E-Paper

জেলায় ‘চাহিদা’ বিজেপির অনুদানের

পুজোর মুখে দেখা যাচ্ছে শহর কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে দাঁত ফোটাতে না পারলেও জেলায়-জেলায় এই অনুদানের ‘চাহিদা’ তৈরি হয়েছে।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৫৭
BJP.

—প্রতীকী ছবি।

দুর্গাপুজো উপলক্ষে রাজ্য সরকারের দেওয়া আর্থিক অনুদানের বিরোধিতা করলেও নিজেদের অস্তিত্ব ‘জাহির’ করতে সেই পথেই হাঁটার পরিকল্পনা নিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যে সব পুজো কমিটি সরকারের দেওয়া আর্থিক অনুদান নেবে না বা পাবে না, তাদের আর্থিক অনুদান দেবে রাজ্য বিজেপি। তবে শর্ত ছিল, সেই পুজো কমিটিতে রাখতেই হবে অন্তত মণ্ডল স্তরের এক জন বিজেপি নেতাকে। সেই সঙ্গে পুজো প্রাঙ্গণের ১০০ মিটারের মধ্যে রাখতে হবে মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্যের ব্যানার, ফেস্টুন, ফ্লেক্স।

পুজোর মুখে দেখা যাচ্ছে শহর কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে দাঁত ফোটাতে না পারলেও জেলায়-জেলায় এই অনুদানের ‘চাহিদা’ তৈরি হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, এর পর আর বিজেপির মুখ নেই, সরকারের পুজোয় অনুদান নীতির বিরোধিতা করার।

রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, খাস কলকাতার অন্তত চারটি পুজোয় নিজেদের ‘কর্তৃত্ব’ জাহির করা গিয়েছে। সেই পুজোগুলোয় হয় উদ্বোধনে অথবা পরিদর্শনে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। যেগুলির মধ্যে রয়েছে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের পুজো। রাম মন্দিরের আদলে তৈরি সেই মণ্ডপ আগামী সোমবার উদ্বোধন করার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তবে বৃহত্তর কলকাতার বাইরে বিজেপির এই শর্তাধীন অনুদানের যথেষ্ট চাহিদা তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি রাজ্য বিজেপি নির্দেশিকা জারি করেছিল, নিচু তলায় দলের প্রভাব বাড়াতে প্রতিটি মণ্ডলে অন্তত একটি করে পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে বিজেপি নেতাদের। প্রয়োজনে সেই পুজোগুলিকে আর্থিক সাহায্য করবে বিজেপি। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় হাজার আবেদন জমা পড়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে। যার মধ্যে প্রাথমিক বাছাই পর্বে চূড়ান্ত হয়েছে ৪২৫ টি আবেদন। এই পুজোগুলিকে আর্থিক সাহায্য করতে প্রস্তুত বিজেপি। কোনও কোনও মণ্ডপের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩০, ৫০ ও ৮০ হাজার টাকা। কিছু পরিচিত মণ্ডপ আছে, যেগুলিকে এক লক্ষ টাকা বা তার বেশি অনুদান দেওয়া হবে। আজ, রবিবার ‘স্ক্রিনিং’ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা।

সূত্রের খবর, এই অনুদান নিয়ে সব চেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায়। এ ছাড়া জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর, বাঁকুড়া, বারাসত, ব্যারাকপুর, কাঁথি, তমলুক ও মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা থেকেও প্রচুর আবেদন এসেছে। বিজেপির শীর্ষ নেতারা প্রাথমিক বাছাইয়ের ৪২৫টি পুজো কমিটির বাইরেও কিছু পুজো কমিটিকে সাহায্য করা যায় কি না, তাই নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “শহরের তুলনায় গ্রামে বিজেপির সংগঠন যে শক্তিশালী তা সবাই জানে। এখন পুজোর নামে যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তাতে শাসক দলের বাড়বাড়ন্তে শহরের পুজোয় দাঁত ফোটানো কঠিন। আমরা পুজোকে পুজো হিসেবেই দেখি, রাজনীতি চাই না। চাইলে শহরেও পুজো নিয়ে লড়াই হত।”

কিন্তু এত দিন অনুদানের বিনিময়ে তৃণমূল পুজোর দখলদারি করছে বলে অভিযোগ করার পর একই পন্থা কেন? বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “তৃণমূল টাকা দিচ্ছে বলে দুর্গাপুজোকে কলুষিত করছে। পিতৃপক্ষে পুজো উদ্বোধন করে দিচ্ছে। কেউ করতে না চাইলে পুলিশ সুপার গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। আমাদের দখল করার বিষয় নেই। আমরা কোথাও কোথাও সহযোগিতা করছি।” তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “কোনও পুজো সরকারি অনুদান পায়নি, বিষয়টা এমন নয়। হয়তো কোনও নিয়মে আটকে গিয়েছে। সেটা ভিন্ন বিষয়।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2023 BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy