Advertisement
E-Paper

শক্তি কমছে ঘূর্ণিঝড়ের, আশার কথা এইটুকুই  

আয়লার সময় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে থাকা মেঘের উচ্চতা ছিল ১৭-১৮ কিলোমিটারের মতো। সেই তুলনায় রেডার-চিত্রের তথ্য অনুযায়ী ফণীর মেঘের উচ্চতা বড়জোর ১৪ কিলোমিটার।

লক্ষ্মীনারায়ণ শতপথী

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০৪:৪৫

দু’টিই ঘূর্ণিঝড়। তবে আয়লার তুলনায় ফণী শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ততটা মারাত্মক না-ও হতে পারে। কেননা পুরীর কাছে মাটিতে আছড়ে পড়ার পরে স্থলভাগের দিকে যত এগোচ্ছে, ততই শক্তি কমছে ফণীর।

আয়লার সময় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে থাকা মেঘের উচ্চতা ছিল ১৭-১৮ কিলোমিটারের মতো। সেই তুলনায় রেডার-চিত্রের তথ্য অনুযায়ী ফণীর মেঘের উচ্চতা বড়জোর ১৪ কিলোমিটার। সেই মেঘের বেশির ভাগটাই রয়েছে ৬-৭ কিলোমিটারের মধ্যে। ফলে ইতিমধ্যে ফণী অনেকটা শক্তি ক্ষয় করে ফেলেছে।

তবে ক্রান্তীয় অঞ্চলে তাপমাত্রার ওঠানামার জন্য আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি এত দ্রুত বদলায় যে, সব সময় তার নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়া খুব শক্ত। তবু বলব, আগের তুলনায় এখন অনেকটাই নির্ভুল পূর্বাভাস দেয় আবহাওয়া দফতর। আগে বাতাসের তাপমাত্রা এবং তার গতিপ্রকৃতির উপরে নির্ভর করে তথ্য-পরিসংখ্যান ঘেঁটে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হত। পরিসংখ্যান-ভিত্তিক ওই মডেল বদলে এখন একটি চলমান মডেল ব্যবহার করা হয়। যা অনেক বেশি আধুনিক। সেখানে প্রতি মুহূর্তের ফলাফল পর্যালোচনা করা হয়। আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দফতরের সমন্বয়ও অনেক বেড়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ঝড়ের গতিপ্রকৃতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের তৎপরতা কারও কারও কাছে বাড়াবাড়ি বলে মনে হতে পারে। তবে আমি বলব, ঝড় নিয়ে আলোচনা মানুষকে আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন করেছে। আগাম সতর্কতার ফলে ওড়িশায় ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা গিয়েছে। এত মানুষকে আগেভাগে নিরাপদ জায়গায় সরানো সম্ভব হয়েছে। কয়েক দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গেও প্রশাসনের তরফে নাগাড়ে প্রচারের ফলে মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। সে-দিক থেকে দেখলে সতর্কতাই বিপদ এড়িয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায়।

ঘূর্ণিঝড় অনেকটা তীব্র গতিতে ঘুরতে থাকা বিশাল উল্লম্ব চোঙের মতো। যার অনেক স্তর থাকে। আর্দ্র এবং উষ্ণ বাতাস ঘুর্ণিঝড়ের শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে জ্বালানির মতো কাজ করে। গতিপথে উষ্ণ বাতাসের ‘পকেট’ খুঁজে এগোতে থাকে ঘূর্ণিঝড়। মাটিতে আছড়ে পড়ার আগে পর্যন্ত তার শক্তি বাড়তে থাকে। মাটিতে আছড়ে পড়ার পরে আর্দ্র এবং উষ্ণ বাতাসের জোগান বন্ধ হয়। তখনই শক্তি হারাতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়।

গত ২৬ এপ্রিল ভারত মহাসাগরে, সুমাত্রার পশ্চিমে দেখা দেয় ফণী। প্রথম কয়েক দিনে প্রতিকূল পরিবশে একটু থমকে থাকলেও গত ৩০ এপ্রিল থেকে সে বড় আকার ধারণ করেছে। শুক্রবার সকালে পুরীর কাছে মাটিতে আছড়ে পড়ার পরে ফের তার শক্তি হ্রাসের পালা শুরু হয়েছে। আশা করব, বাংলায় তার তাণ্ডব বেশি ক্ষণ স্থায়ী হবে না।

গত কয়েক বছরে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়েছে। ফলে বেড়েছে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনাও। সমুদ্রে কোথাও নিম্নচাপ দেখা দিলে সেখান থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বিশাল আকার ধারণ করছে খুব তাড়াতাড়ি।

(লেখক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক)

Cyclone Fani ফণী Aila
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy