Advertisement
E-Paper

বাসস্ট্যান্ডেই মেয়ের বিয়ে দিলেন ঘরছাড়া বাম কর্মী

তৃণমূলের ‘ভয়ে’ বাড়ি থেকে মেয়ের বিয়ে দিতে না পারার অভিযোগ তুললেন মঙ্গলকোটের গ্রামছাড়া এক সিপিএম কর্মী। বক্সিনগরের বাসিন্দা শেখ তাহের আলি নামে ওই কর্মীর অভিযোগ, ‘‘চার বছর আগে গ্রাম ছেড়েছি। এখন শ্বশুরবাড়িতে থাকি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:১৮
কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে চলছে বিয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে চলছে বিয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের ‘ভয়ে’ বাড়ি থেকে মেয়ের বিয়ে দিতে না পারার অভিযোগ তুললেন মঙ্গলকোটের গ্রামছাড়া এক সিপিএম কর্মী। বক্সিনগরের বাসিন্দা শেখ তাহের আলি নামে ওই কর্মীর অভিযোগ, ‘‘চার বছর আগে গ্রাম ছেড়েছি। এখন শ্বশুরবাড়িতে থাকি। সেখানেও মেয়ের বিয়ে বিয়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।’’ ফলে সোমবার বাধ্য হয়ে কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডের ভিতর সিটু অফিস লাগোয়া এক চিলতে জায়গায় ত্রিপল খাটিয়ে মেয়ের বিয়ে দেন তিনি। যদিও তৃণমূলের দাবি, খবরে আসার জন্য মেয়ের বিয়ে নিয়েও নাটক করছে সিপিএম।

এ দিন কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে বছর কুড়ির আনিশা খাতুনের সঙ্গে কেতুগ্রামের ভোমরকোলের শাহিদুল্লা শেখের বিয়ে হয়। শাহিদুল্লা নাগপুরের একটি রুটির কারখানায় কাজ করেন। বিয়ে উপলক্ষ্যে ২৫ জন বরযাত্রী-সহ ১০০ জনের পাতও পড়ে বাসস্ট্যান্ডের ভিতর এক চিলতে জায়গায়। সেখানে দাঁড়িয়ে ওই সিপিএম কর্মীর পরিজন রবিউল শেখ জানান, মাস দেড়েক আগে বিয়ে ঠিক হয়েছে। তারপরেই বক্সিনগর গ্রামের বাসিন্দা ও পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে, গ্রাম থেকেই বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা জানানো হয়। কিন্তু সেখানকার বাসিন্দারা জানান, তাঁরা বিয়ের দিন বা পরে কোনও নিরাপত্তা দিতে পারবেন না। ঝুঁকি নিয়ে গ্রামের ভিতর বিয়ে না দেওয়ার জন্যেও বলেন। আর এক আত্মীয় হেকমত আলিরও দাবি, “এরপরে আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে গিয়ে মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানাই। তাঁরা আমাদের মঙ্গলকোট থানায় যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু পুলিশের কাছে গিয়ে কোনও সাহায্য পাব না জেনে আর যাইনি।’’

শেখ তাহের আলির অভিযোগ, ২০১১ সালের ১৩ মে’র পর থেকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে তাঁকে। তারপর থেকে এক দিনের জন্যেও বাড়ি যাননি। সিপিএম সমর্থক বলেই গ্রামের লোকেরা বাড়ি থেকে মেয়ের বিয়ে দিতে দিল না বলেও তাঁর অভিযোগ। সিপিএমের মঙ্গলকোটের বিধায়ক শাহজাহান চৌধুরীও বলেন, “মঙ্গলকোট ও বক্সিনগরের ৪০ জন গ্রাম ছাড়া রয়েছে। তাঁদের ঘরে ঢোকানোর জন্য বারেবারে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।” সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য সৈয়দ বদরুদ্দোজ্জা বলেন, “এই একটা ঘটনা বলে দিচ্ছে তৃণমূল কতটা অমানবিক ও এলাকায় কী ভাবে সন্ত্রাস কায়েম করে রেখেছে।”

যদিও এই সব অভিযোগ মানতে নারাজ মঙ্গলকোটের উপপ্রধান শান্ত সরকার। তিনি বলেন, “ওই পরিবারের সবাই গ্রামে রয়েছে। উনি কেন গ্রামে নেই সে কথা বলতে পারব না। তবে, মেয়ের বিয়ে দেওয়া নিয়ে সিপিএম যা করল, তাতে গ্রামবাসীদের অপমান করা হল।” গ্রামছাড়া প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “গ্রেফতারি পরোয়ানা বা পুলিশের কাছে অভিযোগ থাকলে তাঁরা তো গ্রামে এমনিতেই থাকবেন না। তবে গ্রামছাড়াদের বিষয়টি আবার দেখে ব্যবস্থা নেব।”

state news marriage daughter marriage bus stop
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy