Advertisement
০৫ মে ২০২৪
CPM

অচলায়তন ভেঙেছে, সমাজমাধ্যমে দৌড়চ্ছে সিপিএম

সিপিএম থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০২৩-এর শেষে দলের রাজ্য কমিটির ফেসবুক পেজের অনুসরণকারীর সংখ্যা হয়েছে চার লক্ষ ৫২ হাজার। যা ২০১৯-এ ছিল মাত্র তিন লক্ষ এক হাজার।

cpm.

—প্রতীকী ছবি।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৪৬
Share: Save:

সমাজমাধ্যম দরজা খুলে দিলেও তাকে প্রচারে ব্যবহারের খুব একটা আগ্রহ আগে দেখায়নি সিপিএম। দলে বৃদ্ধতন্ত্রের ভিত কিছুটা নড়ে যেতেই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। গত ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সমাজমাধ্যমে তুমুল আলোড়ন ফেলে ‘টুম্পা সোনা’ প্যারোডি। ঘটনাচক্রে তার পরে, গত চার বছরে বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে সিপিএমের অনুসরণকারীর (ফলোয়ার) সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এর কৃতিত্ব দলের তরুণ প্রজন্মকেই দিচ্ছেন প্রবীণেরা।

সিপিএম থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০২৩-এর শেষে দলের রাজ্য কমিটির ফেসবুক পেজের অনুসরণকারীর সংখ্যা হয়েছে চার লক্ষ ৫২ হাজার। যা ২০১৯-এ ছিল মাত্র তিন লক্ষ এক হাজার। অর্থাৎ, চার বছরে অনুসরণকারী বেড়েছে দেড় লক্ষের বেশি। শুধু ২০২৩-এ ফলোয়ার বেড়েছে ৫০ হাজার। তেমনই, এই সময় কালে রাজ্য সিপিএমের ইউটিউব চ্যানেলের অনুসরণকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দু’লক্ষ ৩১ হাজার। এখন রাজ্য কমিটির এক্স হ্যান্ড্‌ল (পূর্বতন টুইটার) নিয়মিত দেখেন এক লক্ষ ৫৭ হাজার ব্যক্তি। এই মাধ্যমে চার বছরে অনুসরণকারী বেড়েছে ৯৫ হাজার। ২০২৩-এর শেষে রাজ্য সিপিএমের ইনস্টাগ্রাম পেজের অনুসরণকারী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার। যা ২০১৯-এ ছিল মাত্র সাড়ে ৮ হাজার। গত বছর এই মাধ্যমে অনুসরণকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজারের বেশি। এখন সিপিএমের রাজ্য কমিটির টেলিগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল খোলা হয়েছে। দলীয় মুখপত্রও সমাজমাধ্যমে এসেছে নতুন আঙ্গিকে।

দলের রাজ্য কমিটির সমাজমাধ্যম শাখার দায়িত্বে রয়েছেন খোদ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমের গুরুত্ব বুঝতে আমাদের একটু দেরি হয়েছে ঠিকই। তবে এখন সমাজমাধ্যমে প্রচারের দৌড়ে তৃণমূল বা বিজেপির সঙ্গে আমাদের দূরত্ব প্রায় ঘুচে গিয়েছে।’’ একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে যতই এগোই না কেন, ময়দানের লড়াইটাই মূল। সেখানে আরও এগোতে হবে। সেই কাজেও যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, তা প্রমাণ করেছে ইনসাফ যাত্রার ব্রিগেডের মেজাজ।’’

গত বছর রাজ্য সিপিএমের ইউটিউব চ্যানেলে ৩৫৬১টি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছিল। সেগুলি দেখেছেন তিন কোটি ২০ লক্ষের বেশি দর্শক। ইনস্টাগ্রামে এক হাজারের বেশি ‘রিল’ দেখানো হয়েছে। দেখেছেন দু’কোটি ২০ লক্ষ মানুষ। গত বছর সিপিএম রাজ্য কমিটির ‘এক্স হ্যান্ড্‌ল’ থেকে ২২৪১টি পোস্ট হয়েছে। এখন প্রত্যেক জেলায় সমাজমাধ্যম শাখা রয়েছে সিপিএমের। বর্ধমান, বাঁকুড়ার মতো দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার শাখা খুব ভাল কাজ করছে। সদস্য-সংখ্যা বাড়ায় রাজ্য শাখাকে ভাঙার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে সিপিএম সূত্রে খবর।

এক তরুণ সিপিএম নেতার বক্তব্য, ‘‘সমাজমাধ্যম সম্পর্কে দলের রাজ্য নেতৃত্বের মনোভাব বদলেছে বলেই এই কাজের পরিকাঠামো বাড়ানো গিয়েছে। যার ফলে সমাজমাধ্যমে রাজ্য সিপিএমের অনুসরণকারীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।’’ দলের এক রাজ্য কমিটির সদস্যের ব্যাখ্যা, ‘‘রাজ্য ও জেলায় সমাজমাধ্যম শাখা চালান স্বেচ্ছাসেবকেরা। তবে তাঁদের পেশাগত দক্ষতা রয়েছে। প্রসঙ্গ নির্বাচন এবং উপস্থাপনায় তার প্রতিফলন ঘটে। এটিও সমাজমাধ্যমে আমাদের উপস্থিতি বাড়ার অন্যতম কারণ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM Social Media West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE