Advertisement
E-Paper

রাজ্যে আমপানে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি, কেন্দ্রীয় দলকে হিসাব নবান্নের

নবান্নের তরফে স্পষ্টই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ ১ হাজার কোটি টাকা আমপানে সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় নগন্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২০ ১৯:৪৫
শুরু থেকেই নবান্নের তরফে জানানো হয়েছিল, আমপানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের। কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে দুই ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: এপি।

শুরু থেকেই নবান্নের তরফে জানানো হয়েছিল, আমপানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের। কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে দুই ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: এপি।

আমপান (প্রকৃত উচ্চারণে উম পুন) বিধ্বস্ত উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনা গত দু’দিন ধরে সাত সদস্যের কেন্দ্রীয় আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করে। ২ দিনের সেই সফর শেষে শনিবার বিকেলে নবান্নে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে দেখা করে তারা। আমপানে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে কেন্দ্রীয় দলের কাছে প্রায় ১ লাখ আড়াই হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পেশ করল নবান্ন।

আমপান পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আকাশপথে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। সেই সময় তিনি রাজ্যের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল বরাদ্দ করেন। শুরু থেকেই নবান্নের তরফে জানানো হয়েছিল, আমপানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের। কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে দুই ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। নবান্নের তরফে স্পষ্টই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ ১ হাজার কোটি টাকা সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় নগন্য। এর পরেই কেন্দ্রীয় দল আসে রাজ্যে। সাত সদস্যের আন্তঃমন্ত্রক ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব অনুজ শর্মা। এ ছাড়াও ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের অধিকর্তা নরেন্দ্র কুমার। দলে মৎস্য চাষ দফতর, শক্তি মন্ত্রক এবং পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।

নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, আমপানের জেরে রাজ্যে ২৮ লাখ ৫৬ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ বা আংশিক ভাবে ধ্বংস হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৮ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ ১৫ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। ১৭ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান, মুগ, তিল, পাট, বাদাম, আখ, ভুট্টা এবং তুলোর চাষ নষ্ট হয়েছে। পানের বরোজ, আম-লিচুর বাগান এবং ফসল নষ্ট হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ৫৫৬ হেক্টর জমিতে। ক্ষতির আর্থিক মূল্য প্রায় ৬ হাজার ৫৮১ কোটি টাকার। মৎস্যজীবীদের প্রায় ৮ হাজার মাছ ধরার নৌকো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে তাঁদের ১ লাখ ৪৮ হাজার কুঁড়ে ঘর। ওই ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: ২০০ শয্যার কোভিড হাসপাতাল হচ্ছে পানিহাটির সাগরদত্ত মেডিক্যাল

নবান্নের পেশ করা রিপোর্টেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজ্যে প্রায় ২১ লাখ ২২ হাজার গবাদি পশু মারা গিয়েছে। হয় ঝড়ে বা জলের স্রোতে ভেসে মারা গিয়েছে, নয়তো পরবর্তীতে মারা গিয়েছে। আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৬৪০টি স্কুল এবং ৩০১টি কলেজ-সহ ১২ হাজার ৬৭৮টি আইসিডিএস শিক্ষাকেন্দ্র। নদী বাঁধ ভেঙেছে প্রায় ২৪৫ কিলোমিটার এবং প্রায় ৪ কিলোমিটার সমুদ্র বাঁধ।

আরও পড়ুন: ‘থাকব বললেই কি থাকা যায়?’ প্রশ্ন পরিযায়ীদের

নবান্নের পেশ করা রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যের প্রায় ১ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমির বনভূমি ধ্বংস হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ে। তার বেশিটাই সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ। শুধু গ্রামাঞ্চল নয়, আমপানের তাণ্ডবে শহরাঞ্চলে রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ স্তম্ভ, ভূগর্ভস্থ নিকাশি ব্যবস্থা, জল সরবরাহ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ১ লাখ ২ হাজার ৪৪২ কোটি টাকার— দাবি নবান্নের।

Cyclone Amphan Cyclone
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy