Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Abhijit Sarkar

Abhijit Sarkar: ফরেন্সিকে গেল অভিজিতের তোলা ভিডিয়ো

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে তারা আরও ১০টি মামলা শুরু করেছে বলে জানায় সিবিআই।

ছবি সংগৃহীত।

ছবি সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০৫
Share: Save:

মৃত্যুর আধ ঘণ্টা আগে নিজের মোবাইল থেকে ফেসবুক লাইভ করেছিলেন কাঁকুড়গাছি শীতলাতলা লেনের বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। তাঁর দাদা বিশ্বজিতের অভিযোগ, তত ক্ষণে তাঁর ভাইকে এক প্রস্ত মারধর করা হয়ে গিয়েছে। নিজের উপরে হামলার সেই ঘটনার কথাই বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছিলেন স্বয়ং অভিজিৎ। ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনায় নিহত অভিজিতের মোবাইল থেকে পাওয়া সেই ভিডিয়ো ফুটেজ (যা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠালেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।

বিশ্বজিৎ সোমবার ভাইয়ের মোবাইল ফোনটি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন। তদন্তকারীদের বক্তব্য, ২ মে প্রথমে অভিজিতের পোষ্য পাঁচটি কুকুরছানাকে পিটিয়ে মারা
হয়েছিল। পরে নিশানা করা হয় অভিজিৎকে। ঘটনার দিন বাড়িতে বোমাবাজি করা হচ্ছে বলে ফেসবুক লাইভ করেছিলেন অভিজিৎ। সিবিআইয়ের দাবি, ভিডিয়ো ফুটেজে বোমার আওয়াজও পাওয়া গিয়েছে। শাসক দলের স্থানীয় কয়েক জন নেতার নামও ফেসবুক লাইভে জানিয়েছিলেন অভিজিৎ। ফরেন্সিক বিভাগের সবুজ সঙ্কেত পেলে মৃত্যুর আগে অভিজিতের এই জবানবন্দি খুনের অন্যতম সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে আদালতে জমা দেওয়া হবে।

ভোট-প্রচার চলাকালীন ২০ এপ্রিল অভিজিতের বাড়ির অদূরে তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতা ফলাফল ঘোষণার পরে অভিজিৎ ও বিশ্বজিৎকে পিটিয়ে মারার নির্দেশ দিচ্ছেন, এমন একটি ভিডিয়ো ফুটেজও তাদের হাতে এসেছে বলে সিবিআইয়ের দাবি। তাদের বক্তব্য, ঘটনার দিনে মারধরের আরও কিছু ভিডিয়ো ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। ওই সব ফুটেজ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরে নারকেলডাঙা থানার পুলিশ জোর করে অভিজিতের স্বজনদের দিয়ে একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেয় বলে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে তারা আরও ১০টি মামলা শুরু করেছে বলে জানায় সিবিআই। সব মিলিয়ে এই ধরনের ঘটনায় মোট ৩১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভোট-পরবর্তী হিংসার তদন্তে এ দিন নন্দীগ্রামে যায় সিবিআই। নন্দীগ্রামে এক বিজেপি কর্মী খুন এবং খেজুরিতে এক মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনায় নতুন ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে তারা। বিকেলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা পৌঁছন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের চিললো গ্রামে নিহত বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতির বাড়িতে। সেখানে তাঁদের কাছে উমেশ দুবে নামে অন্য এক মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের তরফে মৌখিক অভিযোগ জানানো হয়। খেজুরিতেও যায় সিবিআই।

সিবিআইয়ের অন্য একটি দল সোমবার থেকেই রয়েছে ঝাড়গ্রামে। তদন্তকারীদের অনুমান, ৫ মে তৃণমূলের বিজয়মিছিল চলাকালীন সেই পথে বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় খুন হন বিজেপির কিসান মোর্চার নেতা কিশোর মান্ডি। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখছে সিবিআই।

বোলপুরের উত্তর নারায়ণপুর এলাকায় এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত করতে এ দিন সিবিআইয়ের একটি দল সেখানে যায়। শান্তিনিকেতন থানায় তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলে তারা। কাঁকরতলার নবসন গ্রামে বিজেপি কর্মী মিঠুন বাগদির হত্যাকাণ্ডে ধৃত তিন জনকে জেলে গিয়ে জেরা করার জন্য দুবরাজপুর আদালতের অনুমতি চায় সিবিআই। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তারা সেই অনুমতি পেয়েছে।

ভোটের ফল বেরোনোর পরে এক মহিলার উপরে নির্যাতনের মামলার তদন্তে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের সেড়ুয়া গ্রামে তদন্তে যায় সিবিআই। ফলপ্রকাশের সন্ধ্যায় কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলাকে নিগ্রহ করে বলে অভিযোগ। এ দিন গ্রামে যান এক মহিলা আধিকারিক-সহ সিবিআইয়ের তিন প্রতিনিধি।

এ দিন সিবিআইয়ের একটি দল উত্তরবঙ্গের দিনহাটা জামাদরবসে যায়। দু’দিন আগেও ওখানে গিয়েছিল তারা। ৩ মে ওই এলাকার বিজেপি কর্মী হারাধন রায়কে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। তাঁর সঙ্গী চন্দন রায়কেও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের তরফে বেশ কয়েক জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

সিবিআইয়ের একটি দল এ দিন বাঁকুড়ার ইন্দাসের নাড়রা গ্রামে নিহত বিজেপি কর্মী অরূপ রুইদাসের বাড়িতে যায়। অভিযোগ, ভোটের ফল বেরোনোর পরে খুন করা হয় তাঁকে। স্থানীয় একটি স্কুলে অরূপের এক কাকা ও কাকিমার সঙ্গে প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে কথা বলে সিবিআই। ভোট-পরবর্তী হিংসায় নিহত কোতুলপুরের রায়বাঘিনি গ্রামের বিজেপি কর্মী কুশ ক্ষেত্রপালের (২৬) বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে সিবিআইয়ের অন্য একটি দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abhijit Sarkar BJP Forensics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE