প্রতি ভোটেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কড়া নজরদারির বার্তা থাকে। অথচ প্রতিবারই তা নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুলে থাকেন বিরোধীরা। কমিশন সূত্রের খবর, এ বার নজরদারির পদ্ধতিতে আমূল বদল আনতে চলেছে দিল্লির নির্বাচন সদন। ভোটকেন্দ্রের ভিতর এবং বাইরে যে শুধু নজরদারি বাড়বে তা নয়, বরং পুলিশ বা কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধিও থাকবে ক্যামেরার আওতায়। এমনকি, ভোট নজরদারিতে থাকা কন্ট্রোলরুম ব্যবস্থাপনাতেও বদল আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাতে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা দায়বদ্ধ হবেন। নদিয়ার কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচন থেকেই তা কার্যকর করতে চলেছে কমিশন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, ভোট নজরদারিতে চালু থাকে কন্ট্রোলরুম। সেখানে কিছু আধিকারিক নজরদারির দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকেন। নতুন ব্যবস্থায় স্থির হয়েছে, কারা দায়িত্বে থাকবেন, তার সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরি হবে। এলাকার ছবি দেখে ভোটের শেষে সংশ্লিষ্টদের জানাতে হবে, সেখানে কোনও গোলমাল ঘটেছিল বা ঘটেনি। ভোটের পরে কমিশন সেই রিপোর্টের সঙ্গে বাস্তবের ছবি মিলিয়ে দেখবে। তাতে ভিন্ন কিছু ধরা পড়লে দায়বদ্ধ থাকতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেই আধিকারিককে।
ভোটকেন্দ্রের সব দিকের ছবি পেতে চালু ব্যবস্থাও সংশোধন করছে কমিশন। আগে ভোটকেন্দ্রের ভিতরে একটি দিকে নির্দিষ্ট থাকত একটি ক্যামেরার অভিমুখ। অপর দিকটি থাকত ক্যামেরা-এক্তিয়ারের বাইরেই। সংশোধিত ব্যবস্থায় দু’টি দিক থেকে দু’টি ক্যামেরা বসানো থাকবে, যাতে ভোটকেন্দ্রের ভিতরের পুরো ছবি ধরা পড়ে। তবে যে ঘিরে রাখা অংশে ভোটদান হয়, তা থাকবে ক্যামেরার বাইরেই। তাতে কে কাকে ভোট দিচ্ছেন, তা বোঝা যাবে না। ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের লাইনে কোনও গোলমাল হচ্ছে কি না, তা-ও ক্যামেরার আওতায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অন্য দিকে, প্রতিবারই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। অভিযোগ ওঠে, বিপুল পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও, ভোটের সময়ে তাদের দেখা যায় না। ফলে ঠেকানো যায় না গোলমাল। নতুন ব্যবস্থায় ভোট-নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতেও লাগানো হবে ক্যামেরা। যেখানে সব দিকের ছবি ধরা পড়বে সহজেই। কোনও গোলমালে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী কত দ্রুত পৌঁছতে পারল এবং কী পদক্ষেপ হল— তা-ও ধরা পড়বে।
এক কর্তার কথায়, “কালীগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন থেকেই কমিশন এই ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে। আগামী বছর বিধানসভা ভোটে পুরোদমে এটা চালু হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)