Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পুরসভায় দায়িত্ব খোয়ালেন ইকবাল

নারদ মামলায় বৃহস্পতিবারই ইকবালকে এক দফা জেরা করেছে সিবিআই। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের দাবি, শাসক দলের নেতাদের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন ইকবাল।

 ইকবাল আহমেদ

ইকবাল আহমেদ

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০৩:৩৪
Share: Save:

পুরসভায় তিনি ‘অনুপস্থিত’। এই যুক্তি দেখিয়ে কলকাতার ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদের হাতে থাকা তিনটি দফতর পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হল মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারকে। শুক্রবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ কথা জানিয়ে দিল পুরবোর্ড।

নারদ মামলায় বৃহস্পতিবারই ইকবালকে এক দফা জেরা করেছে সিবিআই। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের দাবি, শাসক দলের নেতাদের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন ইকবাল। এ দিনও তাঁকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তিনি দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। ইকবালের পরিবারের দাবি, সিবিআই দফতর থেকে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ফলে এ দিন হাজিরা দিতে যাননি। আইনজীবী মারফৎ সপ্তাহখানেক সময় চেয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে পুরসভার সিদ্ধান্ত ঘিরে গুঞ্জন উঠেছে শাসক দলের অন্দরে। ইকবাল গত সপ্তাহেও পুরসভায় বৈঠক করেছেন। তা হলে তাঁকে ‘অনুপস্থিত’ বলা হচ্ছে কেন?

মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জবাব, ‘‘পুরসভার কমিউনিটি হল ভাড়া নিতে ও বিনোদন করে ছাড় চেয়ে অনেক আবেদনপত্র জমা পড়ছে। ওঁর অনুপস্থিতিতে আমাকেই কাজগুলো দেখতে হয়। আমার নিজেরও অনেক ফাইল দেখতে হয়। তাই ইকবালের এই কাজগুলো দেবাশিস কুমারকে দেখতে বলা হয়েছে।’’

কিন্তু সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও জাহাজে জল দেওয়ার দায়িত্বও তো দেবাশিসবাবুকে দেওয়া হয়েছে? মেয়রের উত্তর, ‘‘ওটা ভুল করে লেখা হয়েছে। সংশোধন করা হবে।’’ রাতে হোয়াটস অ্যাপে মেয়র জানান, বাকি দু’টি দফতরের দায়িত্ব ইকবালের হাতেই থাকছে।

পুর প্রশাসনের একটি অংশের ব্যাখ্যা, সিবিআই-কে চিঠি দিয়ে ইকবাল জানিয়েছেন তিনি অসুস্থ। এই অবস্থায় তিনি পুরসভার দায়িত্ব পালন করে যাবেন — এটা বেমানান। তাই সাময়িক ভাবে তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি অংশের ব্যাখ্যা, নারদ মামলায় ইকবাল যে অনেকটাই জড়িয়ে গিয়েছেন, সেটা স্পষ্ট। সিবিআই জেরা যত এগোবে, তত অন্য অভিযুক্তদের বিপাকে পড়ার সম্ভাবনাও তৈরি হবে। তাই তাঁর থেকে আগাম দূরত্ব তৈরি করা হল। তৃণমূলের একাধিক কাউন্সিলরের বক্তব্য, এর আগে ইকবাল অসুস্থ হয়ে মাসাধিককাল পুরসভায় আসেননি। অনেক মেয়র পারিষদ দীর্ঘদিন অফিস করেননি, এমন নজিরও আছে।

পুরসভার সিদ্ধান্ত শুনে কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘সিবিআইয়ের কারণে যদি ইকবালের দফতর চলে যায়, তা হলে পুরবোর্ডের মাথাতেও তো হাত পড়তে পারে। তখন কী হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE