Advertisement
E-Paper

ওড়িশা হয়ে খড়্গপুর পেরিয়ে বাংলায় ঢুকে পড়ল ফণী

দিঘা-মন্দারমণিতে ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ১৭:৫৩
রাতের দিঘায় উত্তাল সমুদ্র। বাঁধ উপচে জল ঢুকছে সৈকত শহরে।

রাতের দিঘায় উত্তাল সমুদ্র। বাঁধ উপচে জল ঢুকছে সৈকত শহরে।

এ রাজ্যেও ফণীর প্রভাব শুরু। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর, ভোররাতেই ঘূর্ণিঝড় এ রাজ্যে আছড়ে পড়তে চলেছে। খড়্গপুরে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১০৫ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। শক্তিশালী এই সাইক্লোনের প্রভাব রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, নদিয়াতে সব থেকে বেশি পড়বে। বর্ধমান ও হুগলি জেলার উপরেও ফণীর ভালই প্রভাব থাকবে। তবে এই ঝড়ের রেডিয়াস ৪০০-৫০০ কিমি জুড়ে হওয়ায় রাজ্যের প্রায় সব জেলাই এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় পড়বে। তবে কলকাতায় যখন ফণী প্রবেশ করবে, তখন এই ঝড়ের কিছুটা শক্তিক্ষয় হবে। তখন ঘণ্টায় এর গতিবেগ থাকবে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, ফণী বর্ধমান ও হুগলির মাঝ দিয়ে গিয়ে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ হয়ে কাল দুপুরের মধ্যে বাংলাদেশে ঢুকবে। তাই আশা করা যাচ্ছে আগামী ৫ মে, রবিবারের পর থেকে আর ফণীর প্রভাব থাকবে না এবং দুর্যোগও পুরোপুরি কেটে যাবে।

দিঘা, মন্দারমণি-সহ উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বিকেল থেকেই শুরু হয়েছিল প্রবল বৃষ্টি। দিঘা-মন্দারমণিতে উত্তাল সমুদ্র। ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে। সমুদ্রের ধার বরাবর বাঁধ উপচে জল ঢুকছে সৈকত শহরে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রাত আটটা নাগাদ ওড়িশার জাজপুরের কাছে রয়েছে ফণী। অর্থাৎ কলকাতা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে এবং দিঘা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।

যদিও এখনও এ রাজ্য থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছে ফণী। আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে, ওড়িশা ছেড়ে রাজ্যে আছড়ে পড়তে শনিবার ভোররাত হবে। ঝড়ের শক্তিও অনেকটাই কমবে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, সন্ধ্যার পর থেকেই ওড়িশা লাগোয়া এ রাজ্যের জেলাগুলিতে ঝড় শুরু হবে। সেই ঝড়ের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার।

এর মধ্যেই এ দিন সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ মাত্র ১৫ সেকেন্ডের একটি দমকা হাওয়া ফণীকে ঘিরে মেদিনীপুরবাসীর আতঙ্ক কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিল। একটা ঝড় বয়ে যায় মেদিনীপুর শহরের মির্জাবাজার এলাকার উপর দিয়ে। সেই ঝড়ের শক্তি এতটাই বেশি ছিল যে আশেপাশের প্রায় ২৫টি বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। কোনওটা আবার বাঁশের কাঠামো নিয়ে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।

আরও পড়ুন: ভয়াল-ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলায় লন্ডভন্ড পুরী-ভুবনেশ্বর, তছনছ গ্রামের পর গ্রাম, মৃত ৩

শনিবার ভোর রাতে পশ্চিমবঙ্গীয় উপকূলে ফণীর আছড়ে পড়ার কথা থাকলেও, শুক্রবার সকাল থেকেই কলকাতা শহরের রাস্তাঘাটে সেই আতঙ্কের প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। হাওড়া এবং শিয়ালদহ— দুই শাখায় লোকাল ট্রেনগুলোয় ভিড় তুলনামূলক কম ছিল। যাঁরা কাজে বেরিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই তাড়াতাড়ি বাড়ির অভিমুখে রওনা দিয়েছেন। অন্য দিনের তুলনায় অনেক দোকানপাটও বন্ধ। রাস্তাঘাটে মানুষের সংখ্যাও অন্য দিনের তুলনায় কম।

দিঘায় প্রবল ঝোড়ো হাওয়া। —নিজস্ব চিত্র

এর মধ্যে আবার খবর রটে যায়, ঝড়ের কারণে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া শাখায় বিকেল ৫টার পর থেকে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে। সেটা যে পুরোপুরি ভুয়ো তা নোটিস দিয়ে জানিয়েছে রেল। মেদিনীপুরে জলদা, চাঁদপুরের বাসিন্দাদের অনেকেই পরিবার নিয়ে নিকটবর্তী সাইক্লোন রিলিফ সেন্টারে আশ্রয় নেন।

আরও পড়ুন: উন্মত্ত আক্রোশে হাওয়া এসে ওলটপালট করে দিল সব

আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মেদিনীপুরের দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরে ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়বৃষ্টি হতে শুরু হয়েছে। দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন আবহবিদেরা। এ ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়াও প্রভাব পড়বে ফণীর। ঝড়ের প্রভাবে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতে এ প্রভাবে বৃষ্টিপাত হবে, জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

Cyclone Fani Cyclone Fani Weather ফণী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy