ভোট-মুখী বাংলায় ‘আমার পাড়া, আমার সমাধান’ নামে প্রকল্প শুরুর ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্পের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। সরকারি অর্থে ঘুরপথে শাসক দলের নির্বাচনী প্রচার নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাল্টা প্রচারে নামছে সিপিএম। রাজ্যে আগামী ২৫ জুলাই থেকে ১০ দিন ওই সরকারি প্রকল্প সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন নিয়ে পথে নামবে তারা।
সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের আলোচনায় উঠে এসেছে, তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের এই ধরনের জনসংযোগ প্রকল্প একাধারে শাসক দলের প্রচারের কাজে লাগছে। তার পাশাপাশি সাংবিধানিক ব্যবস্থারও পরিপন্থী হচ্ছে। পঞ্চায়েত বা পুরসভার মতো স্থানীয় প্রশাসনের কাছে মানুষের যে পরিষেবা পাওয়ার কথা, তা পেতে ‘দুয়ারে সরকারে’র শিবিরে নাম লেখাতে হচ্ছে। এরই পথ ধরে আসছে ‘আমার পাড়া, আমার সমাধান’। যেখানে আবার ভোটের আগে বুথ ধরে খরচ ধার্য করা হচ্ছে। অথচ সরকারের সর্বনিম্ন স্তর বুথ নয়, সেটা নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন। সরকারের কাজের জন্য নীচের দিকে আছে পঞ্চায়েত এবং পুরসভা। কাজের জন্য জবাবদিহির ‘দায়‘ও তাদের আছে। সিপিএমের মতে, এই গোটা বিষয়টাকেই উপেক্ষা করে সরকার ভোটের প্রচারে। এই যাবতীয় প্রশ্ন সম্পর্কেই মানুষকে ‘অবহিত’ করতে চায় তারা।
সরকারের নতুন প্রকল্পের প্রেক্ষিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘মানুষ ‘বাংলার নিজের মেয়েকেই’ দায়িত্ব দিয়ে বুঝে গিয়েছেন, মেয়েদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত। ‘দিদিকে বলো’ ব্যর্থ। ‘দুয়ারে সরকার’, ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’ দিয়ে হল না, আবার একটা প্রকল্প। বাজেটে কোনও সংস্থান ছাড়া ৮ হাজার কোটি টাকা কোথা থেকে আসবে? রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে তো টাকা চাইতে হচ্ছে বারবার। এটা সংবিধান-বিরোধী মনোভাব থেকে, সরকারি টাকায় তৃণমূলকে পোষার প্রকল্প!’’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের অবশ্য জবাব, ‘‘সময়ের সঙ্গে এই রকম প্রকল্পের মাধ্যমে পরিষেবাকে নিশ্চিত করা তো ইতিবাচক। এতে সিপিএমের জ্বলন হতে পারে কিন্তু মানুষের উপকার হয়!’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)