Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Teesta River

তিস্তায় ফের মরা মাছ, বিতর্ক জলপাইগুড়িতে

এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বিষতেল দিয়েই মারা হয়েছে মাছ। মরা মাছের সংখ্যাও অনেক বেশি। অন্তত কয়েক কুইন্টাল তো হবেই।

হাতভর্তি: রবিবার বোরোলি মাছ মরে ভেসে উঠল তিস্তায়। তা নিয়ে শুরু হয়েছে তর্ক। নিজস্ব চিত্র

হাতভর্তি: রবিবার বোরোলি মাছ মরে ভেসে উঠল তিস্তায়। তা নিয়ে শুরু হয়েছে তর্ক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৮ ০২:০১
Share: Save:

ফের জলপাইগুড়ির তিস্তা নদীতে মাছের মড়কের অভিযোগ উঠল। রবিবার জলপাইগুড়ি তিস্তা নদীর বিখ্যাত বোরোলি মাছ বিষ তেল দিয়ে মারা হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি।

কিন্তু জেলা মৎস্য দফতরের আধিকারিকরা তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, এ দিন এলাকাতে গিয়েও তাঁরা তেমন কোনও প্রমাণ পাননি যে বিষতেল দিয়ে মাছ মারা হয়েছে। তাঁদের যুক্তি, কয়েকদিন ঠান্ডার পরে হঠাৎ গরম পড়ায় বোরোলির মতো ছোট মাছ মরে ভেসে উঠতে পারে। তাঁরা একটি মাত্র কিশোরকে কোঁচর ভরা মাছ নিয়ে যেতে দেখেছেন। তাঁদের দাবি, এটি তেমন বড় কোনও ঘটনা নয়।

কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, বিষতেল দিয়েই মারা হয়েছে মাছ। মরা মাছের সংখ্যাও অনেক বেশি। অন্তত কয়েক কুইন্টাল তো হবেই।

পাল্টা যুক্তি হল, তিস্তার মতো নদীতে বিষতেল দিয়ে মাছ মারা সম্ভব নয়। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যে এলাকায় মরা মাছ ভেসে উঠেছে, সেই সারদাপল্লিতে তিস্তার স্রোত নেই বললেই চলে। তাই সেখানে বিষতেল কাজ করতে পারে। তা ছাড়া অতীতে ২০১১, ২০১২ ও ২০১৫ সালে তিস্তায় মরা মাছ দেখা গিয়েছে।

বিষতেলের কথা উঠতেই ভোটের জয়ের ভোজে মেনুতেও পরিবর্তন ঘটে। সারদাপল্লিতে তৃণমূল প্রার্থীর ভোটের জয়ের খাওয়াদাওয়া ছিল আজ। মেনুতে বোরলি থাকলেও তা বদলে ব্রয়লার মুরগি করে দেওয়া হল। তা দিয়েই গ্রামের দেড় হাজার বাসিন্দার খাওয়া দাওয়ার আয়োজন হয়। ভোটে জয়ের আনন্দে রাজনীতির রং ভুলে রবিবার ছুটির দিনে গ্রামের সব মানুষকে নিয়ে মহাভোজের আয়োজন করা হবে বলে ঘোষণা করাই ছিল। গ্রামের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেই তৈরি করা হয়েছিল মেনু—ভাত, ডাল, ভাজা, আলু পটোলের তরকারির পাশাপাশি ধরা ছিল তিস্তা নদীর সুস্বাদু বোরোলি মাছের চচ্চড়ি আর মুরগির মাংস।

সকালে নদীতে মাছ ভেসে উঠছে খবর পেয়ে বোরোলি খাওয়ানোর ঝুঁকি নেননি তিস্তা পারের সারদাপল্লি গ্রামে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী মিনু হাওলাদার। তিনি জানান, গ্রামবাসীদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত। মিনু দেবীর এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন গ্রামের সবাই। বাসু দাস নামে এক বাসিন্দা জানান, তিস্তা নদীর এই সম্পদ রক্ষায় পাশে আছেন তাঁরাও। তাঁরা বলেন, ‘‘তিস্তায় এ ভাবে বিষ দিয়ে মাছ মারা বন্ধ করতেই হবে প্রয়োজনে আমরা রাত জেগে পাহারা দেব।’’

চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি জলপাইগুড়ি তিস্তা আর করলা নদীর মোহনার কিছুটা আগে প্রচুর মাছ ভেসে উঠতে দেখা যায়। সেদিন প্রচুর মানুষ তিস্তায় ভেসে ওঠা মাছ ধরতে শুরু করে। এলাকার মানুষরা জানান, রুই, ফলি, পুঁটি, বোয়াল মাছ ভেসে ওঠে। মাছ ধরেন অনেকে। আজও ফের তিস্তার বিখ্যাত বোরোলি মাছ ভেসে ওঠে। এরপর এলাকার মানুষরা বোরলি মাছ ধরে বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিন্তু কী ভাবে মারা গেল তা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE