Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সাইকেলের চাকার জোরেই দেশ সফরে দেবেন্দ্র

আগামী রবিবার ডেবরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সফর শুরু করবেন তিনি।

সিটবিহীন সাইকেলে দেবেন্দ্রনাথ বেরা। —নিজস্ব চিত্র।

সিটবিহীন সাইকেলে দেবেন্দ্রনাথ বেরা। —নিজস্ব চিত্র।

দেবমাল্য বাগচী
সবং শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮ ০০:১৫
Share: Save:

চেন নেই, ব্রেক নেই, নেই কোনও সিটও। হাত ও পা দিয়ে সাইকেলের চাকা ঘুরিয়েই দেশ ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন ১৯৯৪ সালে। তারপর থেকে প্রায় ২৪ বছর কেটে গেলেও সাইকেলের চাকা আর ঘোরেনি। এ বার স্বচ্ছ ভারত অভিযানের বার্তা দিয়ে ফের ভারত ভ্রমণে বেরচ্ছেন সবংয়ের সাইক্লিস্ট দেবেন্দ্রনাথ বেরা। আগামী রবিবার ডেবরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সফর শুরু করবেন তিনি।

পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনার সময়ই সাইকেল শিক্ষায় হাতেখড়ি সবং ব্লকের সার্তা পঞ্চায়েতের সাতসাঁই গ্রামের বাসিন্দা দেবেন্দ্রবাবুর। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের বাসিন্দা মহম্মদ নজরুল ইসলামের ব্রেক-চেনহীন সাইকেল নিয়ে নানা কলাকৌশল আকৃষ্ট করে তাঁকে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় একদিন নিজেই সাইকেলের ব্রেক, চেন, সিট, ফ্রি-গিয়ার খুলে ফেলেন দেবেন্দ্রবাবু। নজরুল ইসলামই হয়ে ওঠেন তাঁর গুরু। সেই শুরু। তারপর থেকে দিনে দিনে তিনি সিট, ব্রেক, চেনহীন সাইকেলের হাতলে ভর দিয়ে এগিয়ে চলার কৌশল রপ্ত করে ফেলেন।

শুধু সাইকেল নয়, চুলে কাছি বেঁধে যাত্রীবোঝাই বাস টানা, বুকের ওপর দিয়ে গাড়ি পার করা-সহ নানা কৌশল দেখিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। তবে সাইকেল সফর শুরু ১৯৯০ সালে। সেবার ক্ষুদিরামের জন্মশতবর্ষে সাক্ষরতার বার্তা নিয়ে অবিভক্ত মেদিনীপুর পরিভ্রমণ করেন। একই বার্তা নিয়ে ১৯৯২ সালে রাজ্যের ১৭টি জেলা সফর করেন। ১৯৯৪ সালে শেষবার ভারত সফরে বেরিয়ে জাতীয় সংহতির বার্তা নিয়ে ছ’মাস ধরে সাড়ে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার সফর করেন। সবংয়ের কয়েকজন শিক্ষকের উৎসাহে ফের বেরচ্ছেন দেশ ভ্রমণে। সবংয়ের স্কুল শিক্ষক শান্তনু অধিকারী বলছিলেন, “শুধু প্রতিভা নয়, এভাবে কোনও সাইকেলে চেন, ব্রেক, সিট ছাড়া হাজার-হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করা কঠিন ব্যপার। তাই ওকে উৎসাহ দিয়েছি।” এ বারের সফরে দেবেন্দ্রবাবুর সঙ্গী হচ্ছেন সাতসাঁইয়ের বাসিন্দা আকাশ করণ। আকাশবাবু অবশ্য সাধারণ সাইকেলে একই পথ পাড়ি দেবেন। দেবেন্দ্রবাবু বলেন, “আমি অর্থ চাই না। কিন্তু রেকর্ড গড়তে চাই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আগে সাড়ে ১১ হাজার কিলোমিটার পথ সাইকেলে সফর করার পরেও যখন গিনেস রেকর্ডে জায়গা পাইনি, তখন উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। সিট, ব্রেক, চেন, ফ্রি-গিয়ার ছাড়া সাইকেলে শত-শত যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাওয়া কতটা কঠিন তা হয়তো কেউ বোঝেন না। এ বার দেখা যাক!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE