Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Aman cutivation

আমন চাষে ঘাটতি তিন লক্ষ হেক্টরে

সময়সীমা দু’সপ্তাহ বাড়ানোর পরেও, রাজ্যে প্রায় তিন লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা যায়নি— এমন তথ্য উঠে এসেছে রাজ্য কৃষি দফতরে।

অনেক জমিতে ধান রোয়া গেলেও, গাছের বৃদ্ধি এবং ফলনের মান নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা।

অনেক জমিতে ধান রোয়া গেলেও, গাছের বৃদ্ধি এবং ফলনের মান নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। ফাইল ছবি

সৌমেন দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৪২
Share: Save:

সময়সীমা দু’সপ্তাহ বাড়ানোর পরেও, রাজ্যে প্রায় তিন লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা যায়নি— এমন তথ্য উঠে এসেছে রাজ্য কৃষি দফতরে। ওই সব জমিতে বিকল্প চাষ শুরু এবং রবিশস্য চাষ এগিয়ে আনার পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানান আধিকারিকেরা। শুক্রবার থেকেই বিভিন্ন ব্লকে সর্ষে, ডালশস্যের বীজ দেওয়া শুরু করেছে কৃষি দফতর।

রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শুরুতে বৃষ্টির যে অপ্রতুলতা ছিল, তার চেয়ে অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবু শেষ পর্যন্ত প্রায় তিন লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ কম হয়েছে। গত বছর রাজ্যে ৪২ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ও আউশ চাষ হয়েছিল। এ বার প্রায় ৩৯ লক্ষ হেক্টর জমিতে রোপণ হয়েছে। বাকি জমিতে বিকল্প চাষের জন্য প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার বীজ সরবরাহ করা হবে।’’

অনেক জমিতে ধান রোয়া গেলেও, গাছের বৃদ্ধি এবং ফলনের মান নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। নদিয়ার তেহট্টে আমনের চারা গরুকে খাওয়াচ্ছেন কিছু চাষি, এমন ছবি দেখা গিয়েছে। কৃষি দফতর অবশ্য জানায়, সমস্ত চাষিকেই ফসলবিমার আওতায় আনার চেষ্টা হচ্ছে। সে জন্য ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন চাষিরা। যাঁরা জমিতে চাষ করতে পারেননি, তাঁরাও এই সুবিধা পাবেন।

কৃষি-কর্তারা জানান, শ্রাবণের মধ্যেই খরিফ মরসুমের আমন ও আউশ ধান রোপণ হয়ে যায়। এ বার বৃষ্টি কম ও সেচের জলের অভাবে বেশ কয়েকটি জেলায় নির্দিষ্ট সময়ে ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো যায়নি। তবে ১২ অগস্ট থেকে ভাল বৃষ্টি নামায়, খরিফ চাষ ৩১ অগস্ট পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কৃষি দফতর। সে নিয়ে কৃষি-কর্তারা বারবার বৈঠক, পিছিয়ে থাকা জেলাগুলিতে পরিদর্শন করেন।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, বাকি জেলাগুলি লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছলেও, পুরুলিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমানে ধান রোপণ তুলনায় অনেকটা কম হয়েছে। পুরুলিয়ার ৬৯% জমিতে ধান রোয়া গিয়েছে। সেখানকার উপ-কৃষি অধিকর্তা চন্দন পাল বলেন, “জেলায় উঁচু জমি বেশি রয়েছে। সেখানে আর চাষ সম্ভব নয়। চাষিদের সর্ষে, ডালশস্যের বীজ দেওয়া শুরু হয়েছে।’’

বাঁকুড়া জেলায় ৭৮% জমিতে চাষ হয়েছে। বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ, দুই জেলাতেই এ বার প্রায় ৪৪% বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। বীরভূমের প্রায় ৪০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয়নি। মুর্শিদাবাদে ধান রোপণ হয়েছে প্রায় ৭০% জমিতে। কৃষি আধিকারিকদের দাবি, ফাঁকা জমিতে তিল, ভুট্টা, কলাই, আনাজ চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় চাষিদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শও দেওয়া শুরু হয়েছে।

রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা তথা পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “হা-হুতাশ করার মতো কিছু হয়নি। যেখানে ধান রোপণ কম হয়েছে, সেখানে বিকল্প চাষে জোর দেওয়া হয়েছে। চাষিদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Aman cutivation Monsoon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE