Advertisement
E-Paper

জওয়ানের দেহ ফিরল তাঁর গ্রামে

রবিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই ওই মাঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড় জমতে শুরু করে। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ রাজীবের দেহ নিয়ে সেনার কপ্টার মাঠে নামার আগেই ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৪১
ফেরা: গ্রামে বাড়ির পথে রাজীব থাপার দেহ। রবিবার আলিপুরদুয়ারের কালচিনিতে। ছবি: নারায়ণ দে

ফেরা: গ্রামে বাড়ির পথে রাজীব থাপার দেহ। রবিবার আলিপুরদুয়ারের কালচিনিতে। ছবি: নারায়ণ দে

কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক-গুলিতে নিহত জওয়ানের দেহ রবিবার ফিরল তাঁর গ্রাম, আলিপুরদুয়ারের কালচিনির মেচপাড়ায়। শুক্রবার নৌসেরা সেক্টরে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পাক সেনার চালানো গুলিতে মৃত্যু হয় সেনাবাহিনীর গোর্খা রেজিমেন্টের জওয়ান রাজীব থাপা-র (৩৪)। শনিবার বিকেলে তাঁর দেহ বিমানে বাগডোগরা পৌঁছয়। রাতে বেংডুবির সেনা ছাউনিতে দেহ রাখা হয়। ঠিক হয়, রবিবার সকালে হেলিকপ্টারে দেহ তাঁর গ্রামে নিয়ে আসা হবে। সে জন্য রাজীবের বাড়ি থেকে দু’শো মিটার দূরে মেচপাড়া ফুটবল মাঠে একটি অস্থায়ী হেলিপ্যাডও তৈরি করে সেনা।

রবিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই ওই মাঠে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড় জমতে শুরু করে। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ রাজীবের দেহ নিয়ে সেনার কপ্টার মাঠে নামার আগেই ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কপ্টার থেকে দেহ নামিয়ে মাঠেই সেনার তরফে রাজীবকে গান স্যালুট দেওয়া হয়। এর পরে একটি গাড়িতে করে রাজীবের কফিনবন্দি দেহ তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তত ক্ষণে সেখানে কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় জমে গিয়েছে। সেই ভিড় স্লোগান দিচ্ছিল, ‘‘রাজীব থাপা অমর রহে।’’ পাক-সেনার বিরুদ্ধে ক্ষোভে পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও স্লোগান তোলে জনতা।

দেহ ঘরে নামাতেই কান্নার রোল পড়ে যায়। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন রাজীবের স্ত্রী খুশবু। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন মা রিনা, বাবা কুমার থাপা। রাজীব-খুশবুর দশ মাসের শিশুকন্যাকে সামলাচ্ছিলেন অন্য আত্মীয়রা। পঁয়তাল্লিশ মিনিট ঘরে রাখার পর রাজীবের দেহ বাড়ির সামনে তৈরি করা অস্থায়ী মঞ্চে রাখা হয়। সেখানে ততক্ষণে হাজির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-মন্ত্রী থেকে দূর-দূরান্তের মানুষ। প্রায় দেড় ঘণ্টা রাজীবকে শ্রদ্ধা জানান সকলে।

শেষে ফের একবার ছেলের নিথর দেহের সামনে এসে দাঁড়ান মা রিনা থাপা। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি বলে চলেন, “তুই শুধু আমার নয়, গোটা দেশের সন্তান। দেশের সেবা করতে তোকে যেমন হাসিমুখে পাঠিয়েছিলাম, আজও তোকে হাসিমুখে বিদায় দেব। তোর জন্য আমি গর্বিত।” এ দিন বাসরা নদীর শ্মশানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা। তার পরে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাজীবের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

Death Jawan Indian Army Pakistan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy