—ফাইল চিত্র।
ধর্মঘটের সমর্থনে কোথায় কেমন মিছিল হল? কত মানুষ নামলেন পথে? কোথায় পুলিশ বা শাসক দল কী ভাবে বাধা দিল? কেন্দ্রীয় নানা ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে রাজ্যের সব জেলা থেকে এ বার প্রায় নিমেষে এমন তথ্য এবং ছবি পাঠিয়ে দিলেন সিপিএমের কর্মীরা। দলের ইউনিট ঘুরে সে সব দ্রুত উঠে গেল সামাজিক মাধ্যমে।
এটা একটা টাটকা উদাহরণ মাত্র। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহারের কৌশল এখন দলের সর্ব স্তরে শেখাতে বিশেষ নজর দিচ্ছে সিপিএম। সেই তৎপরতারই ‘সুফল’ মিলেছে সিঙ্গুর থেকে রাজভবন পদযাত্রা এবং তার পরে সাধারণ ধর্মঘটের সময়ে। এ বার দলের কোথায় কত কর্মীর হাতে কত স্মার্টফোন আছে, তাঁদের ফোন নম্বর এবং হোয়াটস্অ্যাপ নম্বরের তালিকা সংগ্রহের কাজে হাত দিয়েছে আলিমুদ্দিন। এই মাসেই ডাকা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যম নিয়ে বিশেষ কর্মশালা। উদ্দেশ্য একটাই— ব্যস্ততার কারণে বা ‘পরিস্থিতির চাপে’ হাটে-বাজারে সভা-সমাবেশ করে দলের কথা যতটুকু মানুষের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে, স্মার্টফোনকে কাজে লাগিয়ে তার চেয়ে কম সময়ে অনেক বেশি মানুষের নাগাল পাওয়া।
স্মার্টফোনে এবং সামাজিক মাধ্যমে কী বক্তব্য তুলে ধরতে হবে, তার কিছু উপকরণ রাজ্য সিপিএমই তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার জেলা, এলাকা এবং সংগঠন ধরে ধরে তাদের বক্তব্যও চাওয়া হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যম সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘এক দিকে উপর থেকে আমরা বোঝাচ্ছি, আজকের দিনে সামাজিক মাধ্যম কেন অপরিহার্য। আবার তার পাশাপাশি কর্মীরা নিজেরা বুঝতে পারছেন, সংবাদমাধ্যম কতটা কী দেখাবে বা প্রচার করবে, তার ভরসায় থেকে লাভ নেই। দলের নির্দেশ এবং নিজেদের উপলব্ধি— এই দুই কারণেই কর্মীরা এখন সামাজিক মাধ্যমে অনেক বেশি সক্রিয় হচ্ছেন।’’
জাতীয় স্তরে কংগ্রেস, বিজেপি বা রাজ্য স্তরে তৃণমূল তাদের সামাজিক মাধ্যম ইউনিটের জন্য পেশাদারদের সাহায্য নিচ্ছে। সিপিএম কিন্তু পেশাদারদের এই দায়িত্ব দেয়নি। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের ব্যাখ্যা, ‘‘তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ আমরা নিচ্ছি ঠিকই। কিন্তু কাজটা নিজেদের কর্মীদের নিয়ে গড়া ‘টিমে’র হাতেই রাখছি। কারণ, গোটা মোড়কটার মধ্যে কৃত্রিমতার ছাপ রাখতে চাইছি না।’’ স্মার্টফোন মারফত দলের কর্মসূচি যেমন দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে, তেমনই কর্মীদের সক্রিয়তার আন্দাজও পাচ্ছেন নেতারা।
আলিমুদ্দিনের তরফে জেলায় জেলায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শুধু কোনও ঘটনার ‘প্রতিক্রিয়া’ দেখালে হবে না। বিভিন্ন এলাকায় মানুষের কী সমস্যা, কোন বিষয় ঘিরে মানুষের ক্ষোভ ধূমায়িত হচ্ছে, তার হদিশ তুলে আনতে হবে স্মার্টফোনের দৌলতে। এই সূত্র মেনেই ব্রিগে়ড সমাবেশের জন্য জনতার কাছেও চাওয়া হয়েছে কবিতা, স্লোগান বা গ্রাফিক্স। যে উদ্যোগের নামকরণ হয়েছে ‘পিপল্স ব্রিগেড’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy