Advertisement
১০ মে ২০২৪
Cyclone Yaas

Cyclone Yaas: ফ্লাড সেন্টারে ঠাঁই মিললেও ইয়াসের আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে নামখানার হরিপদ-ভগবতীদের মনে

আশ্রয় নিলেও শঙ্কা পিছু ছাড়ছে না ভগবতীদের। ইয়াসও যদি তাণ্ডব চালায়? তবে উদ্বাস্তু হয়ে ঘুরতে হবে ভগবতীদের মতো নামখানার শ’য়ে শ’য়ে বাসিন্দাকে।

ইয়াসের তাণ্ডবের শঙ্কা পিছু ছাড়ছে না ভগবতীদের।

ইয়াসের তাণ্ডবের শঙ্কা পিছু ছাড়ছে না ভগবতীদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বকখালি শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২১ ২২:৫৬
Share: Save:

আমপানের (প্রকৃত উচ্চারণ উমপুন) ধাক্কা কাটিয়ে সবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিলেন। ফের আর এক ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আতঙ্ক পিছু নিয়েছে নামখানার সুজিত, হরিপদ, চম্পা, ভগবতীদের। প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁরা গিয়ে উঠেছেন ফ্লাড সেন্টার, হাইস্কুল, হোটেল, লজে। কিন্তু ঘরবাড়ি ছেড়ে সেখানে আশ্রয় নিলেও শঙ্কা পিছু ছাড়ছে না ভগবতীদের। আমপানের মতো ইয়াসও যদি তাণ্ডব চালায়? তবে উদ্বাস্তু হয়ে ঘুরতে হবে ভগবতীদের মতো নামখানার শ’য়ে শ’য়ে বাসিন্দাকে।

মঙ্গলবার নামখানার একটি প্রাইমারি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন সমুদ্র উপকূলের লক্ষ্মীপুরের বেশ কয়েক জন বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের ভগবতী দাসও। বছর দেড়েকের শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে একদৃষ্টে জানলার দিকে তাকিয়েছিলেন ভগবতী। লক্ষ্মীপুরে বাঁধের ধারে ছোট্ট মাটির বাড়ি তাঁদের। স্বামী পেশায় মৎস্যজীবী। গত বছর আমপানের সময় পুরো বাড়িটাই কার্যত ভেঙে পড়েছিল। অনেক কষ্টে ঘরের উপর অ্যাসবেস্টস লাগিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু ইয়াস আছড়ে পড়লে আদৌ কি সে ঘর টিকে থাকবে? সারাক্ষণ এ কথাই ভেবে চলেছেন ভগবতী। তিনি বলেন, “পরিবারে অভাব লেগেই রয়েছে। আমপানের পর অনেক কষ্টে ঘর তৈরি করেছিলাম। এ বারের ঝড়ে কী হবে জানি না। ঘর ভেঙে পড়লে এ বার পথে বসতে হবে। দুধের শিশুকে কী খাওয়াব, তা-ও জানি না।”

ভগবতীর পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন বছর ষাটের হরিপদ মণ্ডল। গ্রাম সম্পর্কে বউমা ভগবতীকে শান্ত থাকার জন্য বার বার বোঝাচ্ছিলেন তিনি। তবে ইয়াসের আতঙ্ক তাঁকেও ঘিরে ধরেছে। হরিপদ বলেন, “কয়েক বিঘা জমিতে সব্জি চাষ করেছি। ভেবেছিলাম যা ফসল উঠবে, বিক্রি করে ঋণ মেটাব। কিন্তু ঝড় এসে সব লন্ডভন্ড করে দিলে, না খেতে পেয়ে মরা ছাড়া কোনও গতি থাকবে না। তার উপর শেষ আশ্রয় বলতে দু’কামরা মাটির ঘর। ঝড় এলে হয়তো সেটুকুও হারাব।”

এলাকার আর এক বাসিন্দা বছর কুড়ির সুজিত মাইতি ফ্লাড সেন্টারের বারান্দায় নাগাড়ে পায়চারি করছিলেন। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট৷ আমপানের সময়েও ঝড়ের তীব্রতায় মুড়িমুড়কির মতো কাঁচাঘর ভেঙে পড়তে দেখেছেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সুজিত। তাঁর কথায়, “পরিবারের সকলে মিলে এখানে (আশ্রয়কেন্দ্র) উঠে এসেছি। গত বছর ঘরে জল ঢুকে পড়ায় নথিপত্র সব নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এ বার সে সব সঙ্গে নিয়েই চলে এসেছি। জানি না কত ভয়ানক হবে ইয়াস!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

namkhana Cyclone Yaas Yaas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE