ইউরোপ সফর থেকে ফিরে এসে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পরবর্তী প্রশাসনিক বৈঠক সিঙ্গুরেই করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এর পাশাপাশি আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সেখানে বিজয় দিবস পালন করা হবে।

রায় প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় খুন হওয়া তাপসী মালিকের উল্লেখ করেন। শুধু তাপসী নয়, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম-নেতাইয়ের শহিদদের কথাও স্মরণ করেছেন তিনি। বেঁচে থাকলে এই রায়ের কথা জেনে মহাশ্বেতা দেবী সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। আন্দোলনের দিনগুলোর কথা বলতে গিয়ে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘সিঙ্গুর আন্দোলন থেকে মা-মাটি-মানুষ স্লোগান নিয়ে এসেছিলাম।’’ মমতা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, এই রায়ের পর সিঙ্গুরে কারখানার প্রশ্নই ওঠে না। একটা পদ্ধতি মেনেই চাষিদের জমি ফেরত দেওয়া হবে। সে কথা সবাইকে জানিয়েও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মমতার মতে, আগামী দিনে এ রাজ্যই বিনিয়োগের প্রধান জায়গা হয়ে উঠবে। গোটা দেশে কোথাও বিনিয়োগ হচ্ছে না বলে এ দিন মন্তব্য করেন, ‘‘বেঙ্গল ইজ দ্য ফাইনাল ডেস্টিনেশন ফর ইন্ডাস্ট্রি।’’ তাঁর মতে, সিঙ্গুর একটা ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পরিগণিত হবে। সেখানে নন্দীগ্রাম থাকবে। থাকবে নেতাইয়ের নামও।

আরও পড়ুন, বুদ্ধের সিঙ্গুর অধিগ্রহণ অবৈধ ছিল, সুপ্রিম রায়ে মমতার ঐতিহাসিক জয়

Mamata Banerjee Singur CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy