Advertisement
২১ মে ২০২৪
CPM

উদ্বাস্তু ‘জমি’ ফেরাতে ফের তৎপরতা সিপিএমে

দলের উদ্বাস্তু সংগঠনকে ময়দানে নামিয়ে ওই অংশের মানুষের দাবি-দাওয়া ও সমস্যা নিয়ে সরব হতে শুরু করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, উদ্বাস্তুদের আবার তাঁদের বসবাসের জায়গা থেকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।

cpm.

—প্রতীকী ছবি।

 সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:২৩
Share: Save:

দীর্ঘ সময় ধরে উদ্বাস্তু কলোনি ছিল বামেদের শক্ত ঘাঁটি। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সে সব এলাকাতেও কালক্রমে বামেদের প্রভাব ক্ষয়ে গিয়েছে। উদ্ভূত কিছু পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ফের উদ্বাস্তু আন্দোলনে গতি আনতে সক্রিয় হয়েছে সিপিএম। মতুয়া-সহ উদ্বাস্তুদের বড় অংশের সমর্থন বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে যে ভাগ হয়ে গিয়েছে, সেখানে লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আবার কিছুটা জমি উদ্ধার করাই সিপিএমের অন্যতম লক্ষ্য বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।

দলের উদ্বাস্তু সংগঠনকে ময়দানে নামিয়ে ওই অংশের মানুষের দাবি-দাওয়া ও সমস্যা নিয়ে সরব হতে শুরু করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, উদ্বাস্তুদের আবার তাঁদের বসবাসের জায়গা থেকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ৮টি এলাকা থেকে এমন অভিযোগ সিপিএম নেতৃত্বের কাছে এসেছে। বহু ক্ষেত্রেই উদ্বাস্তু অংশের মানুষ যেখানে থাকেন, সেই জমির মালিকানা তাঁদের নয়। কোথাও জমির মূল মালিক রেল, কোথাও আবার অন্যান্য সরকারি সংস্থা। এখন কোথাও রেল, কোথাও পুরসভার তরফে ওই ধরনের জমি ‘দখলমুক্ত’ করার প্রক্রিয়া শুরু হতেই নতুন করে আশঙ্কায় ভুগছেন উদ্বাস্তুরা। এই পরিস্থিতিতে ওই অংশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের জমি ফেরানোর চেষ্টাও করছে সিপিএম।

উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে নিয়ে শিলিগুড়িতে উদ্বাস্তু কনভেনশন করেছে সিপিএম। দলের তরফে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যেরা সেখানে ছিলেন। সিপিএম সূত্রের খবর, এর পরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিকে নিয়ে উদ্বাস্তু সম্মেলন ডাকা হয়েছে পানিহাটিতে আগামী ২৩-২৪ ডিসেম্বর। সম্মেলন শেষে ২৪ তারিখ হবে সমাবেশও। দক্ষিণবঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়ার মতো জেলায় উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এর পাশাপাশিই আছেন মতুয়ারা।

অসমে নাগরিকত্বের প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে, তা-ও সিপিএমের ‘সক্রিয়তা’ বাড়ানোর কারণ হয়েছে। নাগরিকত্ব আইনের পুরনো ৬এ ধারা তুলে দেওয়া হলে ১৯৭১ সালের নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত যাঁরা অসমে এসেছেন, তাঁদের নাগরিকত্বের দাবি বিপন্ন হবে এবং তার প্রভাব অন্যত্রও পড়বে বলে সিপিএমের আশঙ্কা। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘ধর্মীয় কোনও বিভাজন না রেখে নাগরিকত্বের আবেদন করার সময়সীমা (কাট-অফ ডেট) আমরা আরও এগিয়ে আনার পক্ষপাতী। বিজেপি সরকার এখন সব রকম ভাবেই উল্টো দিকে হাঁটছে। এই প্রেক্ষিতে নাগরিকত্ব নিয়ে আন্দোলনকেও ধারালো করতে হবে আমাদের।’’

রাজ্যে গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের পাশাপাশি উদ্বাস্ত অধ্যুষিত এলাকায় ভাল ফল করেছিল বিজেপি। এখন কি সিপিএম কোথাও চাকা ঘোরানোর কোনও ইঙ্গিত পাচ্ছে? দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘তাঁদের দাবি বা সমস্যার সমাধান যে হচ্ছে না, এটা উদ্বাস্তু বা মতুয়াদের অনেকেই বুঝতে পারছেন। কিন্তু বামেদের শক্তি কমে গিয়েছে বলে আমাদের উপরে খুব ভরসাও রাখতে পারছেন না। মানুষের আস্থা অর্জনের জায়গায় আমাদের পৌঁছতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE