Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone

বুধবার ভোরে ‘আমপান’ স্থলভূমিতে ঢুকতে পারে, বঙ্গে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ৭০ শতাংশ

আমফানের নামকরণ করেছে তাইল্যান্ড। এই নামের সঙ্গে সঙ্গে উত্তর ভারতীয় মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম-তালিকার প্রথম পর্ব শেষ হল।

ছবি: শাটারস্টক।

ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২০ ০৫:০৩
Share: Save:

করোনাভাইরাসের হামলায় এমনিতেই ‘জর্জরিত’ রাজ্য। উপরি উদ্বেগ বাড়িয়ে রাজ্যে আছড়ে পড়ার হুমকি দিচ্ছে সাগরের ‘অতিথি’। মৌসম ভবন জানিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে ‘আমফান’। তার সম্ভাব্য অভিমুখ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন ওড়িশার দিকে। আগামী ২০ মে ভোরে ঝড়টি স্থলভূমিতে প্রবেশ করতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস এ দিন জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী মঙ্গলবার থেকেই উপকূলীয় জেলাগুলিতে বৃষ্টি হতে পারে। বুধবার গাঙ্গেয় বঙ্গের প্রায় সব জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা।

আমফানের নামকরণ করেছে তাইল্যান্ড। এই নামের সঙ্গে সঙ্গে উত্তর ভারতীয় মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম-তালিকার প্রথম পর্ব শেষ হল। ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় তালিকাও প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা পেয়েই বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে রাজ্য। ভিডিয়ো কনফারেন্সে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছেন কেন্দ্রের ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। রাজ্যের পাশাপাশি উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। কেন্দ্রের তরফে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখছে বলে খবর।

আরও পড়ুন: ‘জানি না, গণেশের কী হয়েছে’, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রাকের যাত্রী

আরও পড়ুন: ইউরোপীয় যোগ থেকেই রাজ্যে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখন সমুদ্রে গিয়ে মাছ ধরা বন্ধ। বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র এবং ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলিকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। সেখানেও সামাজিক দূরত্ব-সহ করোনা বিধি মানা হবে। জাতীয় এবং রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। এ দিন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব-সহ পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন।

পূর্বাভাস, দিঘা ও মন্দারমণির কাছাকাছি ঝড় আছড়ে পড়তে পারে। তবে অনেক সময় ঝড়ের অভিমুখ বদলেও যায়। তবে তারও একটি নির্দিষ্ট এলাকা থাকে। এক আবহবিজ্ঞানীর মতে, এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে আমফানের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ৭০ শতাংশ। পথ বদলে তার ওড়িশায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ। গত বছর মে মাসে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণীর দাপটে লন্ডভন্ড হয়েছিল ওড়িশা। পশ্চিমবঙ্গে তেমন ক্ষতি হয়নি। ডিসেম্বরে আবার প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এ রাজ্যের উপকূলীয় জেলাগুলি। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘ঘূর্ণিঝড় ওড়িশায় গেলে বাংলা রেহাই পাবে। সোজাসুজি আছড়ে পড়লে বুলবুলের মতো পরিস্থিতি হতে পারে।’’

ঘূর্ণিঝড় আমফান-এর গতিপথ

আবহবিদেরা জানান, ঘূর্ণিঝড় তৈরির অন্যতম শর্ত, সাগরের জলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হতে হবে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের জলের তাপমাত্রা বর্তমানে ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রয়েছে। দীর্ঘ পথ পেরোনোর সময় জলীয় বাষ্প শুষে আমফান আরও শক্তি বাড়াবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Cyclone Amphan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE