Advertisement
E-Paper

তৃতীয়া থেকেই বাড়তি ট্রেন চাইছে উৎসব

এ বার পঞ্চমীতেই পুজোর ভিড়ে রেকর্ড গড়েছে মেট্রো। জন্মলগ্ন থেকে এই প্রথম পাতালপথে এক দিনে যাত্রী-সংখ্যা আট লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। টিকিট বিক্রির হিসেব দেখে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এ বার পঞ্চমীতে পাতালে যাত্রী-সংখ্যা ছিল আট লক্ষ ৬৯ হাজার। যা সর্বকালীন রেকর্ড।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:১৫

উৎসবপ্রেমী মানুষের পথে নামার তাগিদ পাঁজিপুথির নির্দেশ মানছে না। পঞ্জিকা-মতে পুজো যখন শুরুই হয়নি, পুজোর ভিড় রাস্তা কাঁপাচ্ছে, ট্রেন দাপাচ্ছে সেই তৃতীয়া থেকেই। তাই এ বার সপ্তমী থেকে নয়, তৃতীয়া থেকেই মাটির উপরে-নীচে বাড়তি ট্রেন চালানোর দাবি উঠল।

এ বার পঞ্চমীতেই পুজোর ভিড়ে রেকর্ড গড়েছে মেট্রো। জন্মলগ্ন থেকে এই প্রথম পাতালপথে এক দিনে যাত্রী-সংখ্যা আট লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। টিকিট বিক্রির হিসেব দেখে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এ বার পঞ্চমীতে পাতালে যাত্রী-সংখ্যা ছিল আট লক্ষ ৬৯ হাজার। যা সর্বকালীন রেকর্ড।

দর্শক-সমাগমের নিরিখে কয়েক বছর ধরে পুজো ক্রমশই এগিয়ে আসছে। সাধারণত মহাষ্টমী আর মহানবমীতে ভিড় ভেঙে পড়ে মণ্ডপে। মূলত সেই দমবন্ধ দশা এড়িয়ে প্রতিমা দর্শনের তাগিদে মানুষ ইদানীং চতুর্থ-পঞ্চমী থেকেই রাস্তায় নেমে পড়ছেন। এ বার সেটা আরও এগিয়ে এসেছে। তৃতীয়া থেকেই কলকাতার মণ্ডপগুলিতে ভিড় জমাচ্ছিলেন শহরতলির বাসিন্দারা। চতুর্থীতেও ভিড় হয়েছিল যথেষ্ট। আর পঞ্চমীতে ভিড়ে ভেসে যায় কলকাতা।

পুরো পাতালপথের সব স্টেশনে টিকিট বিক্রির হিসেব কষেই মেট্রো-কর্তৃপক্ষ জানান, ভিড়ে এ বার পঞ্চমীই সেরা। মেট্রো-কর্তারা জানান, পঞ্চমীতে ধুন্ধুমার ভিড়ের পরে ষষ্ঠী-সপ্তমী, এমনকী অষ্টমীতে লোক সমাগম অনেকটাই কমে যায়। অথচ বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে সারা রাত মেট্রো চলাচল শুরু হয় সপ্তমীতে। পঞ্চমীতে মেট্রো চলেছিল সাধারণ দিনের মতো— সকাল সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। আর ঠাকুর দেখার ভিড়টা শুরু হয়েছিল দুপুরে। তাতেই সে-দিন টিকিট বিক্রি হয়েছে প্রায় পৌনে ন’লক্ষ!

দীর্ঘদিন ধরেই পুজোর চার দিন শহরতলিতে সারা রাত লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো চালানোর ব্যবস্থা করে আসছে রেল। এ বছরও করেছে। কিন্তু ভিড় এড়াতে শহরতলির বাসিন্দারা এখন আগেভাগে চলে এসে পুজো দেখা সেরে ফেলতে চাইছেন। সেই জন্যই তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী ও ষষ্ঠীতে মহানগরীতে মানুষের ঢল নামছে বেশি। অর্থাৎ পাঁজির তোয়াক্কা না-করে কয়েক বছর ধরে কলকাতার পুজো শুরু হয়ে যাচ্ছে তৃতীয়াতেই।

আগাম উৎসব অনেকেই উপভোগ করছেন। কিন্তু এতে যাঁদের নাকাল হতে হচ্ছে, তাঁদের সংখ্যা কম নয়। আসলে তাঁরাই মাটির উপরে-নীচে রেলের রোজকার যাত্রী। পুজোর ভিড় তৃতীয়ায় শুরু হয়ে গেলেও অফিসে তো ছুটি পড়ে সেই সপ্তমী থেকে। তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী আর ষষ্ঠীতে যেতেই হয় কর্মস্থলে। নিত্যদিনের ঝক্কির উপরে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে পুজোর আগাম ভিড়। নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ তুঙ্গে ওঠে।

নাজেহাল নিত্যযাত্রীদের দাবি, পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে রেল চিন্তাভাবনা করুক। বাড়তি ট্রেন চালু করা হোক তৃতীয়া থেকেই। নইলে অফিসযাত্রীদের দুর্ভোগ কমবে না। কারণ, গত কয়েক বছরে শহরতলির লোকাল ট্রেনে এমনিতেই যাত্রী বেড়েছে পাঁচ গুণ। তার উপরে অনেক আগে থেকে পুজোর ভিড় এমন ভাবে আছড়ে পড়ছে যে, প্রান্তিক স্টেশনগুলিতেও ট্রেনের কাছাকাছি পৌঁছনো যাচ্ছে না। তিলধারণের ঠাঁই থাকছে না প্ল্যাটফর্মগুলিতে।

একই বক্তব্য মেট্রোযাত্রীদের। তাঁরা বলছেন, পুজোয় অতিরিক্ত মেট্রো চলুক তৃতীয়া থেকেই। নইলে পুজোর ভিড়ের চাপে অফিসযাত্রীদের হাঁসফাঁস অবস্থার সুরাহা হবে না। শুধু তা-ই নয়, ঠাকুর দেখার ভিড়ের কথা মাথায় রেখে আগামী বছর থেকে পুজোর সময়ে মেট্রোয় ১৫ মিনিটের বদলে অন্তত ১০ মিনিট অন্তর ট্রেন চালানো হোক। তাতে যাত্রীরা কিছুটা স্বস্তিতে সফর করতে পারবেন।

Durga Puja Facilities Indian Railway Kolkata Metro
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy